অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, "আমরা সংস্কারের লক্ষ্যে এক থেকে দেড় বছরের জন্য এসেছি। আমাদের উদ্দেশ্য বেশি দিন থাকা নয়। আমরা কিছু ভালো কাজের উদাহরণ রেখে যেতে চাই, যেন অন্যরা সেই পথ অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে পারেন।"
তিনি রোববার (৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে `সৌদি-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি : প্রবণতা, মূল চ্যালেঞ্জ এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনা` শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে, যা ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি আরব আমাদের জন্য বিশাল সুযোগ তৈরি করছে। আমরা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি, যদিও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে, সরকারের একার পক্ষে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়, এর জন্য বেসরকারি খাতের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"
তিনি আরও বলেন, "বিগত সরকারের সময় দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং কোম্পানি এবং সৌদি আরবের আরামকো কোম্পানিকে বিমানবন্দর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যা দেশের জন্য হতাশাজনক।"
অর্থ উপদেষ্টা শেয়ার মার্কেটের সমালোচনা করে বলেন, "বিভিন্ন কোম্পানি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলেও কিছু কোম্পানির ফ্যাক্টরি বন্ধ হওয়ার পরও তাদের শেয়ারের দাম বাড়ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে হবে।"
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন দক্ষ কর্মীর প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, "আমাদের দেশে দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে। এটি শুধু সৌদি আরবের জন্য নয়, সারা বিশ্বে দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে, কিন্তু আমরা সেই চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরি করতে পারছি না। যত বেশি দক্ষ কর্মী তৈরি করতে পারব, তারা তত বেশি দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য অবদান রাখতে পারবে। দক্ষ কর্মী তৈরিতে আমাদের আরও উন্নতি ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।"
অনুষ্ঠানে সৌদির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, "অতীতে বিদেশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিয়ে সমালোচনা ছিল। তবে বর্তমান সরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আমি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিশ্চয়তা দিতে চাই, এখন আর আগের মতো পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানাই।"
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম এবং পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বক্তব্য দেন।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :