অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার বিগত ১৫ বছরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে যে সমস্ত গোপন চুক্তি করেছে সেগুলো বাতিল করতে হবে।
তিনি বলেন, ভারতের এক অভিনেত্রী কয়েকদিন আগে বলেছেন, একটা দেশ ছিল ভারতের পক্ষে সেটাও হাতছাড়া হয়ে গেছে। একটা দেশ ছিল না, একজন ব্যক্তি ছিল ভারতের পক্ষে। কারণ ওই ব্যক্তি এ দেশের গণতন্ত্র হত্যা করেছে। এই দেশে একচেটিয়া ভোট করে নিজেদের লোককে ভোট ছাড়া এমপি বানিয়েছে। সেই শেখ হাসিনা এই দেশের গণতন্ত্রকে কবরস্থানে পাঠিয়েছে। আর সেই শেখ হাসিনাকে ভারত সমর্থন করে, বাংলাদেশকে সমর্থন করে না। বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করে না।
আজ শনিবার সকালে কাফরুল থানা বিএনপির উদ্যোগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শহিদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বিএনপি ভদ্রলোকদের দল, জনগণের দল, দেশের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের দল। বিএনপি বিগত ১৫ বছরে সীমাহীন অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছে। বিএনপি নেতারা বছরের পর বছর গুম হয়ে থেকেছে। তারপরও আমরা গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করেছি।
আওয়ামী লীগের নেতারা এখন আফসোস করছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এখন তারা আফসোস করছেন। আওয়ামী লীগকে এখন মানুষ বলছে আফসোস লীগ। এ দেশের মানুষের সহায় সম্পদ লুট করার তাদের যে প্রবণতা ওইটা যুবলীগ, ছাত্রলীগ এখন করতে পারছে না, তাই তারা আফসোস করছে।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে মনুষ্যত্ব নেই। তিনি লাশ ফেলে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছে। সেজন্য তার বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করেছে তার পদত্যাগ চেয়েছে সে তরুণ হোক ছাত্র হোক যুবক হোক শ্রমজীবী মানুষ হোক সর্বশেষ শিশু কিশোরদের হত্যা করে সে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, যারা বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি বিশ্বাস করে, দেশ নায়ক তারেক রহমানের আদর্শকে বিশ্বাস করে তাদেরকে এই সমাজের শান্তির শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কয়েকদিন আগেই বলেছেন, আমরা শান্তির সমাজ নির্মাণ করতে চাই, আমরা শান্তির সমাজ তৈরি করব। বাড়ি দখল, ঘর দখল, গোয়াল ঘর থেকে গরু নিয়ে যাওয়া এইটাই ছিল শেখ হাসিনার ১৫ বছরের আওয়ামী সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি বিএনপি পুনরাবৃত্তি করবে না।
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তারা কি জানেন না গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণকে কী পরিমাণ অত্যাচার করেছে। তারা কী জানেন না ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ এর ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছে তারপরও তার প্রতি আপনাদের এত দরদ কেন শেখ হাসিনার প্রতি? আপনারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মর্যাদা দিতে চান না? আপনারা কি বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা ও অনিচ্ছার গুরুত্ব দিতে চান না?
আকরাম হোসেনের বাবুলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক সাইফুল আলম নিরব, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, মাহবুবুল ইসলাম, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন আকিল, মেহেবুব মাসুম শান্ত, জাকির হোসেন, তালুকদার রুমীসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পরে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের পরিবারের মাঝে অনুদান তুলে দেন।
একুশে সংবাদ/র/ব./এন
আপনার মতামত লিখুন :