ইগো আমাদের মাঝে এই ভ্রান্ত ধারণার জন্ম দেয় যে, আমি অন্যের চেয়ে সুপেরিয়র বা উত্তম; এবং এতে অন্যের সম্মতি পাওয়া জরুরি। কিন্তু আত্মসম্মান বোধের সাথে অন্যের সম্মতির কোন সম্পর্ক নেই। আত্মসম্মানবোধ জাতি-বর্ণ, ধর্ম-পেশা, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবাইকে সম্মান করতে শেখায়।
ইগো মূলত পার্থিব জিনিসকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়, আর আত্মসম্মানবোধ একটি আত্মিক প্রাপ্তি!
ইগো আমাদের বাধ্য করে অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করতে; কিন্তু আত্মসম্মানবোধ শেখায় নিজের তুলনা ও প্রতিযোগিতা শুধুই নিজের সাথে।
ইগোকে পরিতৃপ্ত করার জন্য, নিজের জন্য মানুষ যে কারো ক্ষতি সাধন করতে পারে; কিন্তু আত্মসম্মানবোধ ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের ক্ষতি সাধনের অন্তরায়।
ইগোর কারনে আমাদের মাঝে সৃষ্টি হয়- রাগ, হিংসা, অধৈর্য, বিদ্বেষ, অহংকার, লোভ এবং ঘৃণা। সঠিক আত্মসম্মানবোধ এই সবগুলো নেতিবাচক অনুভূতি থেকেই দূরে রাখে।
ইগোস্টিক মানুষ মনে করে, তার নিজের মতামতেরই শুধু মূল্য আছে এবং সেই সবসময় সঠিক। কিন্তু একজন আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি প্রত্যেকের মতামতকে সম্মান করেন এবং গুরুত্ব দেন।
আপনি যদি ইগোস্টিক হয়ে থাকেন, তবে যেকোনো সফলতা আপনার মধ্যে অহংকারবোধ সৃষ্টি করবে এবং আপনি ব্যর্থতা মেনে নিতে পারবেন না। অপরদিকে কোন সফলতা বা ব্যর্থতা একজন ব্যক্তির আত্মমর্যাদায় পরিবর্তন আনতে পারে না।
ইগোস্টিক ব্যক্তিদের মাঝে লোক দেখানো স্বভাব প্রবল। তারা সব সময়েই মানুষ তার ব্যাপারে কি ভাববে, সেই বিষয়ে সতর্ক। অপরদিকে আমি নিজে যেমন, তেমনিভাবেই নিজেকে প্রকাশ করার সৎ সাহসকে উৎসাহিত করে আত্মমর্যাদাবোধ।
ইগো আপনাকে সব সময়ই সামনের মানুষটির প্রাপ্য প্রশংসা করতে বাধা দেয়, কিন্তু সমালোচনা করতে উৎসাহিত করে। কিন্তু একজন মানুষ যখন নিজেকে প্রকৃত সম্মান করতে জানেন, তখন সামনের মানুষটিকেও সম্মান করতে তার বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ হয় না।
নিঃসন্দেহে ইগো আপনার চরিত্রের একটি দুর্বল দিক। আর আত্মসম্মানবোধ আপনার চরিত্রের অন্যতম শক্তিশালী দিকগুলোর মাঝে একটি।
এখন বলুন তো- `ইগো` না `আত্মসম্মান!`
আপনি কোন দলে?
শের ই গুল: লেখক, কলামিস্ট
প্রকাশক ও সম্পাদক, দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশ
আপনার মতামত লিখুন :