AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সাংবাদিকতার মৌলিকতা ধুয়ে মুছে গিলে ফেলা


Ekushey Sangbad
সাঈদুর রহমান রিমন
০৮:৫৮ পিএম, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫
সাংবাদিকতার মৌলিকতা ধুয়ে মুছে গিলে ফেলা

রাজনৈতিক সাংবাদিকতা যেমন নিষিদ্ধ নয়, তেমনি রাজনীতি করে সাংবাদিকতা কিংবা সাংবাদিকতা করে রাজনীতি করাও নিষিদ্ধ হতে পারে না। তবে তার রাজনীতির প্রভাব সাংবাদিকতায় না পড়লেই চলে। কিন্তু যে দেশে রাষ্ট্র, সরকার আর দলকে আলাদা করে দেখা কষ্টকর, সেদেশে রাজনৈতিক দলের নেতা দলীয় প্রভাবমুক্ত সাংবাদিকতা করবেন তা আশা করাও অবান্তর।

এক্ষেত্রে দলবাজ মানুষ তার সাংবাদিকতাকে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করে থাকেন। তাছাড়া সাংবাদিক কাম রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলেই বেশি সিদ্ধহস্ত তারা। আমি মনে করি, দলবাজির সাংবাদিকতা নৈতিক হলে নিশ্চয়ই দলীয় মুখপত্র প্রকাশের বিধানটি থাকতো না। যারা দলীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি সাংবাদিকতাকেও ধরে রাখতে চান তাদের জন্য দলীয় মুখপত্র বের করে তার সাথে যুক্ত থাকাটাই বেশি যৌক্তিক।

বাংলা ভূখণ্ডে ৬১ বছর আগে সাপ্তাহিক সোনার বাংলা এবং ৪৮ বছর আগে দৈনিক সংগ্রাম প্রকাশের মধ্য দিয়ে দলীয় মুখপত্র প্রকাশের সূচনা ঘটে। পরবর্তীতে যুবলীগের মুখপত্র হিসেবে বাংলার বাণী এবং বিএনপির পক্ষে দৈনিক দিনকাল প্রকাশের মধ্য দিয়ে দলীয় মুখপত্রের ব্যাপ্তি ঘটে দেশে। আর বর্তমানে অঘোষিতভাবে সিংহভাগ পত্রিকাই কোনো না কোনো দলের লেজুরবৃত্তি করে থাকে, যা পাঠকদের সঙ্গে সূক্ষ্মè কারচুপি পর্যায়েই পড়ে। পার্শ্ববর্তী ভারতেও পত্রিকা পাঠকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের এহেন কারচুপির নজির নেই। সেখানে পত্রিকার প্রথম পাতার শীর্ষে স্পষ্টভাবে ছাপানো থাকে: ‘বাংলা ভাষায় সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক’ কিংবা ‘দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকা’ হিসেবে। কিন্তু বাংলাদেশে ‘প্রচার সংখ্যায় শীর্ষে’ বা ‘সর্বাধিক প্রচারিত’ শব্দটি ছাপা হয় অন্তত আটটি জাতীয় দৈনিকে। এটা পাঠকদের সঙ্গে রসিকতা নাকি প্রতারণা? দলীয় লেজুরবৃত্তির ক্ষেত্রেও অভিন্ন চিত্র বিদ্যমান।

বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র সরাসরি দলের মুখপত্র আকারে প্রকাশ করলেও তা পাঠকদের জানিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। অর্থাৎ নিরপেক্ষতার ভান ধরে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিকগণও নিরপেক্ষতার ছদ্মাবরণে দলবাজির সাংবাদিকতায় আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকার সক্ষমতা প্রদর্শন করে চলছেন।

দলবাজ সাংবাদিকতা নিয়ে লেখক শরীফ মুহাম্মদ এর বিশ্লেষণটি বেশ কঠিন। দলবাজ সাংবাদিক। এটা একটা পরিচিতিমূলক শব্দবন্ধ। যে সাংবাদিক দলবাজি করে তার জন্য এবং তাকে এটা বলা হয়। অর্থাৎ তার আসল পরিচয় সাংবাদিক, এর সঙ্গে সে দলবাজিও করে। আরেকটা হচ্ছে, মিডিয়াবাজ দলীয় কর্মি। এই লোকটা আসলে সাংবাদিক না, তার প্রধান পরিচয় হলো সে দলের অন্ধ-কর্মি। তবে দলবাজি করার জন্য সাংবাদিকতার অঙ্গনটাকে সে বেছে নিয়েছে।

