রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কাতার ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (OIC) সক্রিয় ভূমিকা চেয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের টেকসই ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন সম্ভব।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) কাতারের দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় ‘বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তুচ্যুত জনগণের সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ- রোহিঙ্গা ইস্যু’ বিষয়ে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “কাতার তাদের কূটনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং ওআইসি-কে কার্যকরভাবে সক্রিয় করতে পারে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই সংকটকে আবারো আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসা আমাদের যৌথ দায়িত্ব।”
এই আলোচনায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিউইয়র্কে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজন করবে বাংলাদেশ। কাতারসহ ওআইসি দেশগুলোর রাজনৈতিক ও আর্থিক অংশগ্রহণে এই উদ্যোগকে সফল করতে বাংলাদেশ সচেষ্ট।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এ গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলাটি এ বছরের মধ্যেই মূল শুনানিতে যাবে এবং সেখানে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দাবি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনজীবী প্রতিষ্ঠান ফোলি হোয়াগ।
ড. ইউনূস সতর্ক করে বলেন, “রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতি কেবল বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য নয়, পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি। ক্যাম্পগুলোতে অপরাধ, চোরাচালান এবং অবৈধ অভিবাসন ক্রমশ বাড়ছে, যা এই জনগোষ্ঠীর হতাশার প্রতিফলন।”
তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেন, “আসুন, এই আলোচনাকে আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি কার্যকর অংশীদারিত্বের সূচনা করি যা রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে সহায়ক হয়।”
বর্তমানে ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলো মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের জন্য ২৭ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে—৭ লাখ ডলার।
একুশে সংবাদ//ঢ.প//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :