AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিলুপ্তির পথে ১৫০ প্রজাতির পাখি ও বন্যপ্রাণী, এখনই সচেতনতা প্রয়োজন


Ekushey Sangbad
হৃদয় দেবনাথ
১২:৫২ পিএম, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
বিলুপ্তির পথে ১৫০ প্রজাতির পাখি ও বন্যপ্রাণী, এখনই সচেতনতা প্রয়োজন

মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বাইক্কা বিল মৎস্য ও পাখির অভয়ারণ্য এবং কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত ও বিপন্নের পথে।নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, অবাধে পাহাড় কাটা ও জলাশয় ভরাট হওয়ায় এসব প্রাণী হুমকির মুখে পড়েছে। এদের মধ্যে স্তন্যপায়ী পাখি, উভচর ও সরিসৃপ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বেশিরভাগ এখন অতিবিপন্ন। 

এ ছাড়া প্রায় আড়াইশ’ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর সঠিক অবস্থান সম্পর্কে যথার্থ তথ্যপ্রমাণের অভাব রয়েছে। পরিবেশগত অভয়াশ্রম ও সংরক্ষিত এলাকা নিরাপদ রাখা এবং পরিমার্জিত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রণীত না হলে উলেখযোগ্য বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।ইতোমধ্যে স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে বনগরু ২টি, নেকড়ে, হরিণ ২টি, বনমহিষ, নীলগাই, পাখি প্রজাতির ২টি এবং এক প্রজাতির সরিসৃপ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিপন্ন অবস্থায় ৪৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৪৭ প্রজাতির পাখি, ৮ প্রজাতির উভচর ও ৬৩ প্রজাতির সরিসৃপ রয়েছে।

তথ্যমতে, দেশে প্রায় ৯০৩ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর মধ্যে ৩০-৩৫টি উভচর, ১২৬টি সরিসৃপ, ৬৫০টি পাখি এবং ১১৩টি স্তন্যপায়ী প্রজাতি রয়েছে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে ১০টি প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটেছে। এ ছাড়া ৪৩টি প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে লজ্জাবতী বানর, পারাইলা বানর, কুলু বানর, উলুক, রামকুত্তা, মেছোবাঘ, চিতা বাঘ, উদবিড়াল, ভল্লুক, বনছাগল, সেম্বার, বনরুই, মুখপোড়া হনুমান, বনবিড়াল, মেছোবাঘ, কাঁকড়াভুক বেজি, ভোঁদড়, কালো ভল্লুক, বাগডাঁস, মায়াহরিণ। বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে লালসির হাঁস ও ময়ূর।

এ ছাড়া অতিবিপন্ন পাখির তালিকায় রয়েছে কালো তিতির, কাঠময়ূর, বাদি হাঁস, বাঞ্চা হাঁস, রাজধনেশ, পাহাড়ি ঘুঘু, হড়িয়াল, কোরাল, লালশির শকুন, হাড়গিলা, পাহাড়ি ময়না, মথুরা, কাওধনেশ, ঈগল প্যাঁচা, হট্টিটি, সাদা উগল, মাদল টাক প্রভৃতি। উভচর প্রজাতিতে পটকা, সবুজ ও গেছো ব্যাঙ এখন বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে।দেশের প্রাণী প্রেমী ও বিশেষজ্ঞদের মতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে যথাযথ আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের সদিচ্ছাই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে দেশের অন্যতম বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য লাউয়াছড়া, কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, বাইক্কা বিল মৎস্য ও পাখির অভয়ারণ্যকে রক্ষা করতে পারলে বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণী ও পাখির প্রজনন বৃদ্ধির মাধ্যমে বিপন্নতা থেকে রক্ষা করা সম্ভব।একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের ক্রিয়াকলাপের কারণে প্রাণী প্রজাতির গোষ্ঠী অতীতের গড়ের চেয়ে ৩৫ গুণ বেশি হারে বিলুপ্ত হচ্ছে, গবেষকদের মতে, এটি প্রমাণিত যে পৃথিবীর ইতিহাসে ষষ্ঠ গণবিলুপ্তি চলছে এবং ত্বরান্বিত হচ্ছে। সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান।

বিগত ৫০০ বছরে যে হারে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত প্রাণী প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে মানুষের অনুপস্থিতিতে তাদের বিলুপ্ত হতে ১৮,০০০ বছর লেগে যেত। কিন্তু বর্তমানে তা ব্যতিক্রম।

প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৫০০ সাল থেকে অন্তত ৭৩টি স্তন্যপায়ী, পাখি, সরীসৃপ এবং উভচর প্রজাতির গোষ্ঠী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। হারিয়ে যাওয়া প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে মাদাগাস্কারের হাতি, পাখি, নিউজিল্যান্ডের মোয়া এবং হাওয়াইয়ান মোহো হানিইটার।এই বিলুপ্তির কারণ হিসেবে সামনে আসছে প্রাণীদের আবাসস্থল ধ্বংস, জলবায়ু সংকট এবং বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্যের কারণে আগামী বছরগুলিতে ক্ষতি আরও ত্বরান্বিত হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ, ব্যাপকহারে বন উজাড়, অবাধে বন্যপ্রাণী শিকার, নদীর নাব্যতা হ্রাস ও ভারসাম্যহীন পরিবেশ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিপন্ন আর বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পরিবেশ ও প্রাণী বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ক আইনবিধি ও অধ্যাদেশ থাকা সত্ত্বেও যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিপন্ন। এতে বন্যপ্রাণী বিলুপ্তি ও ক্রমহ্রাসের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।

 

হৃদয় দেবনাথ :  সাংবাদিক ও কলামিস্ট

রিপোর্টার গাজী টেলিভিশন 

Link copied!