সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে দেশে ফিরছেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমানও।
ঢাকা-লন্ডনের নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে।
কাতার থেকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাকে দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বুধবার (৩০ এপ্রিল) এর মধ্যেই খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন। শাশুড়ির সঙ্গে দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমানও ফিরছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে গত সপ্তাহে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে বলা হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে স্থিতিশীল হলেও পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত নন। তবে তিনি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। পরবর্তীতে কভিড-১৯ মহামারির সময় বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি পান। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের আদেশে তিনি সম্পূর্ণ মুক্তি লাভ করেন। সেইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে থাকা দুটি দুর্নীতির মামলার রায়ও বাতিল হয়।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হয়। ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি তাকে তারেক রহমানের বাসায় নেওয়া হয়। দীর্ঘ ছয় বছর পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এবারের ঈদ উদ্যাপন করেন তিনি।
বর্তমানে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। তার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা এখনো চলছে।
প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডন সফর করেছিলেন। এরপর আর কোনো বিদেশ সফরে যাননি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :