অগ্নিসন্ত্রাসদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জীবন নিয়ে কাউকে খেলতে দেবো না। আমরা মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করি। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করি। আর তারা আসে মানুষের ধ্বংসের জন্য।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে রংপুরের পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, মানুষের জন্য আমরা রাজনীতি করি। মানুষকে হত্যা করে, মানুষ খুন করে কী আন্দোলন? প্রত্যেককে সজাগ থাকতে হবে। অগ্নিসন্ত্রাস যারা করতে আসবে, তাদের সাথে সাথে ধরে শাস্তি দিতে হবে। পুলিশে দিতে হবে। মানুষের জীবন নিয়ে আমরা কাউকে খেলতে দেব না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখলকারী স্থিতিশীলতা চায় না। অগ্নিসন্ত্রাস আর জ্বালাও-পোড়াও বিএনপির আন্দোলন। তারা যেন বাস, ট্রাক আর ট্রেনে আগুন দিতে না পারে সে দিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসে জনগণের সেবা করতে। জাতির পিতাকে হত্যা করে যারা ক্ষমতায় এসছিল, তারা এসেছিল লটপাট করতে। লুটপাট, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ, মাদক এগুলোই ছিল তাদের কাজ। তারা মানুষের কল্যাণে কোনো কাজ করেনি।
তিনি আরও বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই প্রত্যেকের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। শিক্ষায়-দীক্ষায় সব দিকে দিয়ে মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে। সব থেকে বেশি মঙ্গা পীড়িত এলাকা এই রংপুর, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আর কোনো দিন মঙ্গা হয়নি। এই ব্যাপারে আপনাদের সাহায্য দরকার। আপনাদেরও নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি স্বাধীন বাংলার দুঃখি মানুষের উন্নয়নে সারা জীবন কাজ করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা সে সময় আমাকে দেশে আসতে দেয়নি। কিন্তু আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি আপনাদের জন্য দেশে আসতে পেরেছি।
গত ১৫ বছরে দেশের মানুষের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৫ বছর আগে কী অবস্থা ছিল, আজ কী অবস্থা। যে পরিবর্তন হয়েছে, সেটা করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা মানুষের জীবনমান উন্নত করতে কাজ করছি। দেশের মানুষকে শিক্ষিত করতে এবং প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ জনশক্তি গড়তে কাজ করে যাচ্ছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কৃষকদের বিনা জামানতে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। কৃষকদের ভর্তুকি দিয়েছি। বয়স্কভাতা, স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতাসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তুলেছি। কমিউনিটি হাসপাতালগুলোকে শক্তিশালী করেছি। আমরা রংপুরকে বিভাগ ঘোষণা করে সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করছি।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের জনসভামঞ্চে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বক্তব্য দেন। নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি।
জনসভায় যোগ দেয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী পীরগঞ্জের ফতেহপুরে তার স্বামী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত এম এ ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত করেন। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সেখানেই তিনি দুপুরের খাবার খান।
এর আগে, সকাল সোয়া ১০টার দিকে গণভবন থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ১১টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে সড়কপথে তারাগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে পৌঁছান। সেখানে জনসভায় অংশ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি পীরগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। পথে মিঠাপুকুর উপজেলায় রংপুর-৫ আসনের নৌকার প্রার্থী রাশেক রহমানের একটি নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :