রাজনৈতিক দল গঠন বা পদত্যাগের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার তথ্য ভবনে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এতে উপদেষ্টা পরিষদে তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি স্থান পেয়েছেন।
এছাড়াও, ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠিত হয়। এর পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটি মিলে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি অভিযোগ করেছে, সরকারে থাকা ছাত্র প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক দল গঠনে যুক্ত হয়েছেন। এতে আসন্ন নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল আসছে। এসে মহাসচিবের দায়িত্ব পেতে পারেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। নতুন দলে জায়গা করে নিতে নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করছেন বলেও দাবি করা হয় প্রতিবেদনটিতে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘রাজনৈতিক দল গঠন বা পদত্যাগ নিয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। এ ধরনের সংবাদ প্রচারে আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।’
আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার সুযোগ থাকা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তথ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার সুযোগ থাকা উচিত না। যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিল না, তারা সাধারণ ক্ষমা পেতে পারেন। যেকোনো আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে ফ্যাসিবাদের দোসর সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করলে সরকার কঠোর হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র ইস্যুতে বিএনপি দেরি করছে, তারা আরও সময় চাইছে।’
এর আগে অনুষ্ঠানে ১২৭ সাংবাদিক ও তাদের পরিবারকে ৭৯ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শহিদ ও আহত সাংবাদিকদের পাশে থাকবে সরকার। তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে। গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের ভূমিকা কি ছিল, তা নিয়ে আরও বেশি আলোচনা করা প্রয়োজন। সাংবাদিকদের ভিতর থেকেই এই আলোচনা হওয়া উচিত।’
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কিছু সাংবাদিক অপ্রচার চালাচ্ছে বলেও দাবি করেন এই উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে মিসইনফরমেশন, ডিজইনফরমেশন ছড়ানো হচ্ছে। গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের কর্মকাণ্ড নিয়ে সংশ্লিষ্ট হাউজের কথা বলা উচিত, ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
নির্বাচনের আগে সংস্কার প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের ভিত্তি তৈরি করতে চাই। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। তবে বিচার নিয়ে বেশি কথা বলা উচিত এখন। শেখ হাসিনার বিচার অবশ্যই করা হবে, রিকন্সিলিং সম্ভব হবে এভাবেই। নৈতিকতা বাদ দিয়ে গণহত্যায় যারা ভূমিকা রেখেছে, তাদের সামাজিক বিচার হওয়া উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ভিন্নমত থাকতে পারে, কিন্তু ঐক্য আছে।’
একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :