AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শেখ রাসেল: দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস


Ekushey Sangbad
মিতা পোদ্দার
০৭:৩৯ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
শেখ রাসেল: দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস

 

১৯৬৪ সাল। সময়টা ছিল লড়াই আর সংগ্রামের উত্তেজনামুখর। দেশ যখন পরাধীনতার  শৃঙ্খলে আবদ্ধ, বাংলার মানুষ যখন স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা যিনি বাঙালিদের স্বাধীনতা স্বপ্ন দেখিয়েছেন- সেই মহান নেতার ঘর আলো করে জন্ম নেয় এক ছোট্ট দেব শিশু।

যে জন্ম নিয়েই গোলাপের মতো সৌরভ ছড়াতো, সূর্যের মতো দীপ্তমান ছিল সেই প্রিয় মুখ আমাদের মিষ্টি রাসেল সোনা। 

১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়িতে শেখ রাসেলের জন্ম। জন্মের সময় বাবার কাছে না থাকলেও ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট পিতা পুত্রের চিরপ্রস্তান ঘটেছিল।

ব্রিটিশ দার্শনিক সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত ব্রার্টান্ড রাসেল এর নাম অনুসারে বঙ্গবন্ধু ছেলের নামকরণ করেন।

এই নামকে ঘিরে নিশ্চয়ই মহৎ কোন স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা ছিল। বঙ্গবন্ধুর সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল যেন পরিবারের পূর্ণিমার চাঁদ।  কত আশা ছিল তার ছেলে বড় হয়ে জগৎখ্যাত হয়ে উঠবে একদিন। কত সাধনাই মানুষের অপূর্ণ থেকে যায়। 

পরিবারের সবার নয়নের মনি ছিল ছোট্ট রাসেল। রাসেলের জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে বাবা মুজিবকে ছাড়া। বাবা মুজিব রাজনৈতিক বন্দী হয়ে কারাগারে ছিলেন দিনের পর দিন। ছোট রাসেল বাবাকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে উঠতো। কখনো কখনো কারাগার থেকে ফিরে আসতে চাইত না।কারাগারে রোজনামচায় ১৯৬৬ সালে ১৫ জুনের দিনলিপিতে রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন আঠারো মাসের রাসেল জেল অফিসে এসে একটু হাসে না, যে পর্যন্ত বাবার দেখা না পায়।

দূর থেকেও আব্বা আব্বা বলে চিৎকার করে। কারাগার যেন অবাক দৃষ্টিতে সেই অবুঝ শিশুটিকে বাবার আদর থেকে বিতাড়িত করে। গরিবদের জন্য শিশুটির ছিল দরদ, মমতা। জাতির পিতার গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়াতে যখন সে যেত তখন গ্রামের ছেলেদের জন্য সে জামা নিয়ে যেত। তাদের উপহার দিত। কখনো গরিব বন্ধুদের নিয়ে সারা পাড়া বেড়াতো। কখনো বা মাছ ধরত, আবার দেখা যেত সাইকেলে চড়ে বন্ধুদের সঙ্গে মজা করতো।

আজ শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে দেশ হয়তো একজন মানব দরদী মানুষ পেত। ছোট থেকেই বাবাকে কারাগারে দেখতে দেখতে বড় হওয়া রাসেল নিজের অজান্তেই চাপা স্বভাবের হয়ে পড়ে।  হাসুপা মানে শেখ রাসেলের  বড় বোন - বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর এই ছোট্ট ভাইটির সব সময় খেয়াল রাখতো।  বঙ্গবন্ধু তার এক বক্তব‍্যে বলেন, রাসেল ছিল চাপা স্বভাবের।আনমনে  কাঁদতো।যখন কেউ জানতে চাইত চোখে পানি কেন? রাসেল বলত চোখে যেন কি পড়েছে? এত ছোট্ট রাসেল নিজের মনের ব্যথা কখনো কাউকে বুঝতে দেয়নি। 

বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য যখন উত্তাল সময় পার করছিলেন বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যরা  ঠিক সেই সময় বাড়িতে থাকা পোষা পায়রার দলের সঙ্গে ভাব জমে উঠে রাসেল এর। এই  কারণে কখনো সে কবুতরের মাংস খেতে চাইত না।
এক শিশু মনের মধ্যে প্রস্ফুটিত হতে শুরু করেছিল কী নিদারুন প্রেম, অশেষ ও ঔদার্য‍্য। 

অথচ রাসেল নামের এই শান্তিপ্রিয় মানবিক ফুলটিকে আর ফুটতে দেওয়া হলো না।১৯৭৫  সালের ১৫ই আগস্ট শ্রাবণের রাতে একদল বর্বর ঘাতক পৈশাচিকভাবে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে।

ছোট্ট রাসেল মুহূর্তেই মায়ের কাছে যেতে চায়। নিষ্ঠুর ঘাতকেরা যেতে দেয়নি রাসেলকে তার মায়ের আঁচলে ফিরতে।  বরং ঠান্ডা মাথায় এই অবুঝ শিশুটাকে গুলি করা হত্যা করে। 


ষড়ঋতুর প্রাত‍্যাহিক আকাশজুড়ে আমাদের হৃদয়ের দিকচক্রবালে, যেসব পায়রার ঝাঁক উড়ে চলে; প্রতিটি ঊষা কিংবা গোধূলির দিকে তাকিয়ে নীড়ে ফেরা পাখির মত ছোট্ট রাসেলও  ফিরে ফিরে আসে বাঙালির মনে ও মননে।

একুশে সংবাদ.কম/জা.হা 

Link copied!