সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় অস্পষ্ট ও দ্বিধাবিভক্ত ছিল, আওয়ামী লীগ সরকার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা করেছে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসলে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কি না, সেটি আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণের ওপর নির্ভর করছে। ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় অস্পষ্ট ও দ্বিধাবিভক্ত ছিল, আওয়ামী লীগ সরকার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা করেছে।’
বিস্তারিতভাবে তিনি তুলে ধরেন এভাবে যে, তৎকালীন সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল এনিয়ে যেভাবে ব্যাখ্যা করেছে, সেটা সংবিধানের আলোকে বা রায়ের আলোকে ব্যাখ্যা হয়নি। কারণ ত্রয়োদশ সংশোধনীর জাজমেন্টে দেখা যাবে, প্রথমে দুইটা ইস্যু ছিল। প্রথমটা ছিল ত্রয়োদশ সংশোধনী হোল্ড, সাংবিধানিক নাকি অসাংবিধানিক। ওখানে ৭ জনের মধ্যে চার জন বলেছিলেন এটা অসাংবিধানিক, তিন জন বলেছিলেন এটা সাংবিধানিক।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ২.ইস্যু ছিল পরবর্তী দুইটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় হবে কি, হবে না। সেখানে ৭ জনই প্রথমে বলেছিলেন এ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আওতায় হতে হবে। ১৬ মাস পরে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক রায় দিয়ে বললেন- না, পরবর্তী দুটি নির্বাচন হবে কি হবে না, সেটা নিধারণ করবে সংসদ। এটা যখন খায়রুল হক সাহেব বলেছিলেন, তখন তার সাথে দুই জন একমত পোষণ করেছিলেন। তারা হলেন-বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মো. মোজাম্মেলন হোসেন। অর্থাৎ ৭ জনের মধ্যে ৩ জন বললেন পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় হবে কি হবে না, সেটা সংসদ নির্ধারণ করবে। আর ৩ জন আগেই বলেছিলেন এটা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। তাহলে ৩/৩ এ নিয়ে ছয় হয়ে গেল।
এরপর সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বললেন, পরবর্তী ২টি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় হতে হবে। তবে সেই, ক্ষেত্রে বিচার বিভাগকে বাদ রেখে করতে হবে। তাহলে দাড়াল কি? এই ইস্যুতে বিচারটা একটা ইস্যুভিত্তিক। এই ইস্যুতে ৩ জন বললেন পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় তবে সেটা সংসদ ঠিক করবে। ৩ জন আগেই বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় হতে হবে, আরেকজনও বললেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় হতে হবে, তবে সংসদে যাওয়ার দরকার নেই। ফলে ফোর ইস্টু থ্রি হলে গেল দ্বিতীয় ইস্যুতে।
পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় হবে, এই ইস্যূতে চার জন বলেছেন হ্যাঁ আর ৩ জন বললেন সংসদ দেখবে। যদি আমি সেভাবে বিশ্লেষণে যাই। এটাকে সরকার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা করে কনস্টিটিউশনটিকে এমনভাবে নিয়ে গিয়েছে, যা গণতন্ত্রহীনতার দিকে বাংলাদেশ গেছে। এগুলো আমরা আদালতের সামনে তুলে ধরব।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :