দুই পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকারসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন বিএনপি নেতা ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় তিনি নিজেই মামলাটি করেন।
২০১১ সালের ৬ জুলাই বিএনপির ডাকা হরতাল কর্মসূচি চলাকালে সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে পুলিশের লাঠি পেটায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। ওইদিনের ঘটনায় জড়িত ছিলেন তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) বর্তমানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ ও তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি) ও বর্তমানে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
জানা যায়, ওইদিন সকালে জয়নাল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে বিরোধী দলের ১৫ থেকে ২০ জন সংসদ সদস্য মানিক মিয়া এভিনিউয়ের সামনে জড়ো হোন। ভোরবেলা তারা হেঁটে সংসদ ভবন এলাকা থেকে ফার্মগেট এলাকায় পৌঁছান। পরে ফার্মগেট থেকে তারা আবার মানিক নিয়ে এভিনিউয়ের দিকে ফিরে যান। এ সময় হঠাৎ একটি বাস লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়।
তৎকালীন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইমাম হোসেন, হারুন অর রশীদ ও মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সংসদ সদস্যদের সামনে গিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জয়নাল আবদিন ফারুকের কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশ তার দিকে তেড়ে যায়। তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান। পুলিশের কয়েকজন সদস্য তাকে লাথি মারেন এবং তাকে ধরে টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। এ সময় ফারুকের গেঞ্জি খুলে যায়। একপর্যায়ে একজন পুলিশ সদস্যের লাঠিপেটায় তার মাথা ফেটে যায়।
ফারুকের মাথায় রক্ত দেখে নারী সংসদ সদস্যরা তাকে নিয়ে ন্যাম ভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ আবার এগিয়ে এলে, তিনি আত্মরক্ষায় ন্যাম ভবনের দিকে দৌড় দেন। পুলিশও তার পিছু নেয়। একপর্যায়ে ফারুককে চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান।
এরপরে ফারুককে উদ্ধার করে এমপি আসিফা আশরাফি পাপিয়ার ন্যাম ভবনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কয়েক ঘণ্টা পর সকাল ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার পর আদালত এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
ফারুককে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বিএনপির সংসদ সদস্য আশরাফউদ্দিন নিজান মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে ঢাকার একটি থানা এ–সংক্রান্ত মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ২০১১ সালের ১০ জুলাই ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে দায়ের করা মামলায়, পুলিশের ৩০ জনের মতো সদস্যকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে ছিলেন প্রধান অভিযুক্ত দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকার।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :