জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, নির্বাহী বিভাগের অনেক নির্দেশনা আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে। তাই কোটার বিষয়টি নির্বাহী বিভাগ সুরাহা করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে কোটা বিষয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
ফরহাদ হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার নয়, উচ্চ আদালত কোটার সমাধান করবে। আদালতের স্থিতাবস্থার কারণে কোটা বাতিলের নির্বাহী সিদ্ধান্ত বহাল আছে। পাশাপাশি বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ আদালতের ওপর নির্ভর করছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আদালতে না থাকলে কমিশন গঠন করা যেত। এখন আদালতের বাইরে গিয়ে নির্বাহী বিভাগের কিছুই করার নেই।
বক্তব্যে, কারো দ্বারা শিক্ষার্থীদের প্ররোচিত না হওয়ার আহ্বান জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রী। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে ক্লাসে ফেরারও আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া নারী কোটা না থাকায় ৪০তম বিসিএসে কোন নারী পুলিশে চাকরি পায়নি বলেও জানান তিনি। এই অবস্থায় সরকারি চাকরিতে কোটার সংস্কার হওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন ফরহাদ হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এর পর থেকে চাকরিপ্রত্যাশী ও শিক্ষার্থীরা সরকারের জারি করা সেই পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে মাঠে নামেন।
সবশেষ গতকাল বুধবার (১০ জুলাই) সরকারি চাকরিতে কোটা বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের উপর স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এরফলে সরকারের জারিকৃত ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল হয়। আগামী ৭ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে হাইকোর্ট।
এদিকে আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে আবারও ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
একুশে সংবাদ/জ.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :