দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলাদেশিদের প্রায় তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে আন্দোলনকারীরা।
গত সোমবার নির্বাচনের ফলাফল নতুন করে আবার ঘোষণা করলে পুরো মোজাম্বিকে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বিকাল থেকে লুটপাট, ভাঙচুর জ্বালাও পোড়াও শুরু করে আন্দোলনকারীরা। এক রাতের মধ্যে দেশটির প্রতিটি শহরে-গ্রামে সহিংসতায় বাংলাদেশিদের প্রায় দুই শতাধিক দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ৯ অক্টোবর থেকে হিসাব করলে প্রায় তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাতে সবচেয়ে বেশি লুটপাট ও ভাঙচুর হয়েছে দেশটির রাজধানী মাপুতো, বোয়ানি ও সিমুই শহরে।
ঘটনায় আহত হয়েছেন মোস্তফা মিয়া (৪৫) ও ইব্রাহিম আহমেদ (৪০) দুই সহোদর। তারা নামাগোরা শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ ধর্মপুর গ্রামের মোহাম্মদ কাবিল ডাক্তার বাড়ীর বছন আলীর ছেলে।
এ সময় বাংলাদেশিদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। দেশটিতে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মাওলানা শামছুল হক, আব্দুল আজিজ, আ. হানান, সুলতান আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, আব্দুল আলিমসহ হাজারো বাংলাদেশি এক রাতেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
মোজাম্বিক শহরের প্রবীণ ব্যবসায়ী,ইসলামিক ফোরাম অব আফ্রিকার কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সহ-সভাপতি মাওলানা সামছুল হক জানান, সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সারাদিনে তীব্র বিক্ষোভ ও সহিংসতায় দেশটির রাজধানী মাপুতো সিটি, সিমুই সিটি, বেইরা সিটি, নামপুলা সিটি, মুনফোলা, নাখালা, জাম্বিজিয়া,ইলিমান,বেয়ারাও মকুবা শহর সহ প্রায় সব সিটি শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি লুটপাট ও ভাঙচুর হয়েছে মাপুতো শহরে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কমিউনিটির মধ্যে ও বিরাজ করছে আতঙ্ক।
মাওলানা সামছুল হক আরও বলেন, আমি বিগত ৩০ বছর যাবত ইলিমান ও মকুবা শহরে ব্যবসা করে আসছি।
এরকম হামলা ও লুটপাট আর কখনও দেখিনি। আমি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যাতে করে জাতিসংঘের মাধ্যমে হোক কিংবা মোজাম্বিক সরকারের মাধ্যমে হোক আমাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
এদিকে, মোজাম্বিকে বাংলাদেশ দূতাবাস না থাকায়। দেশটির পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বাংলাদেশ হাইকমিশন শাহ আহমেদ শফী। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন এবং কমিউনিটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :