নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খলিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ সভা করছি। দেশের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বাংলাদেশ মানবিক দেশ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছিল। সাম্প্রতিক পৈশাচিক নৃশংতা একে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল। বাংলাদেশের ডেভেলাপমেন্ট কর্মকান্ডে প্রশংসিত হয়েছি, গর্বিত হয়েছি। সাম্প্রতিক ঘটনা সারা পৃথিবীতে ভিন্নভাবে প্রচার হয়েছে; যা দুঃখজনক।
প্রতিমন্ত্রী নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আরএডিপি ২০২৩-২০২৪ বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের এডিপি পর্যালোচনা বৈঠকে সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তিনি প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম; তখন জেনেছি বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ ছিল। তখন দারিদ্রতা কেমন বুঝিনি। এখন দারিদ্রতা জয় করেছি। ভিক্ষার ঝুলি বঞ্চনা ও লাঞ্চনার কথা শুনতে হয়না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দারিদ্রতাকে জয় করেছি। এ বিজয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সহযোগিতা রয়েছে। আমরা এখন গর্ব করে আমাদের সক্ষমতার কথা বলছি। পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রমাণ। পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে মর্যাদার জায়গা পৌঁছে গিয়েছিলাম। সমুদ্র, নদী সবখানে সক্ষমতায় পৌঁছে গিয়েছিলাম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ছাত্রত্বের সময় তারুণ্যে ভরপুর; বাধা না মানার সময়। ছাত্ররা তাদের দাবী নিয়ে আন্দোলন করবে। বাহবা দেয়া উচিত। সরকার-ছাত্র আলোচনা যখন সমঝোতা পর্যায়ে; তখন হঠাৎ করে পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে চলে গেল। আতংক শুরু হলো। যেমন ২০০১-০৬ সালে এমপি, কর্মকর্তা, বিচারক, সাংবাদিক, শিক্ষকদের হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ বিরোধিদলীয় নেতা শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। দেশের আইন অবরুদ্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ২০০৯, ২০১০, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালের সহিংসতার রূপ একই ধরনের।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার-ছাত্র সমঝোতা চলছে, স্বস্থির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, ঠিক সে সময়ে অতর্কিত হামলা। প্রথম দিনে ছাত্ররা আন্দোলনে ছিল। পরে তারা আন্দোলনের অংশ হয়নি- ছাত্ররা বলেছে। সেসময় সহিংসতা বন্ধে দেশবাসীকে আহবান জানান উচিত। দেখলাম নোবেল লরিয়েট স্বনামধন্য ড. ইউনুস দেশবাসীকে শান্তির জন্য আহবান জানালেন না। রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙ্গে দেয়ার জন্য তিনি জাতিসংঘসহ অন্যান্য জায়গায় আহবান জানান। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের মূলভিত্তি। এটাকে বাদ দিয়ে চলতে পারিনা। অপরাধীকে অপরাধী বলা কি অন্যায়? অপরাধীদের চিহ্নিত করব না! ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে যে জায়গায় নিয়ে গেছেন সেটাকে মাটিতে নামিয়ে আনাই তাদের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা একজন প্যারামাউন্ট লীডার। তার মতো নেতৃত্বের গুণাবলী এ মুহূর্তে পৃথিবীর কোন মানুষের নেই। তিনি আমাদের একমাত্র অবলম্বন। আমাদের লক্ষ্য খুবই কাছাকাছি। আমাদের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। তীরে এসে তরি ডুবাব না। ১৯৭১ সালের পরাজিতরা সাড়ে তিন বছরের মাথায় ক্ষমতা দখল করে। ২১ বছর দেশ পরিচালনা করে। দেশকে এগিয়ে নিতে পারেনি। দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদেরকে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। কাউকে না কাউকে সেকরিফাইস করতে হবে। ৩০ লাখ শহীদ দেশের জন্য নিজেদের জীবন দিয়েছে। আমাদের কাজগুলো আগামী প্রজন্ম মনে রাখবে। অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করব সেটিই লক্ষ্য হোক।
উল্লেখ্য, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের আরএডিপিতে ৩৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৬,৮৩৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। অন্যান্য প্রকল্পের কাজ চলমান।
এসময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তফা কামালসহ মন্ত্রণালয়ের আওতাধিন দপ্তর ও সংস্থা প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :