পবিত্র ঈদ উল আজহার ছুটির পূর্বে প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য মালিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে শ্রমজীবী মানুষরা আনন্দে উদ্বেলিত হয়। ঈদে পরিবার-পরিজনের নতুন পোশাক ক্রয় ও একটু ভালো খাবারের আয়োজনের জন্য আশায় বুক বাঁধে। সাম্প্রতিক বছরগুলো আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের উৎসব ভাতা ও বেতন নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। বিশেষ করে গত ঈদে তৈরি পোশাক শিল্পের প্রায় ৫০০ কারখানার শ্রমিকদের উৎসব ভাতা ও বেতন ছাড়া ছুটি দেওয়া হয়েছে। আশা ভঙ্গের হতাশায় শ্রমিকরা সেই সময় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। বিভিন্নস্থানে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এইবার যেন একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য মালিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা প্রত্যাশা করছি শ্রমিকদের উৎসব ভাতা ও বেতন ঈদের ছুটির পূর্বে পরিশোধের জন্য মালিকরা যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
নেতৃদ্বয় বলেন, প্রতি ঈদের আগে বেতন-ভাতার জন্য শ্রমিকদের রাজপথে নেমে আসার সংস্কৃতি কোনোভাবে ভালো বার্তা দেয় না। শ্রমিকরা রাজপথে নেমে এলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার ফলাফল সুখকর নয়। অতীতে দেখা গেছে শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সংঘাত আরও বাড়িয়ে দেয়। এসব সংঘাতে সবচেয়ে ক্ষতি হয় শ্রমিকদের। বিগত বছরের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে ৪ জন শ্রমিকের নিহতের ঘটনা যার প্রত্যক্ষ সাক্ষী। আমরা শ্রমিকদের রাজপথে দেখতে চাই না। আমরা কোনো সংঘাত-সংঘর্ষ চাই না। সংঘাত-সংঘর্ষে হতাহত শ্রমিকদের পরিবারকে নিঃস্ব করে দেয়। তাদের জীবন থেকে চিরতরে ঈদের আনন্দ হারিয়ে যায়। সুতরাং শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করুন। শ্রমিকরা সন্তুষ্ট মনে ঈদে বাড়ি ফিরলে ঈদ পরবর্তীতে স্বতঃস্ফূর্ত মনে কাজে যোগ দিবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত কলকারখানাগুলো আজকে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। বিশেষ করে বস্ত্রকল, চিনিকল ও পাটকলের শ্রমিকরা কর্মহীন অবস্থায় জীবনযাপন করছে। একই সাথে করোনার সময় চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা এখনো কর্মে ফিরতে পারেনি।
এছাড়াও প্রতিনিয়ত গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। এসব শ্রমিকদের জীবনে ঈদের আনন্দ বলতে বলতে কিছু নেই। অন্যদিকে দেশের দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। যারা দিন এনে দিন খায়। এসব শ্রমিকদের সঞ্চিত অর্থ-সম্পদ নেই। ফলে আনন্দ-উৎসবে ও বিপদ-আপদে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। আসন্ন ঈদের আনন্দ কর্মহীন ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের ঘরে পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :