শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, প্রশিক্ষিত জনবল ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নে বিটাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। শিল্পখাতকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী শিল্পের বিভিন্ন ট্রেডে এটি প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানটিকে আরো যুগোপযোগী ও আধুনিক করে গড়ে তোলা সহ সারাদেশে এর কার্যক্রম বিস্তৃত করা হচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) এর "হাতে কলমে কারিগরি প্রশিক্ষণে মহিলাদেরকে গুরুত্ব দিয়ে বিটাকের কার্যক্রম সম্প্রসারণ পূর্বক আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচন (ফেজ-২)" শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ১০তলা বিশিষ্ট বয়েজ হোস্টেল ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার শিল্পোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে এবং বিদেশ থেকেও প্রচুর বিনিয়োগ এদেশে আসছে। এসব প্রেক্ষাপটে বিটাকের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পে আধুনিক সরঞ্জামাদি সংযোজনের যে চাহিদা রয়েছে, সেটি পূরণে বিটাক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সকল প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। কেননা, প্রকল্প দীর্ঘায়িত হলে অর্থ ও সময় উভয়ের অপচয় হয়। মন্ত্রী এ সময় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিটাকের বয়েজ হোস্টেল নির্মাণ শেষ করার জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।
বিটাক এর মহাপরিচালক পরিমল সিংহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিটাক এর পরিচালক ও SEPA (ফেজ-২) প্রকল্পের পরিচালক মোঃ ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, প্রশিক্ষণ জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাছাড়া প্রশিক্ষণ নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নৈতিক, সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিক উন্নয়ন ঘটায়। আর এক্ষেত্রে আদর্শ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে বিটাক। তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুগোপযোগী ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিটাককে প্রতিষ্ঠা করতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) আইন, ২০১৯ পাস করা হয়েছে। এর ফলে নিয়োগ বিধিমালা ও পদোন্নতি জটিলতাসহ নানা সমস্যার সমাধান হয়েছে। বিটাকের পেনশন স্কিম চালু করা হয়েছে। এসবের ফলে বিটাকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কর্মস্পৃহা ও উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। ইনোভেশন শোকেসিংয়ে এবছর প্রথম হওয়া ছাড়াও শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানটি ভালো করেছে।
জাকিয়া সুলতানা বলেন, দেশে বিটাকের কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নতুন ৬টি কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। যেসব জেলায় বিটাকের কেন্দ্র স্থাপিত হতে যাচ্ছে সেগুলো হলো গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, রংপুর, জামালপুর ও যশোর। তাছাড়া `চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরীতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী বিটাকের একটি আধুনিক কেন্দ্র স্থাপন` শীর্ষক প্রকল্পের সমীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :