নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনীর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
তিনি বলেন, আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেখানে এই আইনের সংশোধনীর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আজকে নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইন-২০০০-এর বেশকিছু সংশোধনী আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়। আমাদের কেবিনেট সেটা নীতিগত অনুমোদন দেয়। ইতোমধ্যে আমরা কিছু মতামত পেয়েছি। সেই মতামতগুলো কাল-পরশু যাচাই-বাছাই করব। বৃহস্পতিবার এই আইনটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, ধর্ষণের বিচারের বিলম্ব হওয়ার কারণ হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিএনএ ল্যাব না থাকা। এই মুহূর্তে একটি মাত্র ল্যাব আছে। আজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরও দুটি ডিএনএ ল্যাব স্থাপন করব।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে দ্রুত কিছু সংখ্যক বিচারক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে, যেন ধর্ষণসহ অন্যান্য মামলার বিচার ত্বরান্বিত করা যায়।
এ সময় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সংশোধনীর খসড়ায় শিশু ধর্ষণ মামলা আলাদাভাবে বিচার করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিধান রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে সবাই নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে-সম্মতি নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে ধর্ষণ একটা আলাদা অপরাধ। সম্মতি ব্যতীত যে ধর্ষণ সেটার বিচার ও তদন্তের সময় কমানো হয়েছে। যেকোনো ধর্ষণ হলে আমরা এই আইনের আওতায় আনছি। ডিএনএ রিপোর্টের জন্য অনেক মামলা বছরের পর বছর পড়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, আমরা এই আইনে বিধান করছি, ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই আদালত যদি মনে করে, মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিচার সম্ভব, তাহলে ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই আদালত বিচার করবে। ধর্ষণের উদ্দেশ্যে যদি গুরুতর আহত করা হয় সেটারও গুরুতর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিজ্ঞপ্তি
এদিকে সোমবার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন করা হয়েছে। অংশীজন থেকে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিমার্জন (যদি থাকে) করে নীতিগতভাবে অনুমোদিত খসড়া অধ্যাদেশটি উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত অপরাধ নির্ণয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আপাতত চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে দু’টি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :