জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলো।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ ধারা অনুযায়ী জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অবশ্য জামায়াতে ইসলামী একটি যুদ্ধাপরাধী দল। বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কয়েকটি মামলার রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যদিও ওই আইনে শুধু মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ব্যক্তির অপরাধের বিচার করার কথা বলা হয়েছে। এ কারণে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার করা যায়নি।
অবশ্য নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে। ফলে দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। এ নিয়ে জামায়াতের করা মামলা ইতিমধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী নাশকতার জন্য জামায়াত–শিবিরকে দায়ী করেছে সরকার।
এর পরই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই বৈঠকের পর সরকার নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া শুরু করে।
নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তালিকাভুক্তকরণ:
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনঃনিরীক্ষার আবেদন নামঞ্জুর করা হইলে, উক্ত সংক্ষুব্ধ 43 আবেদন নামঞ্জুর হইবার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল দায়ের করিতে পারিবে।
(৩) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (১) এর অধীন দায়েরকৃত পুনঃনিরীক্ষার দরখাস্তসমূহ নিষ্পত্তির জন্য একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট পুনঃনিরীক্ষা কমিটি (Review Committee) গঠন করিবে।
তালিকাভুক্ত ব্যক্তি বা নিষিদ্ধ সত্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ :
উল্লেখ্য, আদালতের রায়ে নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। জামায়াতের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের পক্ষের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায়ও কার্যকর করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। কিন্তু কয়েক বছর আগে সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হলেও পরে সে বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি।
একুশে সংবাদ/ এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :