তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের সাথে বিএনপি এবং বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল।
শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া মৌসুমী আবাসিকের আরসিসি ড্রেনসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে ‘বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত, আওয়ামী লীগের পতন দ্রুত’ মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের এক মাস পর থেকেই বিএনপি সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, আর সরকারকে টেনে নামাতে বহুবার চেষ্টা করে বিএনপিই জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে। তারাই দড়ি ছিঁড়ে পড়ে গেছে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে তারাই ঘি ঢেলেছিল। বিডিআর বিদ্রোহের সাথে বিএনপি এবং বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। বিডিআর বিদ্রোহ যেদিন হয়, সেদিন প্রত্যুষে বেগম খালেদা জিয়া ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তারেক জিয়ার সাথে বহুবার কথা বলেছে। সেই রেকর্ড আমাদের কাছে আছে।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের সরকারকে টেনে নামানোর হুমকি-ধমকি এখন মানুষের কাছে কৌতুক। এগুলোতে এখন হনুমানও ভেংচি কাটে।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার ক্ষমতায় থাকবে কি থাকবে না, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে কি করবে না, সেই সময় দেওয়া-না দেওয়ার মালিক হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ। বাংলাদেশের জনগণ দেশ পরিচালনার জন্য গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। সেজন্যই তিনি দেশ পরিচালনা করছেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জালিয়াতি ও ডাকাতি করেছেন বলে মির্জা ফখরুলের অভিযোগ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে যত কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে সবকিছুই বিএনপি ঘটিয়েছে। তারা প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছিল ইতিপূর্বে। এবার তারা সুপ্রিম কোর্টের ব্যালট ছিনতাই করেছে নির্বাচনী কার্যক্রমকে ভণ্ডুল করার জন্য। নির্বাচনী কার্যক্রমের জন্য প্যান্ডেলসহ যে সমস্ত স্থাপনা করা হয়েছিল সেগুলো ভাঙচুর করেছে। যেভাবে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল তারা, ঠিক সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখন সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেছে বিএনপি। এটার জন্য তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন ঢাকা বারের নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেছিল। সেখানে তারা শোচনীয় পরাজয় বরণ করেছে। তারা সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনের আগেই বুঝতে পেরেছে এই নির্বাচনে তাদের জয়লাভের কোনও আশা নেই। সেজন্য তারা প্রথমে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়, এরপর তারা ব্যালট পেপার ছিনতাই করেছে এবং নির্বাচনী পরিচালনা করার স্থাপনাগুলো ভাংচুর করেছে।
এর আগে আরসিসি ড্রেনসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরাসনের জন্য এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ বরাদ্দ দিয়েছেন। এটি ঢাকা শহরের জন্যও দেওয়া হয়নি। এই প্রকল্পের কাজ চলছে, আশা করি আগামী মৌসুমে আগের মতো জলাবদ্ধতা আর হবে না।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরে পৌনে এক কোটি মানুষ। আমরা পৌনে এক কোটি মানুষ সবাই মিলে যদি ময়লা ফেলি, সিটি করপোরেশনের চার হাজার কর্মীর পক্ষে পরিষ্কার রাখা কোনদিন সম্ভব না। সুতরাং আমাদের নাগরিকদেরও দায়িত্ব আছে রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখা। ড্রেন করার পর সেই ড্রেনে যদি আমরা পলিথিন ও বাসা-বাড়ির ময়লা ফেলি তাহলে সেই ড্রেন কখনো সচল থাকে না। যেটা চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহরে সব জায়গায় হচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুর, ইউরোপ ও আমেরিকার বহু শহর আছে যেখানে থুথু ফেললে জরিমানা দিতে হয়। পৃথিবীর অনেক দেশে গিয়েছি, কোনও দেশে আমাদের মতো যেখানে সেখানে ময়লা ফেলার এই অবস্থা নেই। আমরা যখন বিদেশে যাই তখন কিন্তু যেখানে সেখানে ময়লা ফেলি না। এই অভ্যাস থেকে আমাদের সবাইকে বিরত থাকতে হবে।
একুশে সংবাদ/ব/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :