নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রয়োজন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি আরও বলেন, ঐ অঞ্চলের ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সংস্কৃতিকে সম্মান করা প্রয়োজন।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত "আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি ১৯৯৭: একটি অসমাপ্ত শান্তি নির্মাণ মডেল" শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, পাহাড়ি অঞ্চল পুরোপুরি নিরাপদ নয়, তবে সেখানে বসবাসরত সকলকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

পার্বত্য শান্তি চুক্তিকে অসমাপ্ত শান্তি চুক্তি মডেল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, "আমাদের এখানে যে অসমাপ্ত শান্তি চুক্তি মডেল রয়েছে, তা শেষ করা প্রয়োজন। শেষ মানে একদিনে নয়, আপনাকে পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে সেখানে বসবাসরত জনগণের জন্য শান্তি ফিরে আসে।"

কিছু মানুষ আছেন যারা নিজেদের সুবিধার জন্য অশান্তি সৃষ্টি করেন, এই কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "তবে সঠিক পদক্ষেপ নিলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। যখন মানুষ দেখবে, এই শান্তি চুক্তি তাদের জন্যই, তখন তারা সেটি মেনে চলবে।"

অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, "পাহাড়ে যখন কেউ কিছু করতে যায়, বিশেষ করে যারা স্থানীয় নয়, তাদের একটি নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরিহিত মানুষদের নিয়মিত টাকা দিতে হয়। তারা রাষ্ট্রের অংশ নয়, তবে তাদের ইউনিফর্ম আছে এবং তাদের একটি স্ট্যাবলিশমেন্টও রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা অর্থ আদায় করে। ভাল থাকার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হিসেবে তারা এই পদ্ধতিকে বেছে নিয়েছে।"

সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, "এখানে দুটি সমাধান রয়েছে। একটি হলো, আপনি শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন, যাতে সাধারণ জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারে, এবং তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করুন। যেন তারা সহজে আয় করার পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।"

পার্বত্য অঞ্চলের আদি নিবাস নিশ্চিত করতে না পারার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমরা যদি এমন কিছু করতে পারতাম, যেখানে তারা দেখত যে এর মাধ্যমে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে, তাহলে সমাধানটি সহজ হতো, কিন্তু তা হয়নি। আর এই কারণেই সেখানকার আদিবাসী এবং অন্যান্যদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।"

আমাদের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনতে হবে, যেন আমরা সবাই সবাইকে শ্রদ্ধা করি, এই কথা উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, "সেক্ষেত্রে অবশ্যই প্রথম পদক্ষেপটি সরকারেরই নিতে হবে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করেছি, কিন্তু সেখানে বিশ্বাস ছিল না। সব সময় যুদ্ধ ছিল না, তবে ছোট ছোট বিষয় ছিল। সেখানে সাধারণ সহমর্মিতা এবং বোঝাপড়া না থাকায় ছোট ছোট উপকারভোগী শ্রেণি তৈরি হয়ে গেছে। যদি আমরা তাদের মধ্যে বোঝাপড়া সৃষ্টি করতে পারি, তবে ভাল ফলাফল পাবো।"

একুশে সংবাদ/এনএস