গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় বকেয়া বেতনসহ কয়েকটি দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। এতে সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল। এর ফলে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন ওই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকরা।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল থেকে মহাসড়ক অবরোধ তৈরি করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। এছাড়াও সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করায় সারারাতই যানজটে স্থবির থাকে মহাসড়ক। এতে রাতভর যানজটে আটকে অনেকের ঢাকায় পৌঁছাতে ও গাজীপুর আসতে ভোর হয়ে যায়।
পুলিশ ও আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী টিএনজেড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এ্যাপারেল প্লাস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গত জুলাই মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করেন। ১৭ তারিখ বিনা নোটিশে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মালিক পক্ষ। পরদিন জুন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করলেও জুলাই মাসের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
পরে কলকারখানা অধিদপ্তরে মালিক, শ্রমিক ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ২৬ সেপ্টেম্বর বকেয়া বেতন পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তবে সেদিনও কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এরপর মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকরা ফের মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর কারখানার শ্রমিকেরা জানান, গত মাসের বাড়ি ভাড়া এখনো দিতে পারিনি। এদিকে কারখানার মালিক আমাদের বেতন দিচ্ছে না। গত দুইদিন ধরে আমরা সবাই মিলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছি। যতক্ষণ আমাদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করা হবে, ততক্ষণ আমরা মহাসড়ক ছাড়বো না।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সোমবার এ্যাপারেল প্লাস লিমিটেডের শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার কথা ছিল। বেতন না দেওয়ায় শ্রমিকেরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। মহাসড়ক অবরোধ সৃষ্টিকারী পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে শিল্প পুলিশ কাজ করছে। এছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনকারী বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন।
তিনি আরও জানান, গাজীপুরে নয়টি কারখানা বন্ধ আছে। এর মধ্যে চারটি কারখানা শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া একটি কারখানা লে-অফ, একটি অস্থায়ী বন্ধ এবং তিনটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ ছাড়া গাজীপুরের ৯৮ শতাংশ পোশাক কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক আছে। স্বাভাবিক থাকা পোশাক কারখানাগুলোয় কর্মীরা সকালে কাজে যোগ দিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :