কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় মেট্রোরেলের ক্ষতিগ্রস্থ দুই স্টেশন দ্রুত সময়ে চালুর বিষয়ে জাপানের রাষ্টদূতের সাথে বৈঠকে বসবেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজল কবির খান।
রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে মেট্রোরেলের চালু হবার পর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজল কবির খান আগারগাঁও থেকে মেট্রোরেলে করে সচিবালয় স্টেশানে আসেন। সেখানে এসব কথা বলেন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।
প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ ফাওজল কবির খান বলেন, আজকে বিকেলে জাপানের রাষ্টদুত আমার সঙ্গে দেখা করতে আসবেন। কাজী পাড়া এবং মিরপুর ১০ এটা কিভাবে চালু করা যায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে সে ব্যপারে আলাপ হবে। মেট্রোরেলের যে এমডি উনাকে বলেছি ক্ষয়ক্ষতি কি হয়েছে এটা জানান। আমাদের একটা সুনির্দিষ্ট টাইম লাইন দেন। কখন এটা চালু হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন যে এটা একটা জনপ্রত্যাশার সরকার। আমি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরেই প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, তোমার প্রথম কাজ হবে মেট্রোরেল চালু করা। সেটাই আমরা করেছি। এখানে বোর্ড পূণর্গঠন করতে হয়েছে। বোর্ডের সভা ছিল, কিছু দাবি দাওয়া ছিল, এগুলো আমরা দেখেছি। এর আগে ১৭ তারিখ এটা চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু মেট্রোরেলের কিছু কর্মকর্তা কর্মচারির জন্য সেটা চালু করা সম্ভব হয় নি। আপনারা জানেন এটা বড় অন্যায় কাজ করেছে। তিন লাখ যাত্রীকে জিম্মি করে কোন দাবি আদায়ের চেষ্টা এটা কোন শুভ লক্ষণ না।
দেশে দাবি দাওয়ার মৌসুম চলছে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, আর এখন সারা দেশে একটা দাবি দাওয়ার মৌসুম চলতেছে। সবাই দাবি দাওয়া চায়। সবাই চায় বৈষম্য দূর হবে, সবাই চায় বঞ্চনা থেকে তারা মুক্তি পাবেন। ১৬ বছরের বঞ্চনা তো সরকারের ১৬ দিন হয়েছে, অনন্ত ১৬ মাস সময় দেন। আমরা আস্তে আস্তে এগুলো সবই বিবেচনা করবো।
সব দাবি পূরণ করলে দেশ মূল্যস্ফিতিতে পড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করে এই উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে, এসব দাবি দাওয়ার সাথে একটা আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আছে। আপনার সরকারের যদি রাজস্ব না বাড়ে কিংবা অন্যান্য আয় যদি না বাড়ে তা হলে এটা কোথা থেকে দিবে? এখন যদি টাকা ছেপে আমরা দিতে পারি, তাইলে তো মুদ্রাস্ফিতি হবে। তাইলে তো সাধারণ মানুষের অনেক কষ্ট হবে। সুতরাং এটা অনিভিপ্রেত ঘটনা ছিল এবং আমরা চাই ভবিষ্যতে এটা ঘটবে না।
কেপিআইয়ের মাধ্যমে মেট্রোরেলকে জরুরী সেবা ঘোষণা করা হবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, এটা (মেট্রোরেল) যাতে ভাঙচুর না হয়, সে জন্য এটাকে কেপিআই হিসেবে একটা আপগ্রেড করার চেষ্টা করতেছি। যাতে এটার নিরাপত্তা বাড়ে এবং এটাকে একটি এসেনশিয়াল সার্ভিস হিসেবে ডিক্লার করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। যাতে করে কেউ এভাবে সার্ভিসটাকে ব্যাহত করতে না পারে।
যারা ভাঙচুর বা ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আপনারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে যে সমস্যা হয়ে গেছে, যেহেতু এটা গণআন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল, এখন প্রাথমিকভাবে সব মামলা তুলে নেয়া হয়েছে।
কিন্তু আপনারা সবাই জানেন, যারা দেশকে পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করেছে। তাদের পক্ষে এ ধরণের কাজ তো করা সম্ভব না। এটা দুস্কৃতিকারীদের কাজ। আপনাদের কাছে তাদের ভিডিও আছে, ফুটেজ আছে, আমরা এর জন্য যথোপযোক্ত ব্যবস্থা নেব।
অন্য লাইনগুলো কবে চালু হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা গত তিন চারদিন আগে, মেট্রো রেলের জাপানিজ যারা বাস্তবায়ন করছেন, আমরা সবার সঙ্গে আলাপ করেছি। অন্যান্য লাইনগুলো চালুর ব্যপারে আমরা কাজ করছি।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :