১৯৭৫ সালের বীরপুরুষ কর্নেল জামিল, আমরা সবাই কাপুরুষ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমাদের যাদের বঙ্গবন্ধু ডেকেছিলেন, ভয়ে সাড়া দেননি, তাদের বীরপুরুষ বলা যাবে? আমরা কাপুরুষ। ইতিহাসে এ সত্যকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।’
বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সব সত্য আমরা এখনো জানি না। সব সত্য এখনো বের হয়ে আসেনি। অজানা অনেক তথ্য রয়ে গেছে। সত্য প্রকাশ হবেই। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, সেখানে অনেক সত্য বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু এ সত্য আমরা কতজনে স্বীকার করি? ৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কয়েকজনকে ফোন করেছিলেন। কে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন? সত্য যদি বলতে হয়, শুধুমাত্র কর্নেল জামিল ছুটে এসেছিলেন ৩২ নম্বরে। আমাদের কোনো নেতা আসেননি। আমরা কেউ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৩২ নম্বরে আসিনি। ঘাতকরা যখন গুলি করছিল তখন বঙ্গবন্ধু কর্নেল জামিলকে ফোন করেছিলেন, কর্নেল জামিল কোনো বাধা মানেননি। তিনি ছুটে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভবনের দিকে, আর তাকে পথের মধ্যেই হত্যা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বিবেকের কাছে অপরাধী। বঙ্গবন্ধুর জন্য আমরা বড় পদে এসেছি, বড় নেতা হয়েছি। জামিল যে সাহস, আনুগত্য, দেশপ্রেম দেখিয়েছিলেন সেটা কি কোনো পলিটিশিয়ান দেখাতে পেরেছেন? পারেননি। এটাই সত্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগস্ট মাস এলে বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে যায়। সত্যের মুখোমুখি হতে তারা ভয় পান। ইতিহাসের অনেক প্রশ্ন আছে, সেই প্রশ্নের জবাব বারবার চেয়েও তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞেস করেছিলাম, ১৫ আগস্টের খুনিদের নিরাপদে বিদেশে পাঠাল কে? তাদের বিদেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করল কে? জিয়াউর রহমান।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘হত্যা যে করেন আর হত্যায় যে মদদ দেন, উভয়ই সমান অপরাধী। হত্যাকারীদের দুঃসাহস দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানের দুঃসাহস না হলে পৃথিবীতে এ ঘটনা ঘটত না।’
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলকে আমি বারবার একই প্রশ্ন করেছি। খন্দকার মোস্তাকের সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাংলাদেশের সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করেছিল কে? জিয়াউর রহমান। পঞ্চম সংশোধনী কে করেছিল? আব্বাস যখন বলেন সংবিধানের কাঁটাছেড়া করেছে আওয়ামী লীগ, তাদের কাঁটাছেড়া সংবিধান আমরা মানি না, মির্জা আব্বাসের লজ্জা করে না? জিয়াউর রহমান এ সংশোধনী এনেছিলেন বঙ্গবন্ধু খুনিদের বিচার বন্ধ করতে।’
কাদের বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে দেখলাম ষষ্ঠবারের মতো আরেকটা জন্মদিবস। কোন দিন? ১৫ আগস্ট। আগে কিন্তু ছিল না ১৫ আগস্ট। হঠাৎ করেই ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিবস। বিএনপিকে জিজ্ঞেস করি- একজন মানুষের কয়টা জন্মদিবস থাকে? ছয় ছয়বার জন্মদিবসের কথা যখন আমি বলি, তখন ফখরুল বলেন শিষ্টাচার বহির্ভূত, মিথ্যাচার, বিষোদগার। ক্ষমা করবে না ইতিহাস।’
একুশে সংবাদ/ঢ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :