AB Bank
ঢাকা শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪, ১৬ ভাদ্র ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও প্রধানমন্ত্রীর ধৈর্যের আহ্বান


Ekushey Sangbad
শাহ আলম ডাকুয়া
০৮:১২ পিএম, ১৭ জুলাই, ২০২৪
কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও প্রধানমন্ত্রীর ধৈর্যের আহ্বান

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে চলা সংকট আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৭ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ, ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে সারাদেশে ৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুজন ও রংপুরে একজন নিহত হন। এছাড়া আহত হন আরও অনেকে।
এ অবস্থায় দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
১৬ জুলাই রাত ১১টার দিকে সরকারের এ সিদ্ধান্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এতে সই করেছেন ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান। আদালতে যে বিষয়ে সুরাহা সম্ভব সে বিষেয়ে হানাহানি বন্ধ করে অপেক্ষা করতে হবে।

কোটাবিরোধী আন্দোলনে উত্তেজনা চলছিলছে গোটা দেশে। অনেকেই কোটা সংস্কারের পক্ষে মতামতও ব্যক্ত করেছেন। পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে। একটা কিছু হবে, জনদুর্ভোগ কমবে এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোববার গভীর রাতে ভাইরাল হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মিছিল। স্লোগান হচ্ছে ‘তুমি কে আমি কে- রাজাকার রাজাকার’, ‘এই বাংলার মাটি- রাজাকারের ঘাঁটি’,’। সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরব হয়ে ওঠে। ব্যাপক প্রতিবাদ হতে থাকে মিছিলকারীদের স্বীকারোক্তির বিরুদ্ধে। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেও যারা ছিলো কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষে, তারাই এই আচরণের বিপক্ষে ফুঁসে ওঠে।

বিশেষ করে যখন যুক্তি হিসেবে দেখানো হলো, সরকারও আন্দোলনকারীদের দাবির পক্ষে। শুধু মৌখিকই নয়, আদালতে যাওয়ার মাধ্যমে সেই প্রমাণ সরকারও দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি ও সরকারের পদক্ষেপ একই সমান্তরালে। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীরা আন্দোলন করার যুক্তি কি? তারপরও আবার উচ্চ আদালতে স্থিতাবস্থার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণ প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে, এমন বলা অসঙ্গত হওয়ার কথা নয়। এমন পরিস্থিতিতে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়াই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।

সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিধানগুলো তাদের এই দাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। একদিকে তারা বলছে নির্বাহী বিভাগ তাদের দাবি পূরণে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত। অথচ তাদের দেখা গেলো ১৪ তারিখ মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি প্রদান করতে। তারা নির্বাহী বিভাগকে স্মারকলিপি না দিয়ে সরাসরি মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ায় বিষয়টি ভিন্ন আলোচনার সুযোগ করে দিতেই পারে।

তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সহায়ক শক্তি হিসেবে পালন করেছে সরকারের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা তথা পুলিশ বিভাগ। শাহবাগে ব্যারিকেড ভেঙে তারা আন্দোলন করেছে, কিন্তু দেখা গেলো তারা পুলিশের গাড়ি দখল করে নিয়েছে। পুলিশ তারপরও তাদের ওপর লাঠিচার্জ কিংবা অন্যকোনো আঘাত করেনি। তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ করে দিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছে। এসবই আন্দোলনের বিশ্লেষণ। আন্দোলন যৌক্তিক কি অযৌক্তিক সবই আলোচনাযোগ্য।

কিন্তু যে মুহূর্তে ‘আমরা হলাম রাজাকার’-এর মতো মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী স্লোগান প্রকাশ্যে হতে দেখা যায়, তখন আন্দোলনের দাবি, এর যৌক্তিকতা প্রশ্নাতীত হয়ে যায়। তাই বলা যায় এটা তাদেরই স্লোগান। তার মানে হচ্ছে, চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতা নয় আসলে ওরা মুক্তিযুদ্ধেরই বিরোধিতা করছে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অনেক আইন হয়েছে, এমনকি সংবিধানেও সংযোজন হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পথেও আজ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী প্রচারণার বিষয়ে কোনো আইন বাংলাদেশে হয়নি। পৃথিবীর ১৭টি দেশে হলোকাস্ট ডিনায়েল ল’ রয়েছে। সেখানে তাদের স্বাধীনতা বিরোধীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। কেউ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কাজ কিংবা বক্তব্য প্রদান করলে তাকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তাকে শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তারা শাস্তিযোগ্য হলেও সরাসরি আইনের আওতায় আসছে না।
আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে আপত্তিজনক বলে অভিহিত করেছেন এবং বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। এই দাবিটিও প্রশ্নাতীত নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোটা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের থাকবে না তো রাজাকার নাতি-নাতিনদের থাকবে? এখানে আন্দোলনকারীদের ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণ কি? আন্দোলনকারীরা কি রাজাকার? নাকি তাদের রাজাকার বলা হয়েছে?

এখানেই মূল প্রশ্ন নিহিত রয়েছে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে উসকে দেয়ার জন্য একটা মহল গোপনে কাজ করছে। এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের। এতে শুধু সমর্থন দিয়েছে দল সরাসরি যুক্ত নয়।
১৭ জুলাই পুলিশের বাধায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের বাইরে গায়েবানা জানাজা পড়তে না পারলে পরে জোহরের নামাজ শেষে মসজিদের ভেতরেই এ নামাজ আদায় করেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এ সময় মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
আমরা বলতে চাই, এই আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সরাসরি জড়িত, আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি কখনও জড়িত নই। আমরা তাদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছি। আর সেই নৈতিক সমর্থন দিয়ে যাব। কারণ আমরা মনে করি, তাদের এ আন্দোলন যুক্তিসংগত।তিনি আরও বলেন, সরকার

ইচ্ছা করলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কোটা সমস্যার সমাধান করতে পারত। তা না করে বর্বরভাবে হামলা করে মানুষ হত্যা করেছে। বিএনপির এই সমর্থন ছাত্রদের আরো শক্তিশালী করেছে। ছাত্রদেরকে উসকে দিয়েছে-এমন ধারণা অনেক রাজনীতিবিদদের।

আন্দোলনকারীরা নিজেদের মেধাভিত্তিক কোটাবৃদ্ধির আন্দোলন করছে, তারা রাজাকারের কোটার কথা বলছে না। তাহলে এমন কথায় তাদের গায়ে লাগে কেন? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলা হচ্ছে-এটা আসলে ‘ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না’ জাতীয় প্রবাদের মতো হয়ে যায় না কি? রাজাকারের প্রসঙ্গ তারা নিজেরা টেনে নিয়ে গিয়ে নিজেদের রাজাকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে কি রাজাকার প্রতিষ্ঠায় ব্রত হয়েছেন?

একুশে সংবাদ/এসএডি

 

Link copied!