আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে তখনই খেলাধুলার উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়েছে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের হাতেই বিগত সাড়ে ১৫ বছরে খেলায় আন্তর্জাতিক সফলতাও অর্জন করেছে বাংলাদেশ, আগামীতেও ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে `শেখ হাসিনা আন্তঃব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪` এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে তখনই খেলাধুলার উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ফুটবল জনপ্রিয় খেলা। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফুটবল খেলতেন, আমার ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামালও ফুটবল খেলতেন। এখন আমাদের নাতি নাতনীরাও ফুটবল খেলছে। দেশের এই জনপ্রিয় খেলার উন্নতির লক্ষ্যে সব ধরনের সহযোগিতা সরকার অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, খেলাধুলার মাধ্যমে প্রতিযোগিতার চর্চা গড়ে ওঠে। এতে নিজেকে দেশের জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলা যায়। বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
নিয়মিত ইউরো এবং কোপা আমেরিকার ফুটবল খেলা দেখনে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন সারাবিশ্বে ফুটবল টুর্নামেন্ট চলছে। আমিও প্রতিদিন খেলা দেখি। সকালে নামাজ পড়ে সময় খেলা দেখি। এখানে আসার আগেও খেলা দেখে এসেছি। ফুটবল খেলার মধ্যে আলাদা একটা মজা আছে।
খেলাধুলার প্রসারে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন সরকারে এসেছি তখন থেকে আমার প্রচেষ্টা, বাংলাদেশ যেন খেলাধুলায় আরও এগিয়ে যায়, ছেলেমেয়েরা আরও বেশি মনোযোগী হয়। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা উপজেলায় আমরা খেলার মাঠ করে দিচ্ছি, সেটা হলো শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম।
প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকারপ্রধান বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা, এটা সবচেয়ে বেশি দরকার। সেজন্য আমরা প্রত্যেক বিভাগে একটি করে বিকেএসপি করে দিচ্ছি।
টানা চার বারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের অর্থনীতিকে উন্নত করেছি, দারিদ্র্যের হার আমরা অর্ধেকের বেশি কমিয়ে এনেছি, এখন ১৮ দশমিক ৭ ভাগ। অতি দারিদ্র্যের হার ২৫ ভাগের ওপরে ছিল, তা ৫ দশমিক ৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি। ইনশাল্লাহ, এইটুকু থাকবে না। বাংলাদেশে কোনো মানুষ অতিদরিদ্র থাকবে না। প্রত্যেককে বিনা পয়সায় ঘর করে দিচ্ছি, লেখাপড়ার বই দিচ্ছি, বৃত্তি দিচ্ছি, সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এই ধারা অব্যাহত রেখে আমরা এগিয়ে যাব। বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে বিশ্ব দরবারে এগিয়ে যাবে, উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে।
খেলাধুলায় বাংলাদেশ ভালো করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বাংলাদেশে মেয়েদের বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং ছেলেদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রতিযোগিতা আছে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ভালো খেলোয়াড় উঠে আসছে। তারা শুধু দেশে না, দেশের মাটি পার হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের জন্য মর্যাদা বয়ে নিয়ে আসছে। বাংলাদেশকে খেলাধুলার মাধ্যমে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা, এটা তারা করছে।
ফুটবল টুর্নামেন্টটি আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই খেলাধুলার মধ্যে দিয়ে এক সময় উপযুক্ত খেলোয়াড় গড়ে উঠবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলাধুলা করে কোনদিন হয়তো ফুটবলে আমরা চ্যাম্পিয়নও হয়ে যেতে পারি। সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।
টুর্নামেন্টের ফাইনালে স্টান্ডার্ডড ব্যাংক প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিকে ২-০ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইসলামী ব্যাংক প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফাইনাল ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :