উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৮টার দিকে গুলশানে নিজের বাসভবন ফিরোজা থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
ফিরোজা থেকে সাদা একটি গাড়িতে রওনা করেন খালেদা জিয়া। তবে নেতাকর্মীদের ঢলে তার বাসভবন থেকে বের হতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাতে বিকেল থেকে তার বাসভবনে অপেক্ষা করছিলেন নেতাকর্মীরা।
দলটির পক্ষ থেকে জানানে হয়েছে, রাত ১০টায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ উড়োজাহাজ ‘রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন খালেদা জিয়া। দীর্ঘ আট ঘণ্টার মতো ভ্রমণে দোহায় যাত্রাবিরতি করবেন তিনি।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের লন্ডন যাত্রা ঘিরে বিকেল থেকেই দলে দলে নেতাকর্মীরা গুলশানে জড়ো হতে থাকেন। সন্ধ্যার পর খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়াকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে গুলশানসহ বিমানবন্দরের পথে রাস্তার দুপাশে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষকে জড়ো হতে দেখা গেছে।
চোখ ও পায়ের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য সবশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির এক মামলায় কারাবন্দি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে রাখা হয় ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত ও নির্জন কারাগারে। কারাগারে থাকাকালে নানা রোগে আক্রান্ত হন বিএনপি নেত্রী। বারবার যেতে হয় হাসপাতালে।
আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরে জামিন ও মুক্তি না মেলায়, প্রাণঘাতী করোনার প্রকোপে পরিবারের আবেদনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার কারাবাসের ২ বছর একমাস ১৩ দিন পর শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের অস্থায়ী মুক্তি দেয়া হয় তাকে। শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ছয়মাস করে বাড়ানো হয় বেগম জিয়ার মুক্তির মেয়াদ।
এতদিন বাসা-হাসপাতাল, হাসপাতাল-বাসা এভাবেই কাটছিল বেগম জিয়ার জীবন। কয়েকদফা দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হয় তাকে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বিএনপি নেত্রীকে বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে দেয়া হয় চিকিৎসা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কয়েকদফা তারিখ পরিবর্তন হলেও শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় কাতারের আমীরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :