সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে গুলশান-১ নম্বর সড়কের মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করেন। এই আন্দোলন শুরু হয়েছে রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে, যা তাদের দীর্ঘদিনের দাবির অংশ হিসেবে আরও তীব্র হয়েছে।
অবরোধের কারণে গুলশান-১ নম্বর সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে মোড়ের চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সড়কটি বন্ধ থাকায় যানবাহনগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এই সময় অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির সমর্থনে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সরকারের প্রতি তাদের দাবি আরও স্পষ্টভাবে পৌঁছায়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেছেন, "তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। তবে, আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা অত্যন্ত দুঃখজনক। গত দুই দিন ধরে আমরা আন্দোলন চালিয়ে গেলেও, কোনও সাড়া মেলেনি। এর ফলে কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, এবং এখন আমরা এই পরিস্থিতি নিয়ে সড়ক অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি।"
অনতিবিলম্বে এই দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। আর না হলে আন্দোলন চলবে। একইসঙ্গে কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর সম্পর্কিত আমাদের সাত দফা দাবি যতক্ষণ পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিগুলো হচ্ছে —
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।
৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় ‘আইন’ এবং ‘জার্নালিজম’ বিষয় সংযোজন করতে হবে।
৫. একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এসময় তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :