বাংলাদেশ বিদ্বেষী আরাকান আর্মির দখলে মিয়ানমার সীমান্ত। এই পরিস্থিতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং ভারত নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে এবং সেনাবাহিনিকে প্রস্তুত থাকতে হবে বলেও জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত `ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা` শীর্ষক সংলাপে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নিরাপত্তার ব্যাপারে জাতীয় সিকিউরিটি আর্কিটেকচার প্রয়োজন আর পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আমরা এখনও ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারিনি। কূটনীতিক কর্মকাণ্ডে এআইসহ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। কমিউনিকেশন টুলস আপডেট করতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রর্তাপন নিয়ে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্ত আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে, যারা বাংলাদেশ বিদ্বেষী। একদিকে মিয়ানমারের অবস্থা, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং ভারত নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। আর্মিকেও প্রস্তুত থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, বিএনপি দুই বার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠিয়েছে। এ ইস্যুতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারকে আলোচনার জন্য প্রস্তাব দিলেও সাড়া দেয়নি তারা।
একই অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ চায় মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক তবে এরইমধ্যে দেশটির সীমান্তের প্রায় শতভাগ আরাকান আর্মির দখলে চলে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন নিয়ে এখনই কথা বলা যাচ্ছে না। তাই আগামী দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা নেই। শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে সেখানেও শান্তি থাকবে না।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ক্ষমতায় যাওয়া এবং রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। মূলনীতি থেকে অনেকেই সরে যায়। দলগুলো যাতে সেখান থেকে সরে না যায় তা রক্ষা করার দায়িত্ব জনগণের। সবসময় দলের চেয়ে দেশ বড় বলা হলেও, বাস্তবে তার উল্টো চিত্র দেখা যায়। কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরি করতে পারলে জনগণ ক্ষমতাবান হবে। জবাবদিহি থাকবে।’
‘সব দেশের সাথেই সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হবে বাংলাদেশকে এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ চায় মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় শতভাগ আরাকান আর্মির দখলে চলে গেছে-এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন নিয়ে এখনই কথা বলা যাচ্ছে না। তাই আগামী দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা নেই। শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে সেখানেও শান্তি থাকবে না।’
একই অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, গত ১৫ বছর ছিল গদি রক্ষার নীতি, কোনো পররাষ্ট্রনীতি ছিল না। নিজেদের গদি রক্ষার্থে অন্যদের সহায়তা নিয়েছে আর ভারত সেখানে প্রধান জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করবে এমন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বিভাজিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারে না। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করা ছাড়া বিকল্প নেই, ভারতের সাথে সম্পর্ক শুধু আন্তর্জাতিক নয়, অভ্যন্তরীণভাবেও দেখতে হবে। দক্ষিণ বিশ্বে নেতৃত্বস্থানীয় জায়গায় যেতে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রয়োজন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :