ঝামেলা এড়িয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা চালু করে, যার সুফল পেয়ে খুশি অনেকেই।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে সরেজমিনে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলীতে দেখা মেলে এমনই এক ডিজিটাল পেমেন্ট বুথের। যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতারা তাদের কোরবানির পশু বেচাকেনা করছেন।
গাবতলীর হাটের ডিজিটাল পেমেন্ট বুথে গিয়ে দেখা যায়, রংপুর থেকে আসা আবুল হোসেন নামের এক খামারির একটি গরু ২ লাখ টাকায় কিনে নেন মিরপুরের ২ এ বসবাসকারী হারুনুর রশিদ। যার পুরো টাকাটা তারা লেনদেন করেন ডিজিটাল মাধ্যমে।
হারুনুর রশিদ বলেন, নগদ টাকা থাকলে এক প্রকার টেনশন কাজ করে। টাকার জন্যই সঙ্গে রাখতে হয় আরও ৩ থেকে ৪ জনকে। টাকার ব্যাগ নিয়ে হাটে ঘোরাঘুরি করাও ঝামেলা। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম থাকায় এসব ঝামেলা থেকে মুক্ত ছিলাম। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গরু কেনার টাকা দিয়ে দিলাম। এটি সরকারের অনেক ভালো উদ্যোগ।
কীভাবে জানলেন ডিজিটাল সিস্টেমের কথা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সে ফেসবুকে দেখেছে, ডিজিটাল পেমেন্টে গরু বেচাকেনা করা যায়৷ পরে এখানে আসার আগে ইসলামী ব্যাংকে একটা অ্যাকাউন্ট খুলেছি। ওই অ্যাকাউন্টেই টাকা নিয়েছি।’
এ বিষয়ে ডিজিটাল পেমেন্ট বুথের এক সদস্য বলেন, অনেক ক্রেতা-বিক্রেতারাই আমাদের কাছে আসছেন। বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছি। তবে যে পরিমাণ গরু বিক্রি হচ্ছে সেই তুলনায় ডিজিটাল পেমেন্টে আগ্রহী মানুষ কম। মানুষকে ডিজিটাল পেমেন্টের সুফল সম্পর্কে ভালোভাবে জানাতে পারলে আরও অনেকেই এই সুবিধা নিতে আগ্রহী হবে।
‘লেনদেন হচ্ছে ক্যাশলেস, স্মার্ট হচ্ছে বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুধু গাবতলীর পশুর হাটেই নয়, ডিএনসিসি এলাকার ৬টি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটে বসেছে ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ।
হাটগুলো হলো- উত্তরা দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নং সেক্টর তৎসংলগ্ন পর্যন্ত খালি জায়গায় কোরবানি পশুর অস্থায়ী হাট, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট তৎসংলগ্ন পর্যন্ত খালি জায়গায় কোরবানি পশুর অস্থায়ী হাট, মিরপুর সেকশন ০৬- এর ওয়ার্ড নং ০৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) খালি জায়গায়, ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গায় (ভাটারা সুতিভোলা), মোহাম্মদপুর বসিলার ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গাসহ মিরপুর গাবতলী গবাদি পশুর হাট (স্থায়ী)।
এর আগে ১২ জুন ডিএনসিসির সম্মেলন কক্ষে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
ডিজিটাল লেনদেন বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, কোরবানির পশুর হাটকে কেন্দ্র করে প্রচুর টাকার লেনদেন হয়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতে ডিএনসিসির কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হয়। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি, নকল বা ছেঁড়া- ফাটা নোট সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি ছিনতাই, মলম পার্টির খপ্পর থেকে রক্ষা পাবেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
একুশে সংবাদ/ স.ট/ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :