কুমিল্লায় যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি এই হত্যাকাণ্ডকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলের ধারাবাহিকতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেনের সই করা এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলামকে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা করেছে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, এবং তিনি প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, এই নির্মমতা বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তিরই প্রতিফলন।
তিনি আরও বলেন, ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা থেকে জাতিকে মুক্তি দেয়া এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ভয়ভীতি থেকে জনগণকে নিরাপদ রাখা। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে দেশে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা ফিরে আসবে, যা মানুষের মধ্যে অজানা আশঙ্কা সৃষ্টি করবে।
ফখরুল বলেন, তৌহিদুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জনমনে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় দেশবাসী হতবাক হয়েছে। সরকার ও প্রশাসনে আওয়ামী দোসররা ঘাপটি মেরে থেকে রক্তাক্ত ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না সেটি নিয়ে গভীর অনুসন্ধান জরুরি।
তিনি বলেন, কোনো সরকারি বাহিনীই আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। অপরাধ সংঘটনকারী যতই শক্তিশালী হোক, তাকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া আইনের শাসনের অন্যতম শর্ত। কিন্তু কখনোই বিচারবহির্ভূতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করার কোনো অধিকার সরকারি বাহিনীগুলোর নেই। আমি তৌহিদুল ইসলামকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেআইনি হত্যা করে কখনোই সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা যায় না, এতে আইনের শাসনকে চরমভাবে অবজ্ঞা করা হয় এবং দেশকে ঠেলে দেওয়া হয় আদিম অন্ধকারের দিকে।
তৌহিদুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর আহ্বান জানিয়ে নিহতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।
একুশে সংবাদ/ব.জ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :