জাতীয় সংসদের উপনেতা, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর আয় কমেছে পাঁচগুণ। অস্থাবরের পরিমাণ কিছুটা বাড়লেও স্থিতি অবস্থায় আছে স্থাবর সম্পত্তি।
দ্বাদশ ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় দেখা গেছে, মতিয়ার মোট আয়ের পরিমাণ ৩ কোটি ১৭ লাখ ৪২ হাজার ১১০ টাকা। অপরদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় দেখানো হয়েছে ৬২ লাখ ৬১ হাজার ৫৫৪ টাকা। অর্থাৎ গতবারের তুলনায় এবার তার আয় কমেছে পাঁচগুণ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃষি খাতে মতিয়া চৌধুরীর আয় দেখানো হয়েছে ৫০ হাজার, বাড়ি/এপার্টমেন্ট ও দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ ৭৮ হাজার ৭৫০ টাকা, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমাতন বাবদ ২ কোটি ৮১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৪ টাকা, চাকরি বাবদ ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, অন্যান্য (বক্তৃতা, টিভি সম্মানি ও অন্যান্য) ২১ লাখ ৮৭ হাজার ৮৯৬ টাকা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃষি খাতে আয় দেখানো হয়েছে ৭৫ হাজার, বাড়ি/এপার্টমেন্ট ও দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ ৭৮ হাজার ৭৫০ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমাতন বাবদ ৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯২৫ টাকা, চাকরি বাবদ ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৩১ টাকা, অন্যান্য (বক্তৃতা, টিভি সম্মানি ও অন্যান্য) ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ৮৪৮টাকা।
মতিয়া চৌধুরীর একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে তার আয় কম-বেশির খাতগুলো হলো- কৃষি খাতে আয় বেড়েছে ২৫ হাজার, বাড়ি/এপার্টমেন্ট ও দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ আয় একই আছে, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত বাবদ কমেছে ২ কোটি ৭২ লাখ ৯৫ হাজার ৫০৩ টাকা, চাকরি বাবদ কমেছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৯৬৯ টাকা ও অন্যান্য (বক্তৃতা, টিভি সম্মানি ও অন্যান্য) খাতে আয় বেড়েছে ২১ লাখ ১০ হাজার ৯৫২ টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৭ কোটি ৫০ লাখ ৯১ হাজার ৩০৫ টাকা এবং দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দেখানো হয়েছে ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৫ হাজার ৮৩৭ টাকা। এই পাঁচ বছরে তার মোট অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ২ কোটি ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৫৩২ টাকা। এছাড়াও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দেখানো হয়েছে উত্তরাধিকার সূত্রে পৌনে চার একর কৃষি জমি যার মূল্য অজ্ঞাত, অকৃষি জমি ও অর্জনকালীন সময়ে ঢাকার সাতারকুল মৌজায় অর্ধ বিঘা যার মূল্য ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা, ঢাকার মধ্যবাড্ডা এলাকায় ৫ কাঠার একটি প্লটের মূল্য উল্লেখ করেননি, কিন্তু এবার তার মূল্য ধরা হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা, এছাড়াও ঢাকার আশুলিয়া ১টি প্লট আছে যার মূল্য দুবারই উল্লেখ করা হয়েছে ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা ও একটি বাড়ির মূল্য আগের মতোই ৪ লাখ ৯৮ হাজার ২৯৫ টাকা দেখানো হয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম মোস্তফা কামাল বলেন, অগ্নিকন্যা বেগম মতিয়া চৌধুরী একজন সৎ মানুষ, বাইরের কোন আয় নেই, উনি সংসদ সদস্য হিসেবে যা বেতন পান তা দিয়েই উনার খরচ চালান। আয় বাড়ার সুযোগ নেই, তাই আয় কমার বিষয়টি স্বাভাবিক ব্যাপার।
নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ বলেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী সাধারণভাবে জীবন-যাপন করেন। উনার অর্থের প্রতি কোনো লোভ নেই। তিনি একজন ভালো মনের মানুষ। উনার মূল উদ্দেশ্য জনগণের সেবা করা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :