ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে আগামীকাল গ্রুপ-ই’ শেষ ম্যাচে ইউক্রেনের মুখোমুখি হবে বেলজিয়াম। এই গ্রুপের বাকি দুই দল রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়াসহ চারটি দলই প্রথম দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট করে সংগ্রহ করে গ্রুপটিকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। যে কারনে বেলজিয়ামের লক্ষ্য শেষ ম্যাচে জয়ী হয়ে গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করা।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপের ইতিহাসে এই প্রথম কোন গ্রুপের চারটি দল শেষ রাউন্ডের ম্যাচের আগে সমান পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের আশা টিকিয়ে রেখেছে। স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলের হতাশাজনক পরাজয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল বেলজিয়াম। এরপর কেভিন ডি ব্রুইনার দৃঢ়তায় দ্বিতীয় ম্যাচে রোমানিয়াকে ২-০ গোলে পরাজিত করে দারুনভাবে লড়াইয়ে ফিরে আসে বেলজিয়ানরা। স্টুটগার্টে কালকের ম্যাচের আগে বেলজিয়াম শিবিরে স্বস্তি নেই, এখনো অনেকটা কাজ বাকি আছে। ২০২২ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের হতাশা এবার আর ফিরিয়ে আনতে চায়না সোনালী প্রজন্মের এই দলটি।
দলে যেহেতু এখনো ডি ব্রুইনা, রোমেলু লুকাকুর মত নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়রা রয়েছে, কোচ ডোমেনিকো টেডেসকো তাই দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী । টেডেসকোর আশা এই দলটি যদি নক আউট পর্বে যায় তবে আরো বহুদুর যেতে পারবে।
রোমানিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পর টেডেসকো বলেছিলেন, ‘আমাদের এই দলে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। যাদের নিয়ে যে কেউ আশা করতেই পারে।’
জার্মানিতে ইতোমধ্যেই দুই ম্যাচে লুকাকুর তিনটি গোল ভিএআর বাতিল করেছে। যে কারনে এই দিকটির দিকে বেলজিয়ামকে দৃষ্টি দিতে হবে। নিশ্চিত গোলগুলো কিভাবে সঠিকভাবে ফিনিশ করা যায় তা নিয়ে টেডেসকোকে আরো কাজ করতে হবে।
উইঙ্গার জেরেমি ডকু বলেছেন, ‘আমি মনে করি সুযোগ তৈরী করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আর এটাই আমরা গত দুটি ম্যাচে করেছি। আমরা যদি সুযোগগুলো ভালভাবে ফিনিশ করতে পারি তবে সেখানে কোন সমস্যা নেই।’
লুকাকু অবশ্য তার সতীর্থদের কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থনই পেয়েছেন। দলের অন্যান্যদের বিশ্বাস বেলজিয়ামের সর্বকালের সর্বোচ্চ এই গোলদাতা নিজের সমস্যা অচিরেই কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ান আগ্রাসন শুরু হবার পর এই প্রথম বড় কোন টুর্ণামেন্টে খেলতে এসেছে ইউক্রেন। রোমানিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে আসর শুরু করার পর স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের পর দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি পুরো দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিন বছর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা দলটিতে যুদ্ধের কারনে বেশ রদবদল হয়েছে।
কোচ সেরহি রিব্রভ রোমানিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পর বলেছিলেন, ‘খেলোয়াড়রা আজ মাঠে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। এই দল ও একইসাথে পুরো জাতির জন্য এই জয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
ইউরোর ইতিহাসে গ্রুপ পর্বে চার পয়েন্ট অর্জিত কোন দলই এখন পর্যন্ত শেষ ষোলতে খেলতে ব্যর্থ হয়নি। কিন্তু বুধবার গ্রুপ-ই’র দুটি ম্যাচই যদি ড্র হয় তবে গোল ব্যবধানে ইউক্রেনের বিদায়ের শঙ্কা রয়েছে। একই সমেয় ফ্রাঙ্কফুর্টে আরেক ম্যাচে স্লোভাকিয়া ও রোমানিয়া মুখোমুখি হবে। পরের রাউন্ডে যেতে হলে এই দুই দলের এক পয়েন্টই যথেষ্ঠ।
ইউরো ২০০০’র পর বড় কোন টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মত ইউক্রেনকে হারানোর পর রোমানিয়া বেলজিয়ামের সাথে আর পেরে উঠেনি। শেষ ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে অন্তত এক পয়েন্ট পেলেই পরের রাউন্ড নিশ্চিত হবে এডওয়ার্ড ইরডানেসুর দলের। স্লোভাকিয়ার সামনেও সমান সুযোগ রয়েছে। জয়ী হলে তো কথাই নেই, ইউক্রেন অপর ম্যাচে জিততে না পারলেও গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে স্লোভাকিয়া নক আউট পর্বে যাবে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :