বিএনপি-জামায়াতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিক দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল সাতটা থেকে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর মহাখালী, তেজগাঁও, বিজয় সরণি, সাতরাস্তা,মগবাজার, কাকড়াইল মোড়, কারওয়ান বাজার, এলাকায় রাস্তায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা বেশি দেখা গেছে। বাস চলাচলও ছিল প্রায় অন্যান্য দিনের মতোই। ব্যক্তিগত গাড়ি কিছুটা কম।
তেজগাঁওয়ে সকালে মালবাহী পিকআপ, ট্রাক চলতে দেখা গেছে। ঢাকায় ট্রেন ঢুকতে এবং বের হতে দেখা গেছে ।
মঙ্গলবার ভোর থেকে ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সারাদেশে মহাসড়ক, রেল ও নৌপথে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামীও এই তিন দিন অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে।
এদিকে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনো ধরনের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সারাদেশে প্রস্তুত রয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। আনসার, পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে বিজিবি। নাশকতার চেষ্টা হলে মাঠে পুলিশ ও র্যাব কঠোর অবস্থানে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর পক্ষ থেকে এমন ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ থেকে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে একজন পুলিশ সদস্য নিহত এবং ৪১ পুলিশ সদস্য আহত হন। এমন পরিস্থিতি মাথায় রেখে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিন দিনের অবরোধে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে।
এছাড়াও বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধে সকাল থেকে রাস্তায় সরকার দলিও লোকজনকে নাশকতা বিরোধী মিছিল দিতে দেখা গেছে। অবরোধ চলাকালীন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও নাশকতার তথ্য থাকলে ৯৯৯-এ কল করে তথ্য জানাতে পুলিশ সদর দফতর থেকে বলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, অবরোধে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষা করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র্যাব। দেশব্যাপী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব ফোর্সেসের ১৫ ব্যাটালিয়নের তিন শতাধিক টহল দল নিয়োজিত থাকবে। পাশাপাশি দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম চলবে। কেউ যদি কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতার পরিকল্পনা করে তাকে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক দেশব্যাপী নিয়োজিত থাকবে র্যাব।
অবরোধে সহিংসতা মোকাবিলায় ঢাকাসহ সারা দেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির দায়িত্বরত কর্মকর্তা লে. কর্নেল হাসানুর রহমান বলেন, সোমবার রাত থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, রাজধানীসহ সারা দেশে বিজিবি টহল দেবে। যেকোনো সহিংসতা বা অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধ মোকাবিলা করবে বিজিবি। তবে কত প্লাটুন বিজিবি নামানো হয়েছে সে ব্যাপারে তথ্য দেননি তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. হাবীবুর রহমান বলেন, অবরোধের নামে কোনো ধরনের নাশকতা বা সহিংসতার সৃষ্টি করলে ছাড় দেবে না পুলিশ। জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। সহিংসতা ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে অ্যাকশনে থাকবে পুলিশ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :