বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) ছিলেন সকল মানুষের প্রিয়পাত্র। রাসুল (সা.) কে মানুষেরা আল-আমিন বলে অভিবাদন করতো। যেকোনো সমস্যা সমাধানে তার উপর দায়িত্ব অর্পণ করতো। তিনি সার্বজনীন নেতা ছিলেন।
তিনি আজ (শনিবার) দুপুরে রাজধানীর আল ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত বাছাইকৃত দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম-এর সভা সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা এটিএম মা’ছুম ও অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমাদ, মাস্টার শফিকুল আলম, মনসুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম ও মো. মহিব্বুল্লাহ প্রমুখ।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেন, একজন নেতাকে সার্বজনীন হতে পারলে তাকে সকলে নেতা হিসাবে গ্রহণ করবে। একজন নেতার আদর্শিক-রাজনৈতিক বিরোধীতা থাকতে পারে। তার চলার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। নেতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হামলা হবে। মামলা করা হবে। এমনকি তাকে মেরে ফেলার চক্রান্তও হতে পারে। কিন্তু তারা দিনশেষে দেশের মানুষ তাকে নেতা হিসাবে স্বীকৃতি দিবে। একজন নেতাকে যদি জনগণ চিনতে পারে তাহলে তাকে গ্রহণ করবে। কিন্তু জনগণ যদি তাকে চিনতে না পারে তাহলে তাতে গ্রহণ করার প্রশ্ন উঠেই না। আমাদের দেশে সভাপতির অভাব নেই। কিন্তু সত্যিকারের নেতার প্রচণ্ড অভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, নেতা হলেন ঐ ব্যক্তি যিনি সংগঠনকে সামনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। একজন নেতা জানেন কোথায় যেতে হবে। সে অনুযায়ী তিনি পথ দেখান এবং সে পথে কর্মীদের এগিয়ে নিয়ে যান। যদি নেতা একাই এগিয়ে যান তাহলে সেখানে সংগঠনের কোনো কাজ হবে না। একজন ডায়নামিক নেতা নিজে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সংগঠনকে সাথে করে এগিয়ে নিয়ে যান। একজন নেতা সংগঠনের কর্ম পরিধি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন এবং সকল জনশক্তিদের মাঝে কর্ম সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করে দেন।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেন, দেশে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই। তবে গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই অন্তবর্তীকালীন সরকারকে দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য সংস্কার ন্যূনতম সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। আগামীতে দেশে যেনো আর কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার ফিরে আসতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশে এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। শ্রমজীবী মানুষসহ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ভার কমানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্টরা উস্কানি দিচ্ছে। আবার প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুগতরা এখনো বসে আছে। এই সকল ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, রাসুল (সা.)-এর জীবানাদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের জীবন গঠন করতে হবে। রাসুল (সা.) শ্রমিকদের অধিকার ও সম্মানের ব্যাপারে অনুকরণীয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তিনি বলেছেন, শ্রমিকের শরীরের ঘাম শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বে তার মজুরি পরিশোধ করতে। আমাদের সমাজ রাষ্ট্রে এই নির্দেশনার প্রয়োগ ঘটাতে হবে।
অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ বলেন, শ্রমিকদের কাছে ইসলামী শ্রমনীতির দাওয়াত সহজ সরল ভাষায় পৌঁছে দিতে হবে। তাদের জন্য সহজ ভাষায় বই রচনা করতে হবে। শ্রমিকরা ইসলামের সুমহান দাওয়াত পেলে তারাও এই আদর্শিক পথে অংশীদার হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কাজকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করার জন্য কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যত পেশা তত ট্রেড ইউনিয়ন স্লোগানকে বাস্তবরূপ দান করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের আন্দোলনকে চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে ধাবিত করতে হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :