জুলাই মাসে দেশে ৩৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭২ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় ৫৪৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত জুলাই মাসে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৩৭৪টি দুর্ঘটনায় ৪১৬ জন নিহত এবং ৫৬১ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রেলপথে ২২টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ৪ জন আহত হয়েছেন।
নৌ-পথে ১৬টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত, ১৪ জন আহত এবং ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। একই সময়ে ১০৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১২১ জন নিহত, ৮১ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৪৪ শতাংশ, নিহতের ৩২.৫২ শতাংশ ও আহতের ১৪.৯১ শতাংশ। জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ঢাকা বিভাগে, ৮৭টি দুর্ঘটনায় ৯২ জন নিহত ও ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে, ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে আর ও জানানো হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে দু’জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৫৭ জন চালক, ৫৪ জন পথচারী, নয়জন পরিবহন শ্রমিক, ২২ জন শিক্ষার্থী, চারজন শিক্ষক, ৫৩ জন নারী, ৩৭ শিশু, তিনজন সাংবাদিক, দুই চিকিৎসক এবং চারজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে দু’জন পুলিশ সদস্য, ৫৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৫০ জন পথচারী, ৪৭ জন নারী, ৩৩ জন শিশু, ২০ জন শিক্ষার্থী, দু’জন পরিবহন শ্রমিক, চারজন শিক্ষক, ৩ জন সাংবাদিক, দুই চিকিৎসক, চারজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০৪টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৩.২১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫.৩৯ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১২.৮৯ শতাংশ বাস, ১৬.৪৬ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭.১৪ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৮.১৩ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.৭৪ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। মোট দুর্ঘটনার ৪৪.৯৪ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ৩৪.৫২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৯৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৩.২৭ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দশমিক ২৯ শতাংশ। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট দুর্ঘটনার ৩৬.৬০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৬.৪৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩০.৯৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।
এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে ও দশমিক ৮৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেন।
এই সময়ে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সারাদেশে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ১৮ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে তেমন একটি আসেনি। এ কারণে বিদায়ী জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের তথ্য প্রতিবেদনে অনেক কম এসেছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :