AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশের জন্য গর্ব


Ekushey Sangbad
আবুল বাশার রিপন খলিফা
০৮:১১ পিএম, ৬ জানুয়ারি, ২০২৩
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশের জন্য গর্ব

করোনা মহামারির কারণে দু-বছর বন্ধ থাকার পর এবারও আগামী জানুয়ারিতে তাবলিগ জামাতের দু’গ্রুপের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। ইজতেমা আগামী ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০২৩। প্রতি বছরই বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। আর এ ইজতেমায় বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশ থেকে দাওয়াত ও তাবলিগে নিয়োজিতরা উপস্থিত হন। ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী বিদেশিদের জন্য রয়েছে সার্বিক নিরাপত্তা ও সুন্দর ব্যবস্থাপনা। ইজতেমা উপলক্ষে কিংবা দাওয়াত ও তাবলিগের উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে যে কোনো মেহমান আসলেই বিমানবন্দর থেকে তাদেরকে কাকরাইল মসজিদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। আর বিশ্ব ইজতেমার সময় ময়দানের উত্তর পাশে তাদের জন্য রয়েছে আলাদা মেহমানখানার ব্যবস্থা। নিরাপত্তার স্বার্থে বিদেশি মেহমানখানা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলে সাধারণ কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারে না।

 

আজ থেকে প্রায় ৬ দশক আগে ১৯১০ সালে ভারতরে এক জনবরিল অঞ্চল মেওয়া  থেকে হাতে গোনা ক’জন মানুষ নিয়ে হযরত মাওলানা ইলিয়াছ কান্ধলভী রহ. তাবলীগের দাওয়াতের মেহনত শুরু করেন তাবলীগের এ মেহনত এখন সারাবিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। হজরত ইলিয়াছ  রহ. ১৩৫১ হজিরি সালে হজ্ব থেকে ফিরে এসে  সাধারণ মুসলমানদের দুনিয়া ও সংসারের ঝামেলা থেকে মুক্ত করে ছোট ছোট দলবন্ধ করে মসজিদের ধর্মীয় পরিবেশে অল্প সময়ের জন্য দ্বীনি শিক্ষা দিতে থাকেন। এরই মাঝে একবার তিনি মহানবী সা. কে স্বপ্নে দেখেন এবং তিনি তাকে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজরে জন্য নির্দেশ দেন। মহানবীর সা. নিদের্শ মোতাবেক তিনি দাওয়াত ও তাবলীগের কাজের সূচনা করেন। এরপর এ কাজকে আরও বেগবান ও গতিশীল করার জন্য এ উপমহাদেশের র্সবস্তরের আলমে-ওলামা, পীর-মাশায়েখ ও বুর্জগদের কাছে দোয়া র্প্রাথনা করা হয় এবং দিল্লির কাছে  মেওয়াতে র্সবস্তরের মুসলমানদের জন্য ইজতেমা বা সম্মেলনের ব্যবস্থা করা হয়।এরপরই ক্রমেই তাবলীগের কার্যক্রম বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের গণ্ডি ছাড়িয়ে পেৌছে যায় বিশ্বের সর্বত্র।  

 

হযরত মাওলানা আবদুল আজিজ রহ. এর মাধ্যমে ১৯৪৪ সালে বাংলাদেশে তাবলীগ শুরু হয়। তারপর ১৯৪৬ সালে বিশ্ব ইজতেমা র্সবপ্রথম অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের তাবলীগের মারকাজ কাকরাইল মসজিদে। পরে ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রাম হাজী ক্যাম্পে ইজতেমা শুরু হয়। এরপর ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে। তারপর ১৯৬৫ সালে টঙ্গীর পাগারে এবং র্সবশষে ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর ভবের পাড়া তুরাগ তীরে অনুষ্ঠতি হয়। বিশ্ব ইজতেমা সেই থেকে এ পর্যন্ত সেখানেই ১৬০ একর জায়গায় তাবলীগের সর্ববৃহত ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে ইজতেমা।‘তাবলীগ’ অর্থ প্রচার বা পৌঁছে দেওয়া। আর ‘ইজতেমা’ অর্থ জমায়েত বা সমাবেশ। ‘তাবলীগী ইজতেমা’ অর্থ দাওয়াতী সমাবেশ। দ্বীনের প্রচার ও প্রসারের লক্ষে যে সমাবেশের আয়োজন করা হয় তাকেই তাবলীগী ইজতেমা বলে।

 

তবলিগ ও ইজতেমার উদ্দেশ্য
দুনিয়ার বুকে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য যুগে যুগে প্রেরিত নবী-রাসূলগণ ইসলামের বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত সব নবীই দাওয়াতের কাজ করেছেন। কোরআনে কারিমের অনেক জায়গায় দাওয়াতের কথা বলা হয়েছে। কোথাও সরাসরি নির্দেশ আকারেও বলা হয়েছে। সূরা ইউসুফের ১০৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, (হে মুহাম্মদ!) বলে দিন, এই আমার পথ। আমি আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেই বুঝে-সুঝে এবং আমার অনুসারীরা, আল্লাহ পবিত্র, আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই।‍‍` দাওয়াতি কাজের ফজিলত সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‍‍`যে ব্যক্তি হেদায়েতের আহ্বান জানাবে, সেও পাবে হেদায়েত অনুসরণকারীর সমান সওয়াব। এ দু‍‍`জনের কারও সওয়াবে কোনো কমতি হবে না।‍‍`

 

হজরত মুহাম্মদ (সা.) শেষ নবী। তারপর আর কোনো নবী আসবে না। কিন্তু নবীর কাজ চলতে থাকবে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজের ভাষণে এই কাজের দায়িত্ব উম্মতের ওপর ন্যস্ত করে গেছেন। তিনি বলেছেন, ‍‍`যারা এখানে উপস্থিত আছো তারা, যারা উপস্থিত নেই তাদের কাছে আমার কথা পৌঁছে দাও।‍‍` অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‍‍`আলেমরা হলেন নবীর ওয়ারিস।‍‍` তারা নবীর সব কাজের উত্তরাধিকারী। তাই নবীর (সা.) অবর্তমানে নবীর উত্তরাধিকার হিসেবে দাওয়াতি কাজ পরিচালনার দায়িত্ব হলো আলেমদের, তারাই নবীর রেখে যাওয়া দাওয়াতি কাজের জিম্মাদার। ইসলামের অস্তিত্ব নির্ভর করে এই দাওয়াতি কাজের ওপর। যতদিন দ্বীনের দাওয়াত থাকবে ততদিন দ্বীন থাকবে। আর এই চেতনাকে ধারণ করে হজরত ইলিয়াস (রহ.) দাওয়াতে তবলিগের বর্তমান পদ্ধতি চালু করেন। এই পদ্ধতির দাওয়াত দ্বারা সবচেয়ে বড় যে উপকারটি হচ্ছে তাহলো, এর দ্বারা সব শ্রেণী, পেশা ও বয়সের মানুষ দ্বীন শিখতে পারছে। ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হচ্ছে।


আন্তর্জাতিক প্রচারণা ১৯৪৬ সালে হেজাজে (পশ্চিম সৌদি আরব) এবং ব্রিটেনে সংগঠনটির প্রথম বিদেশী প্রচারণা সফর পাঠানো হয়।এরপর যুক্তরাষ্ট্রে এবং ১৯৭০ ও ১৯৮০র মধ্যবর্তী সময়ে ইউরোপ মহাদেশেও তাবলীগ জামাত একটি বৃহত্তর অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৬০-এর দশকে এটি ফ্রান্সে কাজ শুরু করে, এবং ১৯৭০ থেকে পরবর্তী দুই দশকে এটি লক্ষনীয়ভাবে প্রসারিত হতে থাকে।

 

ইউরোপে, তাবলীগ জামাত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দিকে মনোনিবেশ করে - অর্থাৎ যারা "ইউরোপীয় সংষ্কৃতিতে প্রবেশাধিকার হতে বঞ্চিত প্রবাসী কর্মী, ‍‍`হতাশ ও আত্মহারা‍‍` কিশোর-কিশোরী এবং মাদকাসক্ত"। ১৯৭০ থেকে ১৯৮০-এর মাঝামাঝি সময়ে, সংগঠনটি জনপ্রিয়তা ও সংখ্যার দিক থেকে শীর্ষে পৌছায়, এবং এরপরই এ অবস্থার অবনতি ঘটে (ফ্রান্সে এই অবনতি শুরু হয় আনুমানিক ১৯৮৯ সালে) কারণ ইউরোপে শিক্ষিত মুসলিম পরিবারের তরুণ যুবকেরা "তাদের ধর্মের আরও অধিক বুদ্ধিবৃত্তিক কাঠামো" অনুসন্ধান শুরু করে, ২১ শতকের প্রথম অর্ধ-দশকে তাবলীগ জামাত ফ্রান্সে একটি বৃহত্তর পুনর্জীবন লাভ করে, যার ফলে ২০২০ সালে এর অনুসারীর সংখ্যা ৩০০,০০০-এ পৌছায়।  

 

তবে, ইউরোপে সংগঠনটির বর্তমান দৃষ্টি হল যুক্তরাজ্যের দিকে, যার প্রধান কারণ হল ১৯৬০-এর দশক হতে দক্ষিণ এশিয়ার একটি বিশাল জনগোষ্ঠী এখানে অভিবাসিত হতে শুরু করেছে।১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর, আন্দোলনটি মধ্য এশিয়ায় তাদের প্রচারে মনোনিবেশ করে। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, কিরগিজস্তানে তাবলীগ জামাতের সদস্য ছিল আনুমানিক ৪০,০০০, যাদের অধিকাংশ সদস্যই সংগঠনের বাংলাদেশী ও পাকিস্তানি সদস্যদের কাছ থেকে প্রারম্ভিক অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।পিউ রিসার্চ সেন্টারের অনুমান অনুসারে, ২০০ টিরও অধিক দেশজুড়ে তাবলীগ জামাতের ৩০ কোটি অনুসারী রয়েছে। তাবলীগ জামাতের অধিকাংশ অনুসারী দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করে।তাবলীগ জামাতের আনুমানিক প্রায় ১৫০,০০০ সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় রয়েছে।

 

দাওয়াত ও তাবলীগের গুরুত্ব

দাওয়াত ও তাবলীগের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ বলেন, وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ- وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ- ‘ঐ ব্যক্তির চাইতে কথায় উত্তম আর কে আছে, যে (মানুষকে) আল্লাহর দিকে ডাকে ও নিজে সৎকর্ম করে এবং বলে যে, নিশ্চয়ই আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ভাল ও মন্দ কখনো সমান হ’তে পারে না। তুমি উত্তম দ্বারা (অনুত্তমকে) প্রতিহত কর। ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে যেন (তোমার) অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে যায়’ (ফুছ্ছিলাত ৪১/৩৩-৩৪)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لَغَدْوَةٌ فِى سَبِيلِ اللهِ أَوْ رَوْحَةٌ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا  ‘আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল অথবা সন্ধ্যা ব্যয় করা দুনিয়া ও এর মধ্যস্থিত সবকিছু থেকে উত্তম’। তাছাড়া দাওয়াত দানকারী দাওয়াত কবুলকারীর সমপরিমাণ নেকীর হকদার হবেন।

 

তাবলীগ করতে হবে জেনে-বুঝে, মূর্খতার সাথে নয়

তাবলীগ বা প্রচার হবে একমাত্র এলাহী বিধানের। অর্থাৎ পবিত্র কুরআন ও  হাদীছের । এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন,يَاأَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ  ‘হে রাসূল! তোমার প্রতি তোমার প্রভুর পক্ষ হ’তে যা নাযিল হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন), তা মানুষের কাছে পৌঁছে দাও। যদি না দাও, তাহ’লে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছে দিলে না। আল্লাহ তোমাকে শত্রুদের হামলা থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (মায়েদা ৫/৬৭)। দাওয়াত ও তাবলীগের ক্ষেত্রে রাসূল (ছাঃ)-এর আপোষহীন বক্তব্য উদ্ধৃত হয়েছে সূরা ইউসুফের নিম্নোক্ত আয়াতে।  আল্লাহ বলেন,قُلْ هَذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللهِ عَلَى بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحَانَ اللهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ ‘তুমি বল এটাই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র। আর আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (ইউসুফ ১২/১০৮)। সুতরাং দাওয়াত হ’তে হবে খালেছ অন্তরে মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে পবিত্র কুরআন ও  হাদীছের  আলোকে। আর হবে সম্পূর্ণরূপে শিরক ও বিদ‘আত মুক্ত। তাবলীগ করতে হবে জেনে-বুঝে, মূর্খতার সাথে নয়। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ এই দু’টিই হবে দাওয়াতের উৎস। এর বাইরে কোন ভ্রান্ত কিচ্ছা-কাহিনী, পীর-মুরীদির উদ্ভট গল্প ও তথাকথিত ছূফীবাদের আক্বীদা বিধ্বংসী কোন প্রকার ভ্রান্ত তন্ত্র-মন্ত্রের দাওয়াত দেওয়া যাবে না। কেননা এ দু’টি উৎসই কেবল পথভ্রষ্টতা থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করতে পারে। বিদায় হজ্জের ঐতিহাসিক ভাষণে বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী (ছাঃ) বলেন,تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا َمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ-  ‘তোমাদের মধ্যে আমি দু’টি জিনিস ছেড়ে যাচ্ছি, যতক্ষণ এ দু’টিকে আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হচ্ছে আল্লাহর কিতাব কুরআন ও অপরটি তাঁর নবীর সুন্নাত তথা হাদীছ’।

 

প্রচলিত ইজতেমা ও সভা-সমাবেশের সাথে তাবলীগী ইজতেমার পার্থক্য  

অসংখ্য ইসলামী দলের দেশ বাংলাদেশ। প্রত্যেক দলেরই বিভিন্ন নামে বার্ষিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। ওয়ায মাহফিল, ইসলামী জালসা, ইসলামী সম্মেলন, মহা সম্মেলন, ইসলামী সভা, ইসলামী সমাবেশ, বার্ষিক কনফারেন্স, ইজতেমা, বিশ্ব ইজতেমা, বার্ষিক ওরস ও দোয়ার মাহফিল, সীরাত সম্মেলন, আশেকে রাসূল সম্মেলন ইত্যাদি। প্রত্যেক দলই তাদের দলীয় নীতি-আদর্শ প্রচারের জন্য এই আয়োজন করে থাকে। প্রচলিত এসব সভা-সমাবেশের সাথে ‘ইসলামী দলের আন্দোলনে’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘তাবলীগী ইজতমা’র রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। নিম্নে উল্লেখযোগ্য কিছু পার্থক্য তুলে ধরা হ’ল।-

১. নিজেকে দ্বীনের একজন নিঃস্বার্থ দাঈ মনে করা এবং শ্রোতাদেরকে আখেরাতমুখী করা। ২. কাউকে কটাক্ষ না করা বা মনে আঘাত না দেওয়া এবং কোনক্রমেই কোন দলের নাম উল্লেখ করে তাদের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন কথা না বলা। 
৩. ভাষা গাম্ভীর্যপূর্ণ ও মাধুর্যমন্ডিত এবং বক্তব্য সারগর্ভ হওয়া। 
৪. বক্তৃতার সারমর্ম হবে সবদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি-র বিধান পবিত্র কুরআন ও  হাদীছের  দিকে ফিরে যাওয়া। 
৫. নির্ভরযোগ্য কিতাব ও সূত্র সমূহ হ’তে বিশুদ্ধ উদ্ধৃতি পেশ করা এবং কোন অবস্থায় যঈফ ও মওযূ হাদীছ না বলা বা অর্থহীন ও হাস্যকর গল্প না করা। 
৬. কুরআন তেলাওয়াত ও হাদীছ পাঠ ছহীহ-শুদ্ধ হওয়া। 
৭. বক্তৃতার মধ্যে কোন সঙ্গীত না বলা।

 

গাম্ভীর্যপূর্ণ ও দলীলভিত্তিক আলোচনা

তাবলীগী ইজতেমার আলোচকদের ভাষা হয় গাম্ভীর্যপূর্ণ, বক্তব্য হয় দলীল ভিত্তিক। হাদীছ বলার ক্ষেত্রে তারা হাদীছের শুদ্ধাশুদ্ধির প্রতি খেয়াল রাখেন। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, وَمَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপরে মিথ্যারোপ করে, সে যেন তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়’। আলোচকগণ কুরআনের আয়াত ও হাদীছ নম্বর উল্লেখ করে থাকেন। নির্ধারিত বিষয়ের উপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। যা শ্রোতাদের জন্য হয় ফলদায়ক ।

 

বানাওয়াট কিচ্ছা-কাহিনী বলে সময় নষ্ট না করা 


আমার কোন এক ভাইয়ের কাছ থেকে শুনা ,কয়েক বছর আগের কথা। তিনি কোনো এক জায়গায় সফরে যাচ্ছিলেন। বাসে চেপে বসতেই সুপারভাইজার বাসের এলসিডি মনিটরে একটি বক্তব্য চালু করে দিল। বেশ নামকরা বক্তা। ‘ত’ আদ্যাক্ষরের ঐ বক্তাকে নিজ যেলার সাথে সম্পৃক্ত করে ডাকা হয়। শুনেছি একদিনের বক্তব্যের জন্য ৫০/৬০ হাযার টাকা গুনতে হয় আয়োজকদের। কণ্ঠও সুমধুর। রামাযান বিবেচনায় সুপারভাইজার হয়ত গান না দিয়ে ওয়ায লাগিয়েছে। সেকারণ বন্ধ করতে না বলে বরং শুনতে লাগলাম। বক্তব্যের বিষয় হচ্ছে ‘কবরের আযাব’। শ্রোতাদের হাসিয়ে-কাঁদিয়ে বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। কুরআন-হাদীছের কোন উল্লেখ নেই। উদ্ভট সব কিচ্ছা-কাহিনী ও পীর-মুরীদির ফায়েয বিবৃত হচ্ছে লাগামহীনভাবে। এক পর্যায়ে তিনি কবরের সওয়াল-জওয়াবের একটি ঘটনা তুলে ধরলেন। অবাক বিস্ময়ে শুনতে লাগলাম। জনৈক পীরের মুরীদদের মর্যাদা ও ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে তিনি বললেন, ‘ঐ পীরের একজন ভক্ত মুরীদ মৃত্যুবরণ করলে তাকে কবরস্থ করা হ’ল। দাফন কার্য শেষ করে সকলে ফিরে আসার পর মুনকার-নাকীর প্রশ্ন করার জন্য উপস্থিত হয়েছেন। অতঃপর প্রশ্ন করতেই কিছু বুঝে উঠার আগেই তিনি মুনকার-নাকীরকে দুই থাপ্পড় লাগিয়ে দিলেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় মুনকার-নাকীর আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করলেন, হে আল্লাহ! তুমি তোমার কোন বান্দার নিকটে আমাদেরকে পাঠিয়েছ যে, প্রশ্ন করতেই আমাদের উপর আক্রমণ করে বসল। আল্লাহ তখন জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি কোন বেআদবী করেছিলে? তারা বলল, জি না। আল্লাহ বললেন, তোমরা কি তাকে সালাম দিয়েছিলে? তারা বলল, না। আল্লাহ বললেন, সে আমার খাছ বান্দা। তাকে সালাম না দিয়ে তোমরা চরম বেআদবী করেছ। থাপ্পড় মেরেছ তো ঠিকই করেছে। দ্রুত সালাম দিয়ে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নাও।’ প্রিয় পাঠক! আপনারাই মন্তব্য করুন। দুর্ভাগ্য, প্রায় দেড় ঘণ্টার বক্তব্যে কোথাও তাকে কবরের আযাব সম্পর্কিত একটি কুরআনের আয়াত বা একটি হাদীছ পাঠ করতে শুনলাম না। এই হচ্ছে এদেশের তথাকথিত খ্যাতিমান বক্তাদের বক্তব্যের হালচিত্র।
কিন্তু তাবলীগী ইজতেমা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। এখানে কোন আলোচকই বানাওয়াট কিচ্ছা-কাহিনী তো দূরের কথা হাদীছ বলার ক্ষেত্রে জাল বা যঈফ হাদীছ বলারও দুঃসাহস দেখান না। তাছাড়া বিষয়ের উপরে কুরআন-হাদীছের আলোচনা করেই তো শেষ করা যায় না, অতিরিক্ত কথা বলার সময় কোথায়?

 

আখেরী মুনাজাত নয়; মজলিস শেষের দো‘আ 
প্রচলিত বিশ্ব ইজতেমার মূল আকর্ষণ হচ্ছে ‘আখেরী মুনাজাত’। যে মুনাজাতের জন্য সেদিন রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমও শিথিল থাকে। এমনকি ২০১৯ এসএসসি/দাখিল পরীক্ষা পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। অনেক বেসরকারী/আধা সরকারী প্রতিষ্ঠানও ছুটি ঘোষণা করে। অবিশ্বাস্য গেদারিং হয় ইজতেমাস্থল ও পাশ্ববর্তী এলাকা সমূহে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকেই সেখানে গমন করেন এই মুনাজাতে শরীক হওয়ার জন্য। ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করার ফলে অনেকে স্ব-স্ব বাসা/প্রতিষ্ঠান বা অফিস থেকেও মুনাজাতে অংশ নিচ্ছেন।

 

সমাজ সংশোধনে তাবলীগী ইজতেমা 
মানব রচিত কোন থিওরী প্রচার ও প্রসারের জন্যও এই আয়োজন নয়। এ ইজতেমার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন এই সমাজকে অহি-র বিধানের আলোকে সংশোধন করা। দিকভ্রান্ত মানবতাকে সঠিক পথের দিশা দেওয়া এবং এর মাধ্যমে নিজেদের মুক্তির পথকে সুগম করা। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,بَدَأَ الإِسْلاَمُ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ كَمَا بَدَأَ فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ، قِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَنِ الْغُرَبَاءُ قَالَ: الَّذِيْنَ يُصْلِحُوْنَ مَا أَفْسَدَ النَّاسُ- ‘ইসলাম নিঃসঙ্গভাবে যাত্রা শুরু করেছিল। সত্বর সেই অবস্থায় ফিরে যাবে। অতএব সুসংবাদ হ’ল সেই অল্পসংখ্যক লোকদের জন্য। জিজ্ঞেস করা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! ‘গুরাবা’ বা স্বল্পসংখ্যক কারা? তিনি বলেন, আমার পরে যারা লোকেরা (ইসলামের) যে বিষয়গুলি ধ্বংস করে, সেগুলিকে পুনঃ সংস্কার করে’ মূলতঃ এই সংস্কারের লক্ষ্যেই প্রতি বছরের এই বিশাল আয়োজন। শিরক-বিদ‘আত ও কুসংস্কারের অতল গহবরে নিমজ্জিত ঘুণেধরা এই সমাজকে আল্লাহপ্রেরিত অভ্রান্ত সত্যের উৎস পবিত্র কুরআন ও  হাদীছের  স্বচ্ছ সলিলে অবগাহন করানোর মাধ্যমে সমাজ সংশোধনই এই ইজতেমার মূল প্রতিপাদ্য। তাই সমাজ সংশোধনে এই ইজতেমার গুরুত্ব অপরিসীম।

 

শিরকমুক্ত ছহীহ আক্বীদা গঠনে  

‘শিরক’ শব্দের অর্থ শরীক করা। পারিভাষিক অর্থে আল্লাহর সত্তা অথবা গুণাবলীর সাথে অন্যকে শরীক করা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, أَنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدّاً وَهُوَ خَلَقَكَ ‘আল্লাহর জন্য অংশীদার সাব্যস্ত করা, অথচ তিনি (আল্লাহ) তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’। শিরক এমন এক জঘন্য পাপ, যা আল্লাহ ক্ষমা করেন না (নিসা ৪/৪৮)। শিরক বান্দার পূর্বের আমল সমূহও বিনষ্ট করে দেয় (আন‘আম ৬/৮৮; যুমার ৩৯/৬৫)। শিরকের পরিণতি জাহান্নাম (মায়েদা ৫/৭২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ لَقِىَ اللهَ لاَيُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ لَقِيَهُ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে মৃত্যুবরণ করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’। অথচ মুসলমানদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ শিরকী আক্বীদা বিষবাষ্পের ন্যায় ছড়িয়ে আছে। মুসলমানদের উন্নত ললাট আজ অবনমিত হচ্ছে কবরে-মাযারে-দরগাহে। গায়রুল্লাহর নামে পশু যবহ হচ্ছে নিত্য। নযর-নিয়ায ও মানতের ক্ষেত্রেও চলছে একই অবস্থা। গাছের প্রথম ফল বা ফসলের প্রথম অংশ চলে যাচ্ছে মাযারে বা বাবার দরবারে। এমনকি বিবাহ-শাদী, ছেলে-মেয়ের পরীক্ষায় ভাল ফলাফল, রোগমুক্তি, সন্তানহীনের সন্তান সবই চাওয়া হচ্ছে গায়রুল্লাহর নিকটে। অথচ এসবকিছু দেওয়ার একচ্ছত্র অধিকারী হচ্ছেন আল্লাহ। তাবলীগী ইজতেমায় শিরকের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের উপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয় এবং প্রচলিত শিরক সমূহ উল্লেখপূর্বক শ্রোতাদেরকে সাবধান করা হয়। ফলে তারা শিরক সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা লাভ করে তা থেকে নিজ পরিবার ও সমাজকে বাঁচাতে পারে।

 

বিদ‘আতমুক্ত ছহীহ আমলের ক্ষেত্রে

‘বিদ‘আত’ অর্থ নতুন সৃষ্টি। ইবাদতের মধ্যে নেকীর উদ্দেশ্যে যা অতিরিক্ত করা হয়, যার কোন পূর্ব দৃষ্টান্ত নেই বা যা কোন ছহীহ দলীলের উপরে ভিত্তিশীল নয়, সেটিই বিদ‘আত। অন্য অর্থে সুন্নাতের বিপরীতটাই হ’ল বিদ‘আত। আমল কবুলের জন্য অবশ্যই আমলটি বিদ‘আত মুক্ত হ’তে হবে। কিন্তু বর্তমান সমাজে বিদ‘আতকে বিদ‘আত মনে করা হয় না। বরং সুন্নাত মনে করে করা হয়। এমনকি বিদ‘আতকে এক অভিনব কায়দায় ‘হাসানাহ’ ও ‘সাইয়্যেআহ’ এই দুই ভাগে ভাগ করে হাসানার চোরাগলি দিয়ে সবধরনের বিদ‘আতকে বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। অথচ রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সমস্ত বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা, আর সমস্ত ভ্রষ্টতার পরিণতিই জাহান্নাম’। মীলাদ-ক্বিয়াম, শবেবরাত, কুলখানী, চেহলাম ছাড়াও ইসলামের মৌলিক সকল ইবাদতের মধ্যেই মারাত্মকভাবে বিদ‘আতের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ভাল-র দোহাই দিয়ে দলীলের কোনরূপ তোয়াক্কা না করে একশ্রেণীর অসাধু আলেম-ওলামা এগুলি সমাজে চালু করেছে। প্রকারান্তরে এরা রাসূল (ছাঃ)-এর রেখে যাওয়া স্বচ্ছ দ্বীনকে নিজেদের খেয়াল-খুশী মত বিকৃত করেছে এবং হাশরের ময়দানের কঠিনতম সময়ে রাসূলের সুফারিশ ও হাওযে কাওছারের পানি পান থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنِّيْ فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ، مَنْ مَرَّ عَلَىَّ شَرِبَ، وَمَنْ شَرِبَ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا، لَيَرِدَنَّ عَلَىَّ أَقْوَامٌ أَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُوْنِيْ، ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُمْ فَأَقُوْلُ إِنَّهُمْ مِنِّيْ فَيُقَالُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِيْ مَا أَحْدَثُوْا بَعْدَكَ فَأَقُوْلُ سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ غَيَّرَ بَعْدِيْ- ‘আমি তোমাদের পূর্বে হাউযের (হাউযে কাউছার) নিকটে পৌঁছে যাব। যে আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে, সে হাউযের পানি পান করবে। আর যে একবার পান করবে সে কখনও পিপাসিত হবে না। নিঃসন্দেহে কিছু সম্প্রদায় আমার সামনে (হাউযে) উপস্থিত হবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব এবং তারাও আমাকে চিনতে পারবে। এরপর আমার ও তাদের মাঝে আড়াল করে দেওয়া হবে। আমি তখন বলব, এরাতো আমারই উম্মত। তখন বলা হবে, তুমি জান না তোমার (মৃত্যুর) পরে এরা কি সব নতুন নতুন কথা ও কাজ সৃষ্টি করেছিল। তখন আমি বলব, দূর হও দূর হও, যারা আমার পরে দ্বীনের ভিতর পরিবর্তন এনেছে’। প্রতি বছর তাবলীগী ইজতেমায় সুন্নাত ও বিদ‘আত সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়। বিদ‘আতের ক্ষতিকর দিক সমূহ তুলে ধরে সারগর্ভ বক্তব্য পেশ করা হয়। ফলে সাধরণ মানুষ পূর্বের যেকোন সময়ের তুলনায় এখন বিদ‘আতের ক্ষেত্রে বহুগুণ বেশী সচেতন।

 

মানুষ যেন দুনিয়ার লোভ – লালসা ত্যাগ করে

 

তাবলীগী ইজতেমার বক্তব্য এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের সর্বত্র প্রচারিত হয়। সেইসব বক্তব্য শ্রবণ করে প্রতিনিয়ত বিপুলসংখ্যক দেশী ও প্রবাসী দ্বীনদার ভাই তাদের লালিত ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমল পরিবর্তন করে বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলে ফিরে আসছেন। সেই সাথে তারা স্ব স্ব পরিবারে ও সমাজে এই দাওয়াত পৌছে দেন। ফলে এই বিশাল দাওয়াতী সমাবেশের মাধ্যমে এক নীরব বিপ্লব সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু বাঁধ সাধে স্থানীয় মাযহাবী ও পীরপন্থী একশ্রেণীর অন্ধ আলেম-ওলামা। তারা নানাভাবে তাদের উপর নির্যাতন করে। এমনকি পরিবারকর্তা বা সমাজপতিদের উস্কে দেয়। ফলে ছহীহ দ্বীন গ্রহণ করার কারণে একপর্যায়ে তাদেরকে পরিবার ও সমাজ থেকে বিতাড়িত হ’তে হয়। কিন্তু এর পরও তারা একচুল পরিমাণও ছহীহ আমল থেকে বিচ্যুত হন না। কেননা তারা দুনিয়ার উপর আখেরাতকে প্রাধান্য দেন। যেকোন মূল্যে কুসংস্কারমুক্ত বিশুদ্ধ পরিবার ও সমাজ গঠনে তারা বদ্ধপরিকর।প্রতি বছর বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। সারা বিশ্বের সকল স্থানের ইজতেমার আসল উদ্দেশ্য হলো যেন বেশি বেশি জামাআত আল্লাহর রাস্তায় বের হয়। বিশ্বের সকল মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করার জন্য আল্লাহর দেওয়া জান,মাল,সময় নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া।

 

সারা বিশ্বের থেকে এক দল লোক মেহনত করতে করতে ময়দানে আসবে, আরেক দল লোক ময়দান থেকে জামাআতবদ্ধ হয়ে আবার সারা বিশ্বে আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসুল (সাঃ) এর সুন্নাত প্রচার-প্রসারের জন্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। যেন মানুষ নিজে ঈমান ,আমল শেখার পাশাপাশি মুসলিম-অমুসলিম সবাইকে এক আল্লাহর দিকে আহবান করার জন্য আজীবন এই মেহনতের সহিত লেগে থাকতে পারেন। মানুষের মাঝে যেন পরিপূর্ণ দ্বীন এসে যায়, সেই জন্যই দাওয়াত ও তাবলিগের এই মেহনত।প্রতিটি মানুষ যেন দুনিয়ার লোভ – লালসা ত্যাগ করে নিজে আল্লাহর হুকুম – আহকাম পালন এবং রাসূল (সাঃ) এর সুন্নাত মত জীবন পরিচালনা করে আখিরাতের আসল জীবনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারে এবং পাশাপাশি নিজের পরিবারে,সমাজে,রাষ্ট্রে এবং বিশ্বের সকল মুসলিম-অমুসলিমকে আল্লাহর দিকে আহবান করে সেই উদ্দেশ্যে রাসূল (সাঃ) ও সাহাবাদের অনুসরণ, অনুকরণ করে কুরবানী, কষ্ট করে মেহনত করার চেষ্টা করা মৃত্যু পর্যন্ত।

 

খুরুজ (ধর্মপ্রচার সফর)

তাবলিগ জামাতে সাধারণত এর সদস্যদেরকে আখিরাত, ঈমান, আমল-এর কথা বলে তিনদিনের চিল্লা নামক সফরের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয় ও আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর পর যথাক্রমে সাতদিন, চল্লিশদিন ও একশবিশ দিন-এর জন্য চিল্লা নামক সফরে আল্লাহর রাস্তায় দাওয়াত-এর কাজে উদ্বুদ্ধ করা হয়ে থাকে । এই সফরগুলো চলাকালীন সময়ে, এর সদস্যদের সাধারণত সরল, সাদা, আলগা পোশাক পরিহিত অবস্থায় এবং তাদের পিঠে রাত্রিযাপনের ঝুলি বহন করতে দেখা যায়। এই সদস্যরা এই ভ্রমণের সময় মসজিদগুলিকে তাদের ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করেন তবে ঘন ঘন তাবলিগিয়াত কার্যক্রমের কারণে এই মসজিদগুলো এই সংস্থার সাথে বিশেষভাবে যুক্ত হয়ে উঠেছে। এই মসজিদগুলো সাধারণত প্রতিবেশী সদস্যদের জন্য পর্যায়ক্রমিক এবং ছোট আকারের বৈঠকের ব্যবস্থা রাখে। মসজিদে অবস্থানকালে এই জামাআতগুলি প্রতিদিনের গাশত পরিচালনা করে, যার মধ্যে স্থানীয় পাড়ামহল্লা পরিদর্শন করা হয়, বিশেষত রাহবার নামে পরিচিত একটি পথনির্দেশকের সাহায্যে। তারা লোকদের তাদের মসজিদে মাগরিবের নামাজে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায় এবং যারা উপস্থিত হন তাদের জন্য নামাজের পরে মূলত ছয় সিফাতের রূপরেখার আলোচনা থাকে। তারা উপস্থিতদেরকে আত্ম-সংশোধন এবং ইসলাম প্রচারের জন্য তাবলীগে সময় কাটাতে অনুরোধ করে।সাধারণত, এই জামাত সদস্যদের অনুমিত ভূমিকা এমনভাবে চক্র আকারে নির্ধারণ করা হয় যে তারা অন্য সময়ে প্রচারক, রান্না বা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসাবে নিযুক্ত হতে পারে। তাবলীগ জামায়াতের সদস্যদের মধ্যে এটিকে সাধারণত খিদমত হিসাবে উল্লেখ করা হয়, যা মূলত তাদের সঙ্গীদের সেবা করা এবং তাবলিগী ব্যস্ততার জন্য তাদের মুক্ত করাকে বোঝায়। জামায়াতের সদস্যগণকে দিনের মাশওয়ারার উপর ভিত্তি করে এই ভূমিকা অর্পণ করা হয়। মারকাজ প্রতিটি জামাতের এবং এদের সদস্যদের নাম লিখে রাখে, যার পরিচয় তাদের নিজ নিজ মসজিদ থেকে যাচাই করা হয়। মসজিদগুলি পৃথক পৃথক জামাতের তাবলিগী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করার জন্য ব্যবহৃত হয়, যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মপ্রচারের কার্যভার গ্রহণ করে থাকে। জামাতের সদস্যরা, আদর্শিকভাবে নিজেরা এর ব্যয়ভার বহন করে যাতে এককভাবে কারও উপর আর্থিকভাবে নির্ভর করতে না হয়।

 

বিদেশি মেহমানদের থাকার ব্যবস্থা

তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বী ও শুরার সাথীদের জন্য টঙ্গী ময়দানে নির্মিত স্থায়ী মাদ্রাসায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়। মাদ্রাসার ভিন্ন ভিন্ন কামরায় তারা অবস্থান করেন।বিদেশ থেকে আগত সব সাধারণ সাথীদের জন্য অস্থায়ীভাবে ৪টি টিনশেড তাবু স্থাপন করা হয়। আর তাতে কোন কোন দেশের সাথীরা থাকবেন তা ভাগ করে দেয়া হয় এভাবে-
১. প্রথমটিতে আরব, আফ্রিকা ও রাশিয়ার দেশসমূহ।
২. দ্বিতীয়টিতে পূর্ব এশিয়া ( চিন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড ও অন্যান্য), ইউরোপের দেশসমূহ।
৩. তৃতীয়টিতে দক্ষিণ এশিয়া ( ভারত, পাকিস্তান, শ্রিলংকা)।
৪. উল্লেখিত দেশের সাথীদের উপস্থিতি বেশি হলে চতুর্থ তাবুটিও ব্যবহার করা হয়।


বিদেশি মেহমানদের প্রতিদিনের কাজ


বিদেশ থেকে আগত তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বি ও শুরা সাথীদের অংশগ্রহণে মাদ্রাসার বড় হলরুমে প্রতিদিন মশওয়ারা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ইজতেমার প্রতিদিনের কারগুজারি শোনানো ও আমল বণ্টন, সব দেশের কারগুজারি শোনানো, বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ও ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করা হয়।বিদেশি মেহমানদের সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করতে তাদের সেবায় কয়েক হাজার মানুষ সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে নিয়োজিত থাকেন। তাদের জন্য যেসব ব্যবস্থাপনা করা হয় তাহলো- যিম্মাদার প্রতি তাবুতেই কাকরাইল শুরার পক্ষ থেকে যিম্মাদার নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তারা পুরো ইজতেমায় উপস্থিত মেহমানদের যাবতীয় বিষয়ের তদারকি করেন।

 

ট্রান্সপোর্ট

মেহমানদের আনা–নেয়া ও যাতায়াতের ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য এই জামাত কাজ করে। কাকরাইল মসজিদের নিজস্ব গাড়ি ছাড়াও ইজতেমা উপলক্ষে শতাধিক গাড়ি ব্যবহারের জন্য রাখা হয়। ‘বিদেশি মেহমানদের খেদমতে নিয়োজিত’ স্টিকার সম্বলিত এই গাড়িগুলো এয়ারপোর্ট টু ময়দান নির্বিঘ্নে চলাচলের সুবিধা পায়।

 

ইস্তেকবাল

বিদেশি মেহমানদের খিমার প্রবেশ মুখেই ইস্তেকবালের কামরা থাকে। এই জামাতের সাথীরা এয়ারপোর্ট থেকে আগত মেহমানদের ইস্তেকবাল করে তাদের লাগেজ–সামানা আনা নেয়ায় সহায়তা করেন। পাশাপাশি প্রত্যেকের পাসপোর্টও এন্ট্রি করেন তারা।

 

আমানত

বিদেশ থেকে আগত মেহমানদের পাসপোর্ট, টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী জমা রাখার জন্য আমানত কামরা থাকে। এখানে নাম এন্ট্রি করে ব্যাংকের লকারের ব্যবস্থা রয়েছে। যার যার লকারের তাদের সংরক্ষণ করা হয়।

 

অনুবাদের দায়িত্ব

ইজতেমা আগত বিদেশি মেহমানদের সুবিধার্থে তাদের ভাষায় বয়না বুঝতে দোভাষী রাখা হয়। যাতে যে যে ভাষার মানুষ সে ভাষার পারদর্শী অনুবাদকের ব্যবস্থা করা হয়। যারা বয়ানের সময়ই তাৎক্ষণিক বয়ান বুঝিয়ে দেন। বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা সমাপনকারী ছাত্ররাও এ অনুবাদকের কাজ করে থাকেন।

 

তাশকিল

ইজতেমায় বিদেশিদের অধিকাংশই এক বা একাধিক চিল্লায় সময় লাগানোর নিয়তে আসেন। তাদের জামাতবন্দি করা, মুতারজিম ঠিক করা ও রোখ দেয়ার কাজ করেন তাশকিলের সাথীরা।

 

সয়ালা হল

বিদেশি মেহমানদের মধ্যে নানা বয়সী মেহমানদের বিভিন্ন রকম সমস্যা ও প্রয়োজন থাকে। এসব সমস্যা সমাধান ও প্রয়োজন পুরণের জন্য ‘মাসয়ালা হল’ নামে জামাত থাকে। তারা জানা-অজানা বিষয়গুলো জানানোর মাধ্যমে এ খেদমদের আঞ্জাম দেন।

 

পাহারার সাথী

সরকারি প্রশাসনের উদ্যোগে বিদেশি খিমার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হলেও ইজতেমার পক্ষ থেকেও আলাদা পাহারাদার জামাত থাকে। পালাক্রমে চব্বিশ ঘণ্টা মূল গেট ও প্রত্যেক তাবুতে পাহারা দেয়া হয়।

 

অস্থায়ী দোকান

বিদেশি মেহমানদের সুবিধার্থে কেনা-কাটায় অস্থায়ীভাবে দোকান তথা বেডিং, মশারি, কম্বল, জুতা, সকল প্রকার ফল ও পানীয় সুলভমূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা রাখা হয়।

 

মানি এক্সচেঞ্জ

বিদেশি মেহমানদের কষ্ট লাঘব ও প্রতারণা থেকে বাঁচাতে ময়দানেই অস্থায়ী মানি এক্সচেঞ্জ বসানো হয়। সব ধরনের মূদ্রা ক্রয় – বিক্রয়ের সুবিধা থাকে এখানে।

 

পরিচ্ছন্নতা

বিদেশি মেহমানদের তাবু থেকে বর্জ্য অপসারণ ও টয়লেট–অজুখানা–গোসলখানা পরিষ্কারের জন্য কয়েকটি জামাত নিয়োজিত থাকে। প্রতিদিন রাত ১২ টার পর এই জামাতের সাথীরা সব ধরনের পরিচ্ছন্নতার কাজ আঞ্জাম দেন।

 

খাবার ব্যবস্থাপনা

মেহমানদের দেখাভাল ও অতিথিপরায়ণতায় বাংলাদেশিদের সুনাম রয়েছে বিশ্বময়। ইজতেমায় আগত মেহমানদের সর্বোচ্চ আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয় প্রতিবছর। পুরাতন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কয়েকটি পরিবার বংশানুক্রমে এই মহান খেদমতের জিম্মাদারি পালন করে আসছেন। তাদের সাথে বিভিন্ন বিভাগে প্রায় এক হাজার স্বেচ্ছাসেবী খাবার সরবরাহে দায়িত্ব পালন করেন।শুরা মেহমানখানা ও আম মেহমানখানার আয়োজন পৃথকভাবে হয়ে থাকে। উভয় জায়গায় দেশের ভিন্নতা হিসাবে পছন্দমাফিক খাবার পরিবেশন করা হয়। সাথে ২৪ ঘন্টা দুধ চা ও রঙ চা’র ব্যবস্থা থাকে। আম মেহমানখানায় খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে থাকেন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। আর রুটি বানানোয় অংশ নেন কাকরাইল মাদরাসার ছাত্ররা।বিশুদ্ধতা ও উৎকৃষ্ট মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত–খামার থেকে ফরমালিনমুক্তভাবে আনা হয়ে থাকে। খাবার পানি গভীর নলকূপ থেকে উঠিয়ে ফিল্টারিং করে বোতলজাত করা হয়। বিদেশি মেহমানদের খেদমতে যাদের রাখা হয়, তারা সবাই ন্যূনতম তিন চিল্লার সাথী। ইজতেমার প্রত্যেক পর্বেই তারা এ খেদমতের আঞ্জাম দিয়ে থাকতেন।  ইজতেমায় আগত বিদেশিদের মেহমানদারি আয়োজন বিদেশিদের অর্থে করা হয় না। ইজতেমার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অনেক নিবেদিত ধর্মপ্রাণ মুসলমান আল্লাহ সন্তুষ্টির আশায় এসব মেহমানদারির ব্যবস্থা করে থাকেন।সর্বোপরি তাবলিগের মুরব্বি ও সাধারণ মানুষ মনে করেন, ‘টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশের জন্য আল্লাহর বিশেষ দান। স্বল্প আয়ের একটি দেশে এত বড় একটি আয়োজন যেভাবে সুচারুরূপে সম্পাদিত হয় তা দেখে বিদেশিরা অভিভূত হয়ে পড়েন।

 

‘ভ্রান্তআকিদায় বিশ্বাসী বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠন ’ এদেশে শিরক-বিদ‘আত ও কুসংস্কারযুক্ত একটি সমাজ গড়তে চায়। আর সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে ‘ঈমানী আন্দোলন’-এর কর্মসূচীর অংশ হিসাবে প্রতি বছর এই তাবলীগী ইজতেমার আয়োজন করা হয়। অতএব পবিত্র কুরআন ও  হাদীছের  আলোকে স্ব স্ব পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে এই ইজতেমার গুরুত্ব ও ভূমিকা অপরিসীম। আল্লাহ আমাদেরকে তাবলীগী ইজতেমার জ্ঞানগর্ভ দলীলভিত্তিক আলোচনা থেকে শিক্ষা লাভ করে তা নিজ পরিবার ও সমাজ জীবনে বাস্তবায়নের তাওফীক দান করুন-আমীন!

 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।  

 

একুশে সংবাদ/এসএপি/সা’দ

Link copied!