কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার পতনের ঘণ্টা বাজছে। আমরা বুঝতে পারছি। ১৮০ দিন বা ৬ মাসের পধ্যে শেখ হাসিনার পতন হবে। আগামি নির্বাচনেই তাঁর পতন হবে। আজকে সারা পৃথিবীর মানুষ এই সকারের দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, লুটপাট সনাক্ত করেছে। আজকে তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। নির্যাতন করে, অত্যাচার করে পৃথিবীর কোনো ফ্যাসিস্ট টিকে থাকে নাই। অতএব অত্যাচারের পতন হবেই।`
শুক্রবার (২৬ মে) বিকেল চারটায় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আয়োজনে ১০ দফা অনুষ্ঠিত জন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী।
এ সময় নিতাই রায় চৌধুরী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রমিক, কৃষকের জিবনে নাভিশ্বাস শুরু হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর ক্ষমতা আর এই সরকারের নেই। শেখ হাসিনা যদি মনে করে, তারা বোমা মারবে, আমরা কিন্তু রজনীগন্ধা দিয়ে আপ্যায়ন করবো না। এখন এই দেশকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। আমাদের নেত্রী তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। দেশের মানুষ যাকে মা হিসেবে মানে আজ তাকেই মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রব্যমূলের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং, অবৈধ সরকারের সর্বগ্রাসি দুর্নীতি, গণগ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা দায়ের, জামিন বাতিল ও দমনপীড়নের প্রতিবাদে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে এ চুয়াডাঙ্গা জেলা সাহিত্য পরিষদ প্রাঙ্গনে এই জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জনসমাবেশে প্রধান বক্তা থেকে বক্তব্য দেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার।
প্রধান বক্তা বলেন, ‘আজ সারাদেশে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত কৃষকের ঘরে ঘরে কান্নার রোল। যারা এদেশকে এগিয়ে নিতে পরিশ্রম করে তাদের ঘরে আজ ভাত নেই। পার্বত্য চট্রগ্রামে ক্ষুধার জন্য সন্তানকে বিক্রি করতে চেয়েছেন এক মা। আজকের বাংলাদেশ সন্তান বিক্রির বাংলাদেশ, কৃষকের আত্মহত্যার বাংলাদেশ, ব্যাংক চুরির বাংলাদেশ, ভোট চুরির বাংলাদেশ। তারা আজকে বাংলাদেশকে লুট ও ডাকাতের দেশে পরিণত করেছে। একজন মাননীয় বলেছেন, তার ভয়ে মোখা ঘূর্ণিঝড় পালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির কন্যাকে রাজপথে সন্ত্রাসিরা আহত করেছে। মাথা ফাটিয়েছে। তার কন্যা এখন হাসপাতালের চিকিৎসাধীন। কিন্তু তিনি জনগণের দাবি নিয়ে এখনো আপনাদের মধ্যে। এটাই বিএনপি, এটাই জনগণের পাশে থাকা। আপনারা সন্তানকে জেলে রেখেছেন, কিন্তু আন্দোলন থেকে তার পিতাকে বিরত করতে পারেননি। বাংলাদেশের আকাশে মেঘ জমেছে। রাজনৈতিক ঝড় আসছে। এই ঝড়ে আওয়ামী লীগকে পালাতে হবে। আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার চাই। তারেক রহমানকে দেশে চাই।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফের সঞ্চালনা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনার সভাপতিত্বে জনসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম নজু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক আবু, জিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রীনা।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সদস্যসচিব অ্যাড. সৈয়দ হেদায়েত হোসেন আসলাম, জিবনগর পৌর বিএনপির সমম্বয়ক শাহাজাহান কবির, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো মনিরুজ্জামান মনির, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, দর্শনা পৌর বিএনপির সমম্বয়ক নেতা হাবিবুর রহমান বুলেট, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম পিটু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান।
জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা মৎসজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা।
জনসভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব মওলানা আনোয়ার হোসেন।
সমাবেশে বিএনপি ও দেশ নিয়ে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন আজিজুল রহমান। জনসভায় বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :