সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশের ৮২ সাংগঠনিক জেলায় একযোগে আজ মাঠে নেমেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এ উপলক্ষ্যে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছে দলটি।
বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানী উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়। এটি শেষ হবে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে। পদযাত্রা শুরুর আগে আবদুল্লাহপুরের পলওয়ে মার্কেটের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে বিএনপি।
জানা গেছে, বিএনপির এ পদযাত্রাটি আবদুল্লাহপুরের পলওয়ে মার্কেটের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিমানবন্দর, কুড়িল বিশ্বরোড, নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ, মালিবাগের আবুল হোটেলের সামনে দিয়ে খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদা ও সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হবে।
গতকাল মঙ্গলবার ছিল বিএনপির দুদিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির প্রথম দিন। ওই দিন দলটির নেতাকর্মীরা গাবতলী থেকে পুরান ঢাকার রায়সাহেবের বাজার পর্যন্ত পদযাত্রা করে। এতে সরকারবিরোধী সমমনা দল ও জোটগুলো সংহতি জানিয়ে অংশ নেয়।
প্রথম দিনের মতো আজ দ্বিতীয় দিনও বিএনপির সমমনা দল ও জোটগুলোর পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নেবে। এরমধ্যে বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, পুরানা পল্টনের কস্তুরী গলি থেকে লেবার পার্টি ও পুরানা পল্টন মোড় থেকে সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট পদযাত্রা করবে।
দুপুর ১২টায় কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, একই জায়গা থেকে বিকেল ৪টায় পদযাত্রা করবে ১২ দলীয় জোট। বিকেল ৩টায় গণফোরাম (মন্টু-সুব্রত-সাইয়িদ) ও পিপলস পার্টি মতিঝিল নটরডেম কলেজ এলাকা থেকে পদযাত্রা করবে। একই সময়ে কারওয়ান বাজারের এফডিসি-সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এলডিপির পদযাত্রা শুরু হবে।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এ কর্মসূচির মাধ্যমে এক দফা আন্দোলনের পক্ষে জনসমর্থন আদায় এবং সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে দলটি দেশব্যাপী বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাকা জেলা এবং গাজীপুর মহানগরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার পতন ছাড়া এবার বিএনপি মাঠ ছাড়ছে না।
বিএনপির এই কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়ে একইভাবে রাজধানীর ১১ স্পট থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি বের করে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা ৩৬টি রাজনৈতিক জোট ও দল।
এদিকে বিরোধীপক্ষের উসকানিতে যাতে কোনো প্রকার সহিংসতা, দাঙ্গা-হাঙ্গামা না হয় সেদিকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের। পাশাপাশি ব্যাপক লোকসমাগম ও কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ রাখতে প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানার নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একই দিনে রাজধানীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি থাকায় সতর্কতা অবলম্বন করছে দলটি। এ ছাড়া পদযাত্রা কর্মসূচির শৃঙ্খলা ধরে রাখতে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ১২ জুলাই নয়াপল্টনে কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে বিএনপি অশান্তিতে নয়, শান্তিতে বিশ্বাস করে। এক দফা দাবিও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় হবে। কর্মসূচিতে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। অভিন্ন দাবিতে একই কর্মসূচি ঘোষণা করে সমমনা দলগুলো।
বিএনপির ঘোষিত এক দফার মধ্যে রয়েছে— বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও বর্তমান সংসদ বিলুপ্তি; নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে তার অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা; বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশি সাজা বাতিল এবং সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :