ছাত্রদের ঐক্য বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “ছাত্রদের ঐক্যই এই দেশ গঠন করেছে। বাংলাদেশের মানুষ নানা বিষয়ে মতানৈক্য প্রকাশ করলেও একটি বিষয়ে সবাই একমত—নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে হবে।”
শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সম্মানে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। গন্তব্য একটাই—আমরা এটি করতে চাই এবং করব। এ জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদের প্রকাশ্য সমর্থন দিতে এসেছেন। আমরা শুধু নিজেদের জন্য বাংলাদেশ গড়তে চাই না, আমরা এটি বিশ্বের জন্যও গড়তে চাই, যাতে সবাই দেখতে পারে ভিন্ন উপায়ে কীভাবে উন্নয়ন সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “মানুষের জীবন দ্রুত বদলে যেতে পারে। আমরা ধীরগতির পরিবর্তনে আর বিশ্বাস করি না। আমাদের সামনে অগ্রসর হতে হবে এবং এজন্য আমরা জাতিসংঘের সমর্থন কামনা করি।”
বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “এদেশে অসাধারণ ঘটনা ঘটে গেছে। যারা বাংলাদেশে এসেছেন, তারা বিশ্বাস করতে পারেননি কীভাবে তরুণেরা রাজপথে নেমে এসে প্রতিবাদ করল। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের জন্যও একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমাদের তরুণদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না, ছিল কেবল স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। সেই আকাঙ্ক্ষাই নতুন বাংলাদেশের সূচনা ঘটিয়েছে।”
জাতিসংঘ মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনি আমাদের পাশে আছেন, এতে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। তবে আমাদের একটি বড় সমস্যা হলো ভুল তথ্যের প্রচার। কিছু মানুষ বাংলাদেশের অগ্রগতি সহ্য করতে পারে না এবং বিভ্রান্তি ছড়ায়। তাই আপনাদের সহায়তা প্রয়োজন, ভুল তথ্য মোকাবিলা করতে হবে। বাকিটা আমরা সামলে নেব।”
জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রশংসা করে ড. ইউনূস বলেন, “রোহিঙ্গাদের জন্য আপনি যা করেছেন, তা তাদের হৃদয়ে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। তারা আপনাকে ফেরেশতা মনে করছে এবং একটাই বার্তা দিচ্ছে—তারা তাদের দেশে ফিরে যেতে চায়। আগামী ঈদে তারা আপনাকে আমন্ত্রণ জানাতে চায় তাদের নিজ ভূমিতে।”
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গারা বোঝা নয়, তারা এই বিশ্বের সম্পদ। তারা ভিক্ষুক নয়, বরং নিজেরাই নিজেদের দেখভাল করতে চায়। তারা শুধু সহায়তা চায় যাতে নিজ দেশে ফিরে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।”
ড. ইউনূস বলেন, “আপনার এই সফর আমাদের জন্য আগাম ঈদের আনন্দ বয়ে এনেছে। বাংলাদেশের মানুষ আপনার বক্তব্য শুনতে চেয়েছিল, আপনার সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়ে তারা আনন্দিত। আশা করি, আপনি বারবার বাংলাদেশে আসবেন।”
একুশে সংবাদ// চ.ট//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :