এবার ঈদুল ফিতরের আগে গাজীপুরের অন্তত ২৭টি কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ঈদযাত্রার সময় সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
শিল্প পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুরে ঈদের আগে ৯২ ভাগ কারখানায় বেতন পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঈদ বোনাস প্রদান করা হয়েছে ৫৮ ভাগ কারখানায়। এখনও বেতন পরিশোধ করতে পারেনি ২৭টি কারখানা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতারা বলছেন, আগামী দুদিনের ভেতর বেশির ভাগ কারখানায় শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করা হবে।
শিল্প পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বকেয়া পাওনাসহ নানা দাবিতে এরইমধ্যে শিল্প-অধ্যুষিত গাজীপুরে প্রায় প্রতিদিন জেলার কোথাও না কোথাও আন্দোলন, সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। গত ৫ আগস্টের পর গাজীপুরে অন্তত ৯৫ বার মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকেরা। পবিত্র রমজান মাসে এ আন্দোলন আরও বেগবান হয়।
শ্রমিক আন্দোলন ও কথায় কথায় মহাসড়ক অবরোধের কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন মহাসড়ক ব্যবহারকারী যাত্রী ও চালকেরা।
এ ব্যাপারে রাজিব পরিবহনের চালক বুলবুল বলেন, ‘মানুষের ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে কিন্তু কারখানা শ্রমিকদের আন্দোলন, সড়ক অবরোধ থামেনি। মহাসড়কে প্রায় শ্রমিকেরা অবরোধ করেন, এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থাকতে হয়। তাদের এই আন্দোলন চলতে থাকলে ঈদে মানুষের বাড়ি ফেরা কষ্ট হবে।’
দাবি আদায়ে মহাসড়ক অবরোধের কারণ জানতে চাইলে এক কারখানার শ্রমিক ইলিয়াস আলী বলেন, ‘সড়কে না নামলে কেউ আমাদের কথা শুনে না। আমরা পেটের দায়ে কাজ করি, বেতন না পাইলে ঈদ কেমনে করমু, বাড়িতে মা-বাবা আছে তাদেরই কী পাঠামু।’
এ ব্যাপারে বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআইয়ের সদস্য এবং ডিবিসি নিউজের পরিচালক মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে বেশির ভাগ কারখানায় মালিকপক্ষ বেতন-ভাতা পরিশোধ করেছে। আগামী দুইদিন সময় আছে, আমি মনে করি, এ সময়ের মধ্যে পুরো বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে সক্ষম হবে কারখানার মালিকেরা।’
সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শ্রমিকদের কোনো সমস্যা থাকলে তারা বিজিএমইএতে যেতে পারেন, সেখানে সবার কথা বলার সুযোগ আছে। কিন্তু তা না করে যখন তখন মহাসড়ক বন্ধ করে আন্দোলন করায় মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পোশাকশিল্পকে ধ্বংস করতে নানা চক্রান্ত করা হচ্ছে। এ জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এর পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার পর্যন্ত গাজীপুরে ৯২ ভাগ প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছেন। আমরা চেষ্টা করছি সব কারখানায় যাতে ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারে।’
একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :