আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং (ইভিএম) পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম পদ্ধতি বাদ দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ ব্যালটে ভোটে আয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমরা প্রথম দিন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচনের যে সময়সীমার ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি।
সীমানা পুনর্নির্ধারণ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ন্যায্যতার ভিত্তিতে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। অতীতে যদি কোনো প্রার্থীকে সুবিধা দিতে বা বঞ্চিত করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সীমানা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে। সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ২০০১ সালের মানদণ্ড বা বর্তমানের কোনো নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণ করা হবে না। সুষ্ঠু ও ন্যায্য পদ্ধতিতেই কাজটি সম্পন্ন হবে।
ভোটার তালিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে বিদ্যমান ভোটার তালিকায় অনেক অসংগতি রয়েছে। দু’মাসের মধ্যে সংশোধিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা তৈরি করা হবে। নতুন তালিকা তৈরির জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেয়া, অনুপস্থিত বা বিদেশে থাকা ভোটারদের তথ্য যাচাই এবং ডুপ্লিকেট ভোটার শনাক্ত করে তালিকা সংশোধনের কাজ করা হবে।
রোডম্যাপ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে না, তবে নির্বাচন কমিশনের কাজের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা থাকবেই।
এর আগে, গতকাল (সোমবার) নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমেদ বলেন, ২০২৫ সালের শেষে বা ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
ওইদিনই সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, সংস্কার ও ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে প্রণয়ন সাপেক্ষে ২০২৫ সালের শেষদিকে অথবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার ও নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ওপর নির্ভর করছে জাতীয় নির্বাচনের সময়কাল। এ ক্ষেত্রে সংস্কার ও ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে প্রণয়ন সাপেক্ষে ২০২৫ সালের শেষদিকে অথবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রথমে সবচেয়ে বড় কাজ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। এটি অত্যন্ত কঠিন কাজ। এর মধ্যে বিগত তিনটি নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় কাজটি এখন আরও কঠিন। কারও ভোটার তালিকা যাচাই করার সুযোগ হয়নি। গত ১৫ বছরে যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হয়েছে, তাদের সবার নাম ভোটার তালিকায় তোলা নিশ্চিত করতে হবে। এটি বড় একটি কাজ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :