দফায় দফায় অবরোধ হরতালের ডাক দিচ্ছে বিএনপি ও জোট সঙ্গী যুদ্ধাপরাধী জামায়াত। কিন্তু সাধারণ মানুষ তা তোরাই কেয়ার করছে। কাকডাকা ভোর থেকেই ঢাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়ত স্বাভাবিক রয়েছে। বেলা বাড়ার সমঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় যানজটও বাড়তে থাকে।
ঢাকার বিভিন্ন মোড়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতরাতে (শনিবার) রাজধানীতে তিনটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটলেও, সকাল থেকে এখনো পর্যন্ত কোথাও ঘটেনি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা।
খিলগাঁও, ফকিরেরপুল, নয়াপল্টন, দৈনিক বাংলার মোড়, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় দেখা গিয়েছে স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য। এছাড়া ঢাকায় গণপরিবহণ সংখ্যাও বেড়েছে।
অবরোধ-হরতালের শুরু থেকেই ঢাকাসহ সারা দেশে জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক। তবে বিপুল সংখ্যক যানবাহন পুড়িয়ে দেবার ঘটনা ঘটে। ককটেল-বোমাবাজী করতে গিয়ে বিএনপির অনেক কর্মী আটক হয়েছে। নাশকতার ঘটনায় আটক হয়েছে অনেক নেতাকর্মী।
নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির ডাকা নবম দফা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীর জনজীবনে তেমন কোনও প্রভাব ফেলেনি। স্বাভাবিকভাবেই চলছে গণপরিবহন। তবে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় কম। আর দূরপাল্লার গাড়ি চলছে না বললেই চলে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর গাবতলীতে দেখা গেল, সাধারণ মানুষ দূরের জেলাগুলোতে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন বাস টার্মিনালে।
কাউন্টার খুললেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পাওয়ার কারণে বাস ছাড়তে পারছেন না বলে জানিয়েছেন কাউন্টার ম্যানেজাররা। যাত্রী হলেই দূরপাল্লার বাসও ছাড়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কমলাপুর, পল্টন ও মতিঝিল এলাকার অবস্থাও প্রায় স্বাভাবিক। সাধারণ দিনের মতোই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা ও গণপরিবহনের সংখ্যা।
এর আগে, অবরোধ শুরুর আগের রাতেই রাজধানীজুড়ে শুরু হয় অগ্নি সন্ত্রাস। রাজধানীর সায়েদাবাদ, গাবতলীও আগারগাঁওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধ সমর্থকরা। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সায়েদাবাদে আসমানী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। চালক জানান, বোরকা পরে যাত্রীবেশে বাসে উঠেছিল একজন। বাসটি সায়েদাবাদে পৌঁছালে আগুন দিয়ে নেমে যায় সেই ব্যক্তি। এ সময় স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর কিছুক্ষণ পরই আগারগাঁও বেতার ভবনের সামনে ভূঁইয়া পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। পুড়ে যায় পুরো বাসটি।
এদিকে, রাত ১১টার পর গাবতলীতে পদ্মা প্লাস পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। স্থানীয়রা পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
যাত্রাবাড়ী থানার সায়েদাবাদ করাতিটোলা স্কুলের পেছনে আসমানী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেন অবরোধকারীরা। ছবি: সময় সংবাদ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির ডাকা এ দফা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে সকাল ৬টা থেকে।
এর আগে, বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত অষ্টম দফায় বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর ডাকা দেশজুড়ে ২৪ ঘণ্টার অবরোধ চলে। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল পালন করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এক পুলিশ সদস্য নিহত হন। পরদিন ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে বিএনপি। এরপর বিভিন্ন মেয়াদে এ নিয়ে ৯ বার অবরোধের ডাক দেয় দলটি।
একুশে সংবাদ/এএইচবি/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :