AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

১৫ই আগস্ট ঘিরে আওয়ামী লীগের সংগঠিত হওয়ার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা


Ekushey Sangbad
বেলায়েত হোসেন, ঢাকা
০৯:৩১ পিএম, ১২ আগস্ট, ২০২৪
১৫ই আগস্ট ঘিরে আওয়ামী লীগের সংগঠিত হওয়ার সম্ভাবনা ও বাস্তবতা

ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অবস্থায় জনরোষের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর গা ঢাকা দিয়ে আছে দেড় দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এমন অবস্থায় ১৫ই অগাস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী কেন্দ্র করে ঢাকায় শোক ও শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

বিবিসি বাংলাকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, “ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শোক দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে নিরাপত্তার জন্য দলের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে আমি জেনেছি।” যার অনুমতিও দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে কর্মসূচি ঘিরে আওয়ামী লীগের এই প্রস্তুতিকে স্বাভাবিকভাবে দেখছে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “শোক দিবসের আবেগকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগ মাঠে নেমে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার করে অপতৎপরতা চালাতে চায় বলে আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি। এমন কিছুর চেষ্টা হলে আমরা বসে থাকবো না।”

এরই মধ্যে ১৫ই অগাস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে অনুরোধ জানিয়েছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অডিও কলে দলীয় নেতাকর্মীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে যাওয়ার নির্দেশনা দিতে শোনা যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে। শোক দিবস ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঠে নামা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এই কর্মসূচি ঘিরে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আত্মগোপনে থাকা দলটি আসলে কী করতে চায়?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এত বড় একটা রাজনৈতিক দল এক সপ্তাহ পালিয়ে থাকার পর নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়ার জন্যই হয়তো শোক দিবসের কর্মসূচিকে বেছে নিয়েছে। বিশ্লেষক বলেন, “ওইদিন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যেতে চাইবে। অন্যপক্ষও সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করবে। এতে হয়তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।”

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শোক দিবসের পূর্বপরিকল্পিত কর্মসূচি অনুযায়ী কার্যক্রম পালন করা অসম্ভব হওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার মাধ্যমে নেতাকর্মীদের ঢল নামাতে চেষ্টা করবে। এজন্য রাজপথে নেতাকর্মীদের অবস্থানের মাধ্যমে শোক দিবস পালনে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের নির্দেশও দিয়েছেন। গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোনে এই নির্দেশনা দেন। এক অডিও রেকর্ড থেকে জানা যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সবাই ঢাকায় চলে আসবে, মৌনমিছিল করে বঙ্গবন্ধু ভবনে ফুল দিতে হবে। বাংলাদেশের সব এলাকা থেকে ঢাকা এসে ফুল দিয়ে যাবে। এ ছাড়া যাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের থানায় জিডি করতে হবে।’ আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, ‘দলীয় সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তিনি শোক দিবসকে ঘিরে কর্মসূচি পালনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিতে ও একই সঙ্গে গত কয়েকদিনে সারা দেশে নির্যাতনের শিকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দিয়েছেন।’

এদিকে সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক গণমাধ্যমে বলেন, “১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে আমাদের কর্মসূচি থাকবে। আমরা জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাব। ওই দিন আমরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা এবং বনানীর কবরস্থানে ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাব। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করবে। এতে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের নেত্রী ভালো আছেন। তিনি সকল নেতাকর্মীকে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে মানুষের ঢল নামানোর জন্য তাগিদ দিয়েছেন। ”

অপরদিকে সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শেখ হাসিনার বিচার ও ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এই দাবি জানান। তিনি বলেন- আমাদের মূল দাবি, হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন। তাই আপনারা বক্তব্য দেওয়ার আগে ৫ আগস্টের গণভবনের চিত্র মনে রাখবেন। খুনিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, আমরা যেভাবে স্বৈরাচারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়েছি, ঠিক একইভাবে স্বৈরাচারের পুনর্বাসনের চেষ্টাকারীদেরও নামাতে সময় লাগবে না।

 

লেখক:  সিনিয়র সাংবাদিক

 

Link copied!