নির্বাচনে কারা আসবে, কারা যোগ্য, কারা যোগ্য নয়, সে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন (ইসি) নেবে। এসব আমাদের এখতিয়ারের বাইরে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
এ সময় তিনি আরও বলেন, সবার আকুতি একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক, যার মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা একটি ভিত্তির ওপর দাঁড়ায়। এটা জন-আকাঙ্ক্ষা, সেই সঙ্গে আমাদেরও আকাঙ্ক্ষা। আমাদের কাজ নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে প্রস্তাব দেওয়া।
রোববার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ, আবেগ ও উচ্ছ্বাস সেটা আমরা উপলব্ধি করছি। আমরা কোথাও গেলে মানুষ দুটো কথা বলতে চায়, তাদের মনের আকুতি ব্যক্ত করতে চায়। অনেকে আমাদেরকে বিভিন্ন প্রস্তাবও দিতে চায়। সবার প্রস্তাবগুলো আমরা নিচ্ছি। ইমেইলেও হাজার হাজার মানুষ মতামত দিচ্ছে আমাদের। আমরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রস্তাবগুলো দেব। তবে বাস্তবায়ন আমাদের দায়িত্ব নয়। সরকার, রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশন তা বাস্তবায়ন করবে। নাগরিক হিসেবে আমাদের সবার সেখানে ভূমিকা থাকবে। আশা করছি ৩১ ডিসেম্বরের আগেই আমরা প্রতিবেদন জমা দেব।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এখানে বেশকিছু পদক্ষেপ আছে। হাইকোর্টের যে রায়, সেটা সুপ্রিম কোর্টে যাবে। আমরা আশা করছি, সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের যে রায় সেটার পক্ষেই থাকবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলে আরেকটা মামলা যে আছে সেটা নিয়েও আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। এখনও অনেক প্রক্রিয়া বাকি আছে।’
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা আর ব্যবহৃত হতে চান না বলে আমাদের জানিয়েছেন। উনারাও চান সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেভাবেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করবেন তারা। নির্বাচনী হলফনায় তথ্য গোপন করা হয়। এগুলো যাতে যাচাই-বাছাই করা হয় সে প্রস্তাবনাও উঠে এসেছে। আমাদের সব প্রস্তাব এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে আমরা সবগুলোকে বিবেচনায় নিচ্ছি।’
অনেক দল গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, নির্বাচনে তাদের সুযোগের সুপারিশ থাকার বিষয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে সুপারিশ থাকবে। তবে ওইসব প্রশাসনিক ও আইনগত সিদ্ধান্ত। নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সেসব সিদ্ধান্ত আসবে। আগে যা ঘটেছে তার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে সেটা ফিরিয়ে আনতে সবাই বদ্ধপরিকর।’
নির্বাচনে ইভিএম ব্যবস্থা থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আর প্রশ্নই আসে না। এটা আর হবে না বলে খোদ নির্বাচন কমিশনও বলেছে। আমরাও একই অবস্থানে আছি।’
এ সময় সংস্কার কমিশনের সদস্য স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আবদুল আলীম, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ নির্বাচন অফিসসহ, সরকারি বিভিন্ন কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :