AB Bank
ঢাকা সোমবার, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অহেতুক বিতর্ক না করে দ্রুত নির্বাচন দিন


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৯:২১ পিএম, ৩ জানুয়ারি, ২০২৫
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অহেতুক বিতর্ক না করে দ্রুত নির্বাচন দিন

সংস্কার আগে, নাকি নির্বাচন আগে—এই বিষয় নিয়ে অহেতুক বিতর্ক দেশকে আরও গভীর সংকটে ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও রোডম্যাপ ঘোষণা করা অত্যন্ত জরুরি।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ‘ঢাকা সমাবেশে’ সিপিবি নেতারা এই দাবি জানান। সমাবেশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে সিপিবির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ঢাকার বিভিন্ন সড়কে লাল পতাকা মিছিল করেন।

সমাবেশে বক্তব্যে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়ে সিপিবির সভাপতি শাহ আলম বলেন, সরকারের সংস্কার প্রস্তাবের উদ্দেশ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে এটি ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে সংস্কার আগে, নাকি নির্বাচন আগে- এ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করছে কোনো কোনো মহল। সংস্কার ও নির্বাচন সাংঘর্ষিক নয়। এটি একে অপরের পরিপূরক। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আগেও স্বৈরাচারী সরকার বলত, গণতন্ত্র চান না উন্নয়ন চান। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন সাংঘর্ষিক ছিল না। একই গোলকধাঁধায় ঘুরতে থাকলে সহস্র শহীদের আত্মদানের ফলে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশ সংকটের মধ্যে পড়বে।

গণতন্ত্র এবং বৈষম্যমুক্ত সমাজের আকাঙ্ক্ষা জুলাই-আগস্টের মূল লক্ষ্য ছিল বলে উল্লেখ করেন সিপিবি সভাপতি। তিনি বলেন, দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসছে না। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অতি সত্বর নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও রোডম্যাপ ঘোষণা করে দেশ জাতিকে সংকট থেকে মুক্ত করতে হবে।

নিয়মিত সরকার প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করতে হবে। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রকৃত অপরাধীদের তথ্য যাচাই-বাছাই করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

সমাবেশে সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, জরুরি সংস্কার করে দ্রুত জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। তাই সমাবেশে বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে জরুরিভাবে নির্বাচন দিয়ে জনগণের রায়ের সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কলঙ্কিত করেছে উল্লেখ করে সেলিম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগ মিথ্যা বয়ান দিয়েছিল। ওই বয়ান দিয়েছিল লুটপাটের জন্য। তারা ২৮ লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে। লুটপাট করতে ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করছিল। আমাদের প্রথম কর্তব্য হবে, এই ফ্যাসিস্ট শাসন আর যাতে বাংলার মাটিতে স্থান করে নিতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা।

সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জরুরি কাজ হলো আর দেরি না করে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা। এর কোনো বিকল্প নেই।

অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের ওপর ভরসা রাখতে হবে। তা না করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাইলে নানা অপশক্তি সুযোগ নেবে। তাই নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা, নিত্যপণ্যের দাম কমানো এবং জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি মনে করেন একটু উল্টিয়ে দিয়েছি, ক্ষমতায় অনেক দিন থাকি। থাকতে কি পারবেন? নানা ধরনের ছলে বলে কৌশলে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায়। আমরা বলতে চাই, ভোট জনগণ দিতে পারেনি। ভয়ের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গিয়েছিল, এসব কারণে মানুষ বিক্ষুব্ধ ছিল। এ জন্য হাসিনাকে দেশছাড়া করা হয়েছিল। আর আপনি যদি সংস্কারের ট্যাবলেটের কথা বলে জিনিসপত্রের দাম কমাতে না পারেন। জনজীবনে শান্তি দিতে না পারেন। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক-আইএমএফের কথা শোনেন। তেলের দাম-গ্যাসের দাম কমাতে না পারেন। নতুন করে ভ্যাট বসিয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ান। তাহলে আপনি তো একই পথে চলছেন।

অরাজনৈতিক শক্তি অন্য কারও মদদে যাতে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে না পারে, সে জন্য দ্রুত ভোটের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, কোনোভাবে অভ্যুত্থানের শহীদদের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত হতে দিতে পারি না। অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করবে, সেটাও আমরা চাই না। তবে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দৃশ্যমান কাজ নেই।

সমাবেশ থেকে জানানো হয়, জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির সঙ্গে মতবিনিময় করবে সিপিবি। ২১ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচি পালিত হবে। এই সময়ে দেশের অন্তত হাজার কিলোমিটারজুড়ে পদযাত্রা করা হবে। মানুষের ঘরে ঘরে যাবেন সিপিবি নেতাকর্মীরা।

 

একুশে সংবাদ/এনএস

Link copied!