সাংবাদিকতায় দলবাজির চর্চাটা আগে থেকেই ছিল, তবে বেশ রাখঢাক অবস্থায়। এখন তার বেপরোয়া ভাব চরমে পৌঁছেছে। কিছু রাজনৈতিক অন্ধ কর্মি ও টাউট যেন সাংবাদিকতায় ঢুকে গেছে! দলবাজির ‘হক’ আদায় করেই সফল সাংবাদিক হয়ে যাচ্ছে তারা! অপরদিকে যে লোকটা আগাগোড়াই অন্ধ রাজনৈতিক কর্মি- ধান্ধা, পেশা ও জীবিকার ক্ষেত্র হিসেবে সাংবাদিকতাকে বেছে নিয়েছে, সাংবাদিকতা কেবলই তার ব্যবহারের বিষয়। এক সময় দেশে দল ও রাজনীতির সাথে যুক্ত সাংবাদিক থাকতো, এখন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত অন্ধ রাজনীতিকের ভিড় বেড়ে গেছে। সাংবাদিকতা ও দলবাজির এই বিকৃত বিবর্তন ‘পোকায় খাওয়া সাংবাদিকতা’কে কোথায় নিয়ে ফেলবে সেটাই দেখার বিষয়। না, কোথায় নিয়ে ফেলবে নয়- কোথায় নিয়ে ফেলেছে তা গত ৫ আগস্ট থেকেই দেখতে পাচ্ছে গোটা জাতি।

কাজল ভোমরা বলছিলেন, “সাংবাদিকরা নির্লজ্জ দালালি ছাড়ুন আর দলকানা দালালরা সাংবাদিকতা ছাড়ুন” লিখে অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছিল। তারপর আবারো বলছি, হয় সাংবাদিকতা করুন, নইলে দালালি করুন। দল কানা সাংবাদিকদের কারণে মহান পেশার আজ বারোটা বেজে গেছে। অনেকে এতটাই দলবাজ হয়ে গেছেন যে, স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি কালো আইন পাশ হওয়ার পরও মুখে কুলূপ এঁটে বসে থাকেন। অথচ, এ আইন নির্দিষ্ট কোনো দলের সাংবাদিকদের জন্য প্রযোজ্য নয়। বরং সবার জন্যই কালো আইন। আজ যারা চুপ করে আছেন এমন একটা সময় আসবে যখন এ কালো আইন আপনার বিরুদ্ধেই প্রয়োগ করা হবে।

ওমর আলী সোহাগের মন্তব্য হচ্ছে, ইত্তেহাদ থেকে ইত্তেফাক এবং মানিক মিয়া। তখন আওয়ামী লীগের মুখপাত্র হিসাবেই আনা হয়। যার হকার পর্যন্ত ঠিক করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত আত্মজীবনী ও বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাস তাই বলে। মিজানুর রহমান বলছিলেন, পত্রিকার মালিকগণ যদিও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত। তবুও স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ রিপোর্ট তৈরি করতে বেশিরভাগ সম্পাদকগণই আদেশ জারি করে থাকেন। স্বাধীনভাবে আর নিরপেক্ষতা বজায় থাকে না। কেননা, বহু পাকনা পাকনা টাউট বাটপারেরা রাজনীতির পাশাপাশি একটি পত্রিকার কার্ড পেয়েই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে জাল নকশা আঁকতে থাকে। তার কুৎসিত চরিত্রটি সবার চোখে ধরা খাবার আগেই হয়ে ওঠে প্রকৃত সাংবাদিকদের জন্য কঠিন, অপ্রতিরোধ্য এক শয়তান।

দলবাজির অন্ধত্বে সাংবাদিকতার সব শেষ

আমি সব দেখে শুনে বুঝেই বলছি- দেশে সাংবাদিকতার ছিটেফোটাও আর অবশিষ্ট থাকছে না। সাংবাদিকতার নামে কেবল দালালি আর ভুয়াবাজি চলে। চলে সরকারি ও বিরোধী দলের ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর দালাল হওয়ার তীব্র প্রতিযোগিতা।

তাই বলে আপনি যথেচ্ছা সংবাদ লিখবেন, মনে চাইলেই নিউজ গায়েব করে দিবেন- এমন স্বেচ্ছাচারিতার অধিকার কে দিলো আপনাকে? দাবি দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামা শিক্ষার্থীদের হাজার হাজার রাউন্ড গুলি চালিয়ে হত্যা করা নিয়ে বিশ্ব মিডিয়া কি প্রকাশ করেছে? একই ঘটনায় আপনি কি লিখেছেন, কি প্রচার করেছেন? এসব ভেবে একাকীও কি লজ্জা পান না? একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে এ অভিব্যক্তি আমার। আশপাশের পাঠকের সঙ্গে কথা বলে দেখুন- আরো জঘন্য সব মন্তব্য শুনতে পাবেন।

টাকা দিয়ে পত্রিকা কিনে ছুঁড়ে ফেলা পাঠকরাই প্রশ্ন তোলেন- আপনি সরকার দলের আস্থাভাজন চামচা, তাই বলে বৃহত্তর শিক্ষার্থী আন্দোলনকে নাশকতা বলে খবর লিখবেন? পাখির মতো নির্বিচার গুলিতে কতজন শিক্ষার্থী জনতা মারা গেল তার সংখ্যা এড়িয়ে যাবেন? লাশের পাহাড় পায়ে মাড়িয়ে মেট্রো রেল পোড়ানোর দৃশ্যটি আট কলাম জুড়ে ছাপাতে আপনার এতো উৎসাহ কেন? জঙ্গী, শিবির, নাশকতার ধোয়া তুলে সরকারের নানা রকম বাহিনী যে যুদ্ধ চালালো তাতে কারা মারা গেলো? সব লাশই কি জঙ্গীদের? নাকি শিক্ষার্থী আর নিরপরাধী জনতার? এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখে কোনো প্রশ্ন তুলেছেন? তা না করে থাকলে কোথায় আপনার বিবেকী দায়বদ্ধতা? এটাই কি আপনার শেখা সাংবাদিকতা? এটাও জানি, বিবেকহীন কিছু আপনি করতে চান না- দলের প্রেতাত্মা সেসব করতে আপনাকে বাধ্য করে।

দলবাজির প্রেতাত্মা এমনভাবেই কাঁধে চেপে বসেছে যে, নিজের বিবেক, বুদ্ধি, মনুষ্যত্ব পর্যন্ত বিকিয়ে দিতে হয়েছে। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে চার জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হলেও সে ঘটনাকে অবলীলায় নিহত বলে চালিয়ে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো মিডিয়া কি সাংবাদিক হত্যার ঘটনাগুলোর ব্যাপারে অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিয়েছেন? কেন নেননি? নিজ সন্তানদের বলি দিয়েও টু শব্দটি করতে সাহস নেই আপনাদের, কারণ মেরুদণ্ড তো আরো আগেই ন্যুব্জ বানিয়ে ফেলেছেন। আপনাদের হাত বাধা, মুখেও ঝুলিয়েছেন তালা। সবকিছুই অন্ধ দলবাজির অভিশাপ।

আপনাদের সেসব অপকর্মের জের মাঠ সাংবাদিকদের কাঁধে চাপে। তারা হামলা, মারধরের শিকার হন। আগে সরকার বিরোধী চরম আন্দোলন, হরতাল, কারফিউ ভঙ্গের মিছিলের আশেপাশে হাজির হলে সাংবাদিকদের ঘিরে আন্দোলনরতদের হর্ষধ্বনি চলতো, আনন্দ মিছিল হতো। গরমে লেবুর শরবত বানিয়ে খাওয়াতো। আর এখন সাংবাদিক দেখলে আন্দোলনকারীরা ধাওয়া দেয়, হামলা চালায়। কারণটা কি? এ সবই দলবাজ সাংবাদিকদের পাপের ফসল, অথচ সাজা ভোগ করি মাঠের সংবাদকর্মীরা।

(তাই বলে আন্দোলনকারী, বিক্ষুব্ধ কোনো দল, গ্রুপ সাধারণ সাংবাদিকদের উপর নির্বিচারে হামলা চালাবে, গণমাধ্যমের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুনে পুড়িয়ে দিবে সেসব জঘন্যতাও মেনে নেয়া যায় না। সাংবাদিকরা এতো এতো ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন, গুলি, সংঘাতের স্পটে যায় খবর সংগ্রহের জন্য, তারা কারো পক্ষে বিপক্ষে মিছিল করতে যায় না। এটুকু বিবেক বিবেচনা থাকা উচিত।)

যাই হোক, বলছিলাম দলবাজ সাংবাদিকদের কথা। সরকারি পা চাটা মাত্র ৬০/৭০ জনের সাংবাদিক সিন্ডিকেট শত বছরের সাংবাদিকতাকে ধ্বংস করে দিলো, নিশ্চিহ্ন করে দিলো। দুটি সরকারের আমলেই দুই গ্রুপ দালালের অভিন্ন অপকর্ম দেখেছি। আর এভাবে চলতে পারে না, চলতে দেয়া উচিত নয়। সাংবাদিকতা থেকে ‍‍`রাজনৈতিক দালালি‍‍` ঝেঁটিয়ে বিদায় করা সবচেয়ে জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেন্ট্রাল পর্যায়ে দলবাজ দালাল সাংবাদিকদের তালিকা করা গেলে ঢাকার বাইরে তাদের আন্ডা বাচ্চাদের খুঁজে পেতে বেগ পেতে হবে না।

রাজনৈতিক দলগুলো ন্যূনতম নীতিবোধ থেকে সাংবাদিকদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলীয় ইউনিট খুলতে লজ্জা পেয়েছে। অথচ নির্লজ্জ, বেহায়া শ্রেণীর কিছু দলবাজ সাংবাদিকের মধ্যে সেটুকু লজ্জাবোধও নেই। তারা সাংবাদিকতার মধ্যে নিজে নিজেই অতিউৎসাহে দলীয় ফ্রন্ট খুলে বসেছে। দল থেকে তারা শিশু লীগ বা সমর্থক দলের মতো অনুমোদনও জোটাতে পারেনি। তাতে কী? আওয়ামী সাংবাদিক গোষ্ঠী, জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফ্রন্ট জাতীয় নাম দিয়ে দালালির দোকান খুলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করছে না।

গ্রুপিং, সিন্ডিকেট আগেও ছিল, তবে...

সাংবাদিকদের দলবিহীন গ্রুপিং, সিন্ডিকেট আগেও ছিল- তবে সেসব সচল থাকতো কেবলই সাংবাদিক ইউনিয়ন বা প্রেসক্লাবের নির্বাচন কেন্দ্রিক। নির্বাচন শেষ হলেই আবার সবাই অভিন্ন কাতারের সাংবাদিক হয়ে উঠতেন। আর এখন দেখি, দলবাজির স্থায়ী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। রাজনীতির প্রকাশ্য লেজুরবৃত্তি যেন স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনেরই পুঁজি!

যেখানে বিশ্ব জুড়ে সাংবাদিকরা প্রেসব্রিফিংসহ জাতীয়, আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানসমূহে সাবলীলভাবে বলে উঠেন, “মিস্টার প্রেসিডেন্ট...“ সেখানে আমাদের দেশের দলবাজ সাংবাদিকদের মুখে ফুটে ওঠে, ‍‍`মাননীয় নেত্রী, প্রিয় আপা কিংবা প্রিয় অমুক ভাই, তমুক ভাই।‍‍` থু মারি এ সাংবাদিকতাকে। রাষ্ট্র প্রধান আপনার কবেকার আত্মীয়? কীসের আপা? সবার সামনে ঘনিষ্ঠতা প্রকাশের ধান্দাবাজি কৌশল খাটানো বন্ধ করুন। মাত্র দুই যুগের ব্যবধানে সাংবাদিকতাকে খাদের কিনারে নামিয়েও ক্ষ্যান্ত হননি আপনারা, শেষতক পচা নোংরা ডোবার মধ্যে চুবানোর কাজটিও করে ছাড়লেন।

অনুষ্ঠান কিংবা প্রেসব্রিফিংয়ে `নেত্রী‍‍` বলে কথা বলার শখ হলে দলের উর্দি পড়ে দলীয় কার্যালয়ে চলে যান। `আপা‘ বলার ইচ্ছা জাগলে ব্যুম, ক্যামেরা রেখে নেত্রীর বাসভবনে গিয়ে আত্মীয়তার হ্যাডম দেখান। রিপোর্টারের আইডি গলায় ঝুলিয়ে, হাতে কলম নিয়ে, ক্যামেরা সেটিং করে তারপর নেত্রী, প্রিয় আপা ডাকার এতো শখ জাগে কেন? নাকি অফিসিয়াল কাঠামো, সাংবাদিকতার মৌলিকতা ধুয়ে মুছে গিলে ফেলেছেন? যতসব ইতরের ছা বাচ্চারা !!

আপনি নির্দিষ্ট রাজনীতি, মতাদর্শের ধারক বাহক হয়েও সাংবাদিকতা করতে পারবেন, পত্রিকা ছাপাতেও বাধা নেই। তবে লোগোর সঙ্গে ছোট হরফে হলেও লিখে দিন - ‍‍`এটা কইয়া দিমু দলের মুখপত্র।‍‍` অথবা প্রিন্টার্স লাইনে লেখা যেতে পারে : "এ পত্রিকার সংবাদ ও সম্পাদকীয়তে সরকারের মতামত প্রতিফলিত হয়ে থাকে।" এটাই স্বচ্ছতা। তাতে সাধারণ মানুষ নিরপেক্ষ মিডিয়া ভেবে অন্তত প্রতারিত হবেন না।

 

লেখক- ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সিনিয়র সদস্য

Link copied!