অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনে শিগগিরই সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। তারাই ঠিক করবেন নির্বাচন কমিশনে কারা থাকবেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মাহফুজ আলম বলেন, আজকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে কথা হয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি, অর্থনৈতিক অপরাধ, গণহত্যার বিচার কার্যক্রম নিয়ে কথা হয়েছে। এক্ষেত্রে ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য শরিক যারা ছিলেন, যারা গণভবনে বসে জুলাইয়ের শেষে এবং আগস্টের শুরুতে আওয়ামী লীগের হাত শক্তিশালী করেছেন, গণহত্যায় মাঠে ও নীতি নির্ধারণে সহযোগিতা করেছেন; তাদের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে সে প্রশ্ন করেছেন রাজনৈতিক দলগুলো। প্রধান উপদেষ্টার অভিমত জানতে চেয়েছেন তারা।
দ্রব্যমূল্যের দামের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কথা বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা এবং পোশাক শিল্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে আশ্বস্ত তিনি। দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে এরইমধ্যে একটি অগ্রগতি সাধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, খুব দ্রুতই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের জন্য সার্চ কমিটি গঠন হবে। বিধি অনুযায়ী সার্চ কমিটিতে ছয়জন সদস্য থাকার কথা। এছাড়াও বিধি অনুযায়ী যা যা করার কথা, সেগুলো করা হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে কবে, কিভাবে নির্বাচন হবে; ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ অন্যান্য যে পদ্ধতিগত বিষয়গুলো আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। সে সমান্তরালেই সংস্কার কমিশনগুলো কাজ করে যাবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগসহ শরিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের কথা এসেছে আবারও। তাদের রাজনীতি কিভাবে সীমাবদ্ধ করা যায় সেটা নিয়েও কথা এসেছে। ২০১৪, ১৮ ও ২৪ এর তিন সংসদ কিভানে অবৈধ ঘোষণা করা যায় এ সম্পর্কেও রাজনৈতিক দলগুলো অভিমত জানিয়েছে। গণপরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে একটি দল কথা বলেছে।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের জন্য সার্চ কমিটি গঠিত হবে। বিধিমালা অনুযায়ী সার্চ কমিটি হওয়ার পর যারা কমিটিতে আসবেন তারা ঠিক করবেন নির্বাচন কমিশনার কারা হবেন। এরপরে ভোটার তালিকা হালনাগাদের মতো অনেক কার্যক্রম আছে। গত তিন নির্বাচনে তরুণরা ভোট দিতে পারেননি। এই বিপুল সংখ্যক তরুণদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করাসহ অনেকগুলো পদ্ধতিগত জিনিস আছে যেগুলো সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত নির্বাচন কমিশনাররা এসে ঠিক করবেন। সার্চ কমিটি এবং নির্বাচন কমিশনারের ক্ষেত্রে কোনোরকম রাজনৈতিক চাপ, লিয়াজো বা আঁতাত হবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের যে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ অবস্থান সেটি বজায় থাকবে। সার্চ কমিটি বিদ্যমান আইনেই হবে।
যারা গত তিনটি সংসদ নির্বাচনে অবৈধভাবে এসেছেন তাদের ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই অবস্থান আছে। তারা অবৈধভাবে এসেছেন, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্যই তাদের রাজনৈতিকভাবে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করবে। এই বাধা কিভাবে বাস্তবায়িত হবে সেটা দেখতে পাবেন। এটার আইনি ও প্রশাসনিক দিক আছে। যখন নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু হবে তখন এই বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিকদলগুলো নিষিদ্ধের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আরও আলোচনা পর্যালোচনার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সরকার একা সিদ্ধান্ত নেবে না। স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :