প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় পর দেশের মতো প্রবাসেও এবার এক ভিন্ন পরিবেশে নতুনভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করেন মালদ্বীপ প্রবাসীরা।বাংগালী জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের সেরা দিনটি আজ উদযাপনও করেছে ভিন্ন আমেজে, ভিন্ন উচ্ছ্বাসে।আর এই নবযাত্রায় নতুন উদ্যমে মালদ্বীপ প্রবাসীরা আজ স্মরণ করেছে দেশের বীর সন্তানদের।
৫৩তম বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মো. সোহেল পারভেজ।
দুটি পর্বে ভাগ করে বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশন।অনুষ্ঠানের প্রথমার্ধে, সোমবার (১৬, ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মো. সোহেল পারভেজ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সংগীতের সাথে পতাকা উত্তোলন করেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ার্ধে, মালদ্বীপের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয়।৫৩তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাত্রিকালীন অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে পাঠানো রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়।পরে `আঁধার পেরিয়ে` প্রদর্শন করা হয় বিজয় দিবসের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র।
আলোচনা পর্বের মূল অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার উপস্থিত সকলকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ও জুলাই আগস্ট গন অভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন।এসময় প্রবাসীদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
এছাড়াও তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের তাৎপর্য তুলে ধরেন।এবং মালদ্বীপ প্রবাসী সকল বাংলাদেশীদের স্থানীয় আইন মেনে যথাযথভাবে কাজ করার ও বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণ করে দেশ গঠনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে মালদ্বীপ বিএনপির সভাপতি মো. খলিলুর রহমান, গ্লোবাল রিচ গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডক্টর মোক্তার আলী লস্কর।তাদের বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সাম্প্রতিক ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান এ শহিদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও এই প্রবাসীরা সকলের কাছে অবহেলিত বলে উল্লেখ করেন তারা।তাই দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ায় আহ্বান জানান।
দেশটির জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত রাত্রিকালীন অনুষ্ঠান শুরুর আগেই মিলনায়তনে কানায় কানায় ভরে ওঠে আয়োজনস্থল।পুরো আবহে ছিল নীলসাগরের বুকে এক খণ্ড বাংলাদেশের ছবি।আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজনটি শুরু হলে বোঝার উপায় ছিল না, দেশ নাকি বিদেশে।আয়োজনে অংশ নেওয়া এ প্রজন্মের শিশু-কিশোররা অনুষ্ঠান শেষে সমবেত কণ্ঠে বলেন আমরা বিদেশে থেকেও আজ বাংলাদেশেকে উপলব্ধি করতে পেরেছি।এ জন্য ধন্যবাদ জানান হাইকমিশনারকে।
শেষে, বিজয় দিবসের এই আয়োজনে উপস্থিত সকল প্রবাসী দর্শকদের সংগীতে সঙ্গত করে মাতিয়ে তুলেন নীল দরিয়া শিল্পীগোষ্ঠী।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :