বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার লক্ষ্যছিল আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাকরা। একই সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের হত্যার মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য।
সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা নাকি এর সাথে জড়িত নয়। এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতিটাই মিথ্যাচারে ভর করে আছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একজন প্যাথোলজিক্যাল লায়ার। মিথ্যাবাদী, চরম মিথ্যাবাদী।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সন্ত্রাস-মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের অভয়াশ্রম বিএনপি- জামায়াতের নির্দেশে ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা দিবস স্মরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, গতকাল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা নাকি এর সাথে জড়িত নয়। তার এই কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম। অথচ তিনি নাকি আগে শিক্ষক ছিলেন। কোথায় শিক্ষক ছিলেন, আমি তা জানি না। একজন শিক্ষক এত নির্লজ্জ মিথ্যাবাদী হতে পারে, আমি তা আগে কখনো দেখি নাই! উনি একটা প্যাথোলজিক্যাল লায়ার।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সাথে একই সূত্রে গাঁথা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। এটা বর্বোরচিত গ্রেনেড হামলা, এটা পৃথিবীর ইতিহাসে আরেকটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। বাঙালি জাতির জন্য এটি একটি কলঙ্কময় দিন।
তিনি আরো বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত নেতাকর্মীদের হাসপাতালের নিয়ে যাওয়ার বিষয়েও নানা টালবাহানা করা হয়েছে। বিভিন্ন ক্লিনিকে আহতদের চিকিৎসা করতে হয়েছে। বেগম আইভি রহমানকে সিএমএইচ-এ ভর্তি নিবে না, অনেক টালবাহানা করা হয়েছে। সেই সিএমএইচ এ আমাদের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা দেখতে যাবেন, কিন্তু তাঁকে গেইটে আটকে দেওয়া হলো। গাড়ি ঢুকতে দেবে না। এরপর নেত্রী পাঁচ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে সিএমএইচ এ গিয়েছিল! কতটা পৈশাচিক হলে এই রকম কর্মকাণ্ড করতে পারে।
হানিফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আহতরা যখন মুমূর্ষু অবস্থায় তখন নাটক করার জন্য দেখতে গেলেন। তখন আইভি রহমানের পুত্র, কন্যাকে পাশের রুমে আটকে রাখা হলো তালা দিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা! কী নিষ্ঠুর আচরণ ছিল। শুধু তাই নয়, সংসদে বসে খালেদা জিয়া বললেন, শেখ হাসিনাকে কে মারতে যাবে? উনি নিজে ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গেছে। কী নিষ্ঠুর রসিকতা ছিল এটা!
বিএনপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, ভুলে গেছেন আজকে। আপনারা যদি ঘটনা নাই ঘটাবেন, কেন মিথ্যাচার করলেন? কেন মামলার আলামত নষ্ট করলেন? কেন আপনারা তড়িঘড়ি করে জঙ্গিদের ভুয়া পাসপোর্ট দিয়ে ওই রাত্রে বিদেশে পাঠিয়ে দিলেন। আমার প্রশ্ন-জঙ্গিদের সাথে সম্পৃক্ত না থাকলে কেন তাদের পাঠাতে হলো? যে ক্যাপ্টেন আলামত রাখতে বলেছিল তাকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সবই তো আজকে ইতিহাসে চলে এসেছে। কিন্তু এখনো আপনারা নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। কিন্তু মিথ্যাচার করে পার পাওয়া যাবে কি? এটা ভাবার কোন কারণ নেই৷ আজকে প্রমাণিত হয়েছে ওই ঘটনার সাথে আপনাদের দলই নয়, বরং সরকারও ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল।
একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :