প্রশ্নপত্র ফাঁস: আবেদ আলীসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) অধীনে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলীসহ প্রশ্নফাঁস চক্রের ১৭ সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এদিকে, পিএসসির প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার ১৭ আসামির মধ্যে পিএসসির তিন কর্মকর্তাসহ ১০ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এদিকে পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ সাতজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

গত ১২ বছরে পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক আবেদ আলীসহ ১৭ আসামিকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

আসামিরা হলেন- সৈয়দ আবেদ আলী (৫২), মো. খলিলুর রহমান, সাজেদুল ইসলাম (৪১), ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলেমান মো. সোহেল (৩৫), মো. সাখাওয়াত হোসেন (৩৪), সায়েম হোসেন ও বেকার যুবক লিটন সরকার।

প্রশ্ন ফাঁসকাণ্ডের ১৭ আসামির মধ্যে সাতজনের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করা হয়েছে। এ আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা। দুপুর আড়াইটার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারকের খাস কামরায় তোলা হয়।

একই তদন্ত কর্মকর্তা অপর আসামিদের মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এই তালিকায় রয়েছেন পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান ও ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন।

বিসিএসের প্রশ্নফাঁস নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিপিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নফাঁস করে অর্থ লোপাটে মেতে উঠতো সংঘবদ্ধ চক্রটি। প্রশ্নফাঁসকারী চক্রটি গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর নিয়োগ পরীক্ষাকে বেছে নেয়। এ পরীক্ষায় প্রশ্ন ও জালিয়াতির তথ্য ফাঁস করতে ছদ্মবেশ ধারণ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিক টিম। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফেসবুকে সৈয়দ আবেদ আলীর পোস্টগুলো ভাইরাল হতে থাকে।

এ ঘটনায় সোমবার (৮ জুলাই) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে মামলা করে। মামলায় ১৭ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